অবরোধ-হরতাল সহ গণআন্দোলন চলবে: বিএনপি

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৩২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৩২ অপরাহ্ণ

ডেস্ক,প্রতিক্ষণ ডট কম  

Salahuddin-bnpপ্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনসহ সব গণদাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ-হরতাল এবং গণআন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্রের সব অঙ্গই শাসন বিভাগের হাতে বন্দি। এক ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলন হচ্ছে, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগে। আজ সোমবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এক ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলনে আজ রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যের চূড়ান্ত শিকারে পরিণত হয়েছে দেশ ও জাতি। মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকারের শেষ চিহ্নটুকু বিলুপ্ত প্রায়। বিচার বিভাগকে বিরোধীদল ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে সরকার।

তিনি বলেন, অবৈধ সরকার ন্যায্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে দমনের শেষ চেষ্টা হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকেই স্বীকার করে নিয়েছে প্রকারান্তরে।

তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আদালতের আদেশ দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে কখনো স্তব্ধ করা যায় না।

দলীয়করণের উদাহরণ দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, চূড়ান্ত দলীয়করণ ও বিচারক অভিশংসন আইন বিচারিক নৈরাজ্য সৃষ্টির মূল কারণ। ফলে, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভারসাম্যহীনতার শেষ পরিণতি ভোগ করছে জাতি।

স্বাধীনতা পরবর্তী মুজিব সরকার বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং অধীনস্থ বিভাগে পরিণত করেছিল সাংবিধানিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণের ইতিহাস।

বিএনপি যুগ্মমহাসচিব বর্তমান সংসদের সমালোচনা করে বলেন, আইন বিভাগ অর্থাৎ সার্বভৌম সংসদ এখন ‘বিকাশ মার্কা’ এমপিদের আড্ডাখানা। জাতীয় সংসদ এখন জাতীয় বিষয়াদি ও আইন প্রণয়নের কেন্দ্রবিন্দু নয়। এটা এখন বিএনপি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার কেন্দ্র।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন গতকাল (রোববার, ১৫ ফেব্রুয়ারি), তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে যে মাত্রা জ্ঞানহীন, ঘৃণ্য ও নিষ্ঠুর বাড়াবাড়ি আপনি প্রদর্শন করছেন, তার পরিণাম কখনোই শুভ হবে না।

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা ও গণগ্রেফতারের দায়ভার হুকুমদাতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে। রাষ্ট্রশক্তির দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় গণশক্তির বহুমাত্রিক উত্থান হয়েছে আজ। সেই গণশক্তির সুনামিতে স্বৈরশাসকরা খড়-কুটোর মতো ভেসে যাবে অচিরেই।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে বলেন, গণবিরোধী গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করে ভয়ভীতি প্রদর্শন, সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল বন্ধ, সম্পাদক ও টিভিচ্যানেল মালিকদের গ্রেফতার ও হয়রানি করে, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে সরকার এখন কেবল টেলিভিশনেই তার অস্তিত্ব প্রকাশ করে চলেছে।

তিনি সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, টেলিভিশনের বাক্স থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের আওয়াজ শুনুন। পুলিশ পাহারা পরিত্যাগ করে মন্ত্রী-নেতাদের রাস্তায় এবং এলাকা সফর করতে বলুন, তাহলেই সরকারের ‘দিগম্বর দানবীয়’ চেহারা পরিলক্ষিত হবে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বলেন, প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনসহ সব গণদাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ-হরতাল এবং গণআন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সংগ্রামী জনতার বিজয় আসন্ন।

প্রতিক্ষণ/এডি/রাজু

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G