অসৎ পুলিশের খপ্পরে পড়লে বাঁচার উপায়

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬ সময়ঃ ৩:৩০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

মোঃ আশরাফুল আলম সাগর

indexইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানরাইটস এন্ড ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটির  চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল আলম (সাগর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, পুলিশ দেশ সেবার এক মহান দায়িত্বে নিয়োজিত। অন্য বাহিনীর চেয়ে অনেক পরিশ্রমী আর দেশের জন্য এরাই সেবচেয়ে বেশি কাজ করে। তবে অসৎ পুলিশের সংখ্যা কম নয়। সারাদেশে এমন ঘটনা অনেক আছে যেখানে পুলিশ আপনার, আমার, জনগনের অনেক ক্ষতিসাধন করে। অবৈধ টাকার জন্য অনেক কিছু করে বসে।

তিনি বলেন, কেউ আইনের উপরে নয়। তাই পুলিশকে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। যেকোনভাবেই যে কেউ বিনা অপরাধে অসৎ পুলিশের খপ্পরে পড়তে পারে। বিষয়টিকে সতর্কতার সাথে পরিচালনা করার মাধ্যমে অসৎ পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সহযোগিতায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

আশরাফুল আলম আরও বলেন, কোন পুলিশ যদি অসৎ উদ্দেশে কাউকে ধরে তাহলে নিচের পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করবেন। প্রয়োজনে পুলিশি হয়রানির শিকার হলে কোথাও না গিয়ে সরাসরি আদালতে চলে যান। আইনানুযায়ী মামলা করেন। মামলা করার ফলে বরখাস্ত হবে অপরাধী পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেবে আদালত।পরবর্তীতে দেখুন কি হয়। অপরাধী পুলিশই আপনার হাত-পা ধরবে।

অসৎ পুলিশের বিরুদ্ধে করণীয় পদক্ষেপসমূহ-

১. ইউনিফর্ম পড়া পুলিশ হলে প্রথমেই বুকে থাকা নামটি দেখে নিন। (সিভিল হলে তার নাম, র‌্যাঙ্ক, থানা বা কোন ইউনিট ইত্যাদি জেনে নিন)।

২. পুলিশের কয়েকজন সৎ বড় কর্তার নাম মুখস্থ করে রাখুন। (ঐ এলাকার এসি, এডিসি ক্রাইম, ডিসি/ এএসপি সার্কেল, এ্যাডিশনাল এসপি, এসপি) আইজিপি হলে হবে না। কেননা, সবাই জানে তার নাম। পুলিশে ধরলেই জানিয়ে দিন ঐ পুলিশকে যে ‘আমাকে বিনা কারণে কিছু করলে আমি ঐ অফিসারের কাছে আপনার/আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব। লিখিত অভিযোগ।’ মৌখিকের চেয়ে লিখিত কাজ হয় ভাল। মৌখিক কথার এ্যাকশন হলো কিনা আপনি জানতে পারবেন না। তবে ইন্সট্যান্ট কাজ হবে।

৩. একান্তই কখনও কোন পুলিশের পাল্লায় পড়ে টাকা খোয়ালে সংশ্লিষ্ট এলাকার ডিসি (জেলা শহর হলে এসপি) বরাবর অভিযোগ দাখিল করুন। আইজিপি এবং কমিশনার অফিসেও প্রেরণ করতে পারেন। একটা লিখে তার ফটোকপি পাঠান এসব জায়গায়।

৪. আপনি মেট্টোপলিটনের আওতাভুক্ত হলে সকল ডিসির নাম্বার সংরক্ষণ করুণ। মেট্টোপলিটনের বাইরে হলে এসপির নাম্বার সংরক্ষণ করুণ। নাম্বারের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ এ্যাপসটি অবশ্যই আপনার ফোনে ডাইনলোড করে নিবেন। প্রয়োজনে এসপি বা ডিসিকে সরাসরি ফোন করুণ। এ্যাপটি এখান থেকে ডাউনলোড করুন

৫. আপনি যদি অপরাধ না করেন, পুলিশ কর্তৃক যে কোন প্রকার নির্যাতনের স্বীকার হলে সংবাদমাধ্যমকে জানান। সাংবাদিকদের জানান।

৬. অপরাধপ্রবণ পুলিশদের মনোবল সব সময় কম থাকে। তাই আপনি যদি তাদের ঠিকভাবে ম্যানেজ করতে পারেন, তারা আপনার সাথে কঠোর হওয়ার সাহস পাবে না।

৭. আপনি নিজে যদি অপরাধী না হন, কোনভাবেই পুলিশের জেরাতে ভয় পাবেন না। যা সত্যি তাই খোলামেলা ভাবে বলুন। কখনও মিথ্যার আশ্রয় নিবেন না। স্মার্টলি হ্যান্ডেল করুন।

৮. সবচেয়ে বড় কথা আইনের প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল থাকুন এবং নিজের উপর আস্থা রাখুন। পুলিশ দেখে কখনও ভয় পাবেন না। কেননা, পুলিশ রয়েছে আপনাকে রক্ষা করতে, আপনার ক্ষতি করতে নয়।

৯. পুলিশ ফোনে টাকা চাইলে সাথে সাথে রেকর্ড করতে করতে তার সাথে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে থাকুন, কত টাকা, কীভাবে দিতে হবে, কখন নেবেন, আপনার নাম কি, কোন থানা বা ফাঁড়ী, মামলা বা অভিযোগ কার বিরুদ্ধে, কে করেছে ইত্যাদী কথার মধ্যে সংযুক্ত রাখুন। ব্যস, এটা অভিযোগের সাথে জমা দিন ঐ এলাকার এসি, এডিসি ক্রাইম, ডিসি, কমিশনার অথবা এএসপি সার্কেল, এ্যাডিশনাল এসপি, এসপি বরাবর।

১০. জায়গা-জমি সংক্রান্ত কোন কিছুই পুলিশের করার কোন আইনগত অধিকার নেই (শুধু কোর্টের আদেশ পালন করতে পারবে)। তবে যদি কোন জায়গা নিয়ে শান্তি ভঙ্গের আশংখা দেখা দেয় তাহলে তারা একটি হুশিয়ারি নোটিশ জারি করতে পারে, থানায় আপনার জমির কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হতে বলতে পারে (তার সাধ্য নেই কোন রায় দেয়ার…. কাগজ দেখেই শোধ…. বোগাজ। জায়গা জমি সম্পুর্ন দেওয়ানী আদালতের বিষয় নট পুলিশের। পুলিশ শুধু ফৌজদারী বিষয় নিয়ে কাজ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত)। সুতরাং আপনার জায়গা নিয়ে কিছু করতে গেলে স্মার্টলি তার সাথে তার একতিয়ার নিয়ে কথা বলুন। কোর্টের কাগজ আছে কিনা জানতে চান।

স্পেশাল স্টেপ: পুলিশ আপনার সাথে অবৈধ কিছু করলে জেলায় এসপি আর মেট্রোতে ঔ এলাকার ডিসিকে ফোন করার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করুন (ফোন করতেও পারেন ইন্সট্যান্ট ঘটনার সময় ), লিখিত অভিযোগ এককপি কমিশনারের কাছে পাঠান। একটা অভিযোগ সিকিউরিটি সেল, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ফুলবাড়িয়া, ঢাকা বরাবর ঔ অফিসারের বিরুদ্ধে পাঠান। (থানায় বলে লাভ হ্ওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম)। এরপর অপেক্ষা করতে থাকুন আর দেখুন ঝাড়েরবাঁশ কীভাবে ঐ খারাপ অফিসারের কাছে পৌছায়। জিডি করতে গেলে “ভাই খরচ পাতি দেন” । এক টাকাও দেবেন না। পারলে ফোনের রেকর্ডার চালু করে কথা বলুন, খরচ পাতির কথা কথা বললে তাকে শুনিয়ে দিন যে তার কথা আপনার কাছে রেকর্ড করা হয়েছে এবং আপনি উপরে উল্লেখিত ব্যাক্তিদের কাছে অভিযোগ করবেন।

জিডি/অভিযোগ/মামলা কোনটা করতেই কোন টাকা লাগেনা। আসল কথা হলো পুলিশের সাথে জনগনের আইনের কোথাও কোন টাকার লেনদেনের কথা নেই। পুলিশের সাথে টাকা লেনদেনটাই অবৈধ। একটি পয়সাও না।

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য: সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন। আইন জানুন।

 

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G