শিশুর বিকাশ কি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে?
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পুস্পিতা খেতে চায় না, পড়তেও চায় না। মা তানিয়া বিষয়টা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। সব সময়ই তিনি সমাধানের উপায় ভাবতে থাকেন। আর ভাবতে ভাবতেই তিনি আবিষ্কার করেছেন নতুন এক কৌশল । পুস্পিতা মায়ের কথা না শুনলেই মা ভয় দেখাচ্ছেন। পড়তে না বসলে ভূতে ধরবে, না খেলে সাপে কামড় দেবে।
প্রথম প্রথম কাজ হয়েছিল ভালোই। কিন্তু এখন হিতে বিপরীত হওয়ার দশা। সব সময় পুস্পিতা ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকে। তার মধ্যে জড়তা এসেছে । সে আর ছোটাছুটি করে না। স্কুলে গিয়েও সে আগের মতো খেলে না। সার্বক্ষণিক যেন ভয় তাড়া করে তাকে। মা এখন পড়েছেন নতুন সমস্যায়।
অন্যদিকে কার্টুনের ভক্ত ইফতি স্কুল থেকে ফিরেই টিভির রিমোট নিয়ে বসে পড়ে। টম অ্যান্ড জেরি, মিকি মাউস, ডিজনিসহ তার পছন্দের তালিকা অনেক দীর্ঘ। কৌতূহলবশত একদিন ভয়ের সিনেমা দেখে তো অবস্থা খারাপ। ভয়ে সারা রাত ঘুমাতে পারল না। বাথরুমে যেতে হলেও মাকে দরকার। সারাক্ষণ যেন সিনেমার অ্যানাকোন্ডা মাথার মধ্যে আছে।
কোমলমতি শিশুরা অনেক সময় গল্প শুনে বা ছবি দেখে ভয় পায়, আর এই ভয় শিশুর মনের গভীরে ছাপ ফেলে। ফলে শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ হয় বাধাগ্রস্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের কোনো কাজ করানোর জন্য ভয় দেখালে তা তার মনে গেঁথে যায়। এর ফলে ওই শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয় এবং আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এর ফলে শিশুর সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে না।তাই শিশুদের কোনোভাবেই ভয় দেখানো উচিত নয়।
এর ফলে শিশুর আবিষ্কারের নেশা নষ্ট হয়ে যায়। হারিয়ে ফেলে সে তার আত্মবিশ্বাস। তাই শিশুদের কাছে প্রতিটা বিষয়কে ইতিবাচকভাবে ব্যাখ্য করতে হবে। তাদেরকে বয়স ও মানসিক বিকাশের কথা মাথায় রেখে শিশুদের ছবি দেখানো উচিত। কোনোভাবে ভয়ের ছবি দেখে ফেললে সে ক্ষেত্রে ভয় যাতে না পায়, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। শিশু যাতে ভয়ের বিষয়টা ভুলে যায়, সে জন্য হাসিঠাট্টা করে পরিবেশটা হালকা করা। সর্বোপরি অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল