আব্দুল কালামঃ নক্ষত্র ও অনুপ্রেরণা

প্রকাশঃ জুলাই ২৮, ২০১৫ সময়ঃ ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:০৭ অপরাহ্ণ

সাদিয়া এইচ. তানহাঃ

M_Id_394596_A_P_J_Abdul_Kalam“স্বপ্ন তা নয়, যা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন তাই যা মানুষকে ঘুমাতে দেয়না।” এপিজে আব্দুল কালাম আজাদের অসাধারণ এই অনুপ্রেরণামূলক উক্তিটি খুব বিখ্যাত। শুধু যে তার উক্তিটিই বিখ্যাত তা নয়, মানুষটাও তিনি খুব বিখ্যাত। অথচ জীবনের শুরুটা কিন্তু আমাদের অনেকের চেয়েও খুব সাধারণ ছিল তার।

এপিজে আব্দুল কালাম আজাদের পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুল আবেদিন আব্দুল কালাম আজাদ। খুব সাধারণ দরিদ্র এক তামিল মুসলিম পরিবারের জন্ম হয় তার। এপিজে আব্দুল কালামের পিতা জয়নুল আবেদিন ছিলেন একজন নৌকার মালিক আর মাতা আশিয়াম্মা একজন গৃহবধূ। কিন্তু এই সাধারণ পরিবারের ছেলেটিই এক সময় ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্য্ন্ত ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এপিজে আব্দুল কালাম শুধু যে সাধারণ পরিবারের ছেলে ছিলেন তাই না, জানা যায় যে বিদ্যালয়েও তার ফলাফল ছিল মধ্যম মানের। কিন্তু এই মধ্যম মানের ছাত্রটিই পরবর্তীতে ভারতের প্রথম পারমানবিক বোমা ও বহনযোগ্য ক্ষেপনাস্ত্র নির্মাণ করেন। তিনি অগ্নি, পৃথ্বী, আকাশ, ত্রিশুল ও নাগ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তৈরি করেন যা ভারতকে ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির দিক থেকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করে দেয়। এর ফলে তিনি “মিসাইলম্যান অব ইন্ডিয়া” নামে খ্যাত হন। এছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (ডিআরডিও) বিজ্ঞানী ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (আইএসআরও) বৈজ্ঞানিক প্রশাসক পদে দীর্ঘদিন কাজ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি ভারতের প্রথম সফল পারমানবিক পরীক্ষা পোখরান-২ এ প্রধান অবদানকারী হিসেবে অবতীর্ণ হন। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকার এপিজে আব্দুল কালামকে ১৯৮১ সালে পদ্ম ভূষণ, ১৯৯০ সালে পদ্ম বিভূষণ ও ১৯৯৭ সালে ভারত রত্ন উপাধি প্রদান করে।

এ থেকেই বোঝা যায়, পারিবারিক পটভূমি কিংবা বিদ্যালয়ের ফলাফল কখনোই একজন মানুষের পরিচয় নির্ধারণ করে দিতে পারেনা। একজন মানুষ তার চেষ্টা, সাধনা ও পরিশ্রম দ্বারা জীবনে অনেক অনেক বড় হতে পারে। তাই হয়ে দেখিয়েছিলেন শৈশবে সংবাদপত্র বিক্রি করে পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করা এপিজে আবুল কালাম। তাই হয়তো এতো অনুপ্রেরণামূলক একটি উক্তি তিনি করতে পেরেছেন তিনি।

নিজের শেষ জন্মদিনে চিরকুমার এপিজে আব্দুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, “সূর্যের ৮৪তম কক্ষপথে পা রাখলাম আমি।” আসলে তিনি সূর্যের কক্ষপথে পা রাখেন নি। তিনি নিজেই ছিলেন সূর্যের ন্যায় জ্বলজ্বলে একটি নক্ষত্র। শুধু ভারত নয়, সমগ্র উপমহাদেশের গর্ব এই পরমাণু বিজ্ঞানীর মহাপ্রয়াণ ঘটেছে কাল। তিনি চলে গেলেও অসংখ্য তরুণ-যুবককে অবিরত অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে তার কর্ম। এই মহান মানুষটিকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G