আমেরিকা খুনিকে লালন-পালন করছে, আমেরিকার কারবারই এ রকম : শেখ হাসিনা
বিশেষ প্রতিবেদন
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শুক্রবার স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ৫ম জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এ এম রাশেদ চৌধুরী আমেরিকায় অবস্থান করছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ নানান চেষ্টা করা হয়েছে বিভিন্ন সময়। এখনো তা চলমান রয়েছে।
বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল বলেই এই হত্যার বিচার করতে পেরেছি। কিন্তু এখনো কিছু খুনি রয়ে গেছে। আমেরিকায় এক খুনি রয়ে গেছে, তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা বারবার চেষ্টা করছি; যেহেতু তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। আমেরিকা তারা সেই খুনিকে লালন পালন করছে। অবশ্য আমেরিকার কারবারই এ রকম।’
আমেরিকায় পালিয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক খুনিকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তারা সেই খুনীকে লালনপালন করছে। তাদের কারবারই এ রকম।’
বঙ্গবন্ধুর পালিয়ে থাকা খুনীদের ফিরিয়ে আনা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের লালন পালন করা-একজন কানাডায়, একজন ওই আছে আমেরিকায়, আর দুইজন পাকিস্তানে। আরেকজনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না কখনো ইন্ডিয়াতে কখনো জার্মানিতে বিভিন্ন জায়গায় মোসলেহ উদ্দিন। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা আছে যে পৃথিবীর যেখানেই থাক যেভাবেই হোক এদেরকে ধরে এনে এদের সাজা অবশ্যই আমরা নিশ্চিত করবে ইনশাআল্লাহ। সেটাই আমি চাই।’
পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘এখানে যেরকম একজন মাদক করবারি; বারবার মাদকসহ ধরতে গেছে পুলিশ; তার (পুলিশ) উপর হামলা করেছে, র্যাব ধরতে গেছে হামলা করেছে। ১৪টা মামলার আসামী মাদকসহ ধরা পড়ে সে। পুলিশের ওপর তার গ্রুপ গুলি করে, র্যাবের উপর গুলি করে। তারপর সেও গুলি খায় মারা যায়। তার জন্য আমাদের দেশের কিছু লোক বিভিন্ন জায়গায় তদবির করে বেড়ায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মাদক কারবারি খোঁজ আনতে গিয়ে, ধরতে যেয়ে আমাদেরই একজন এয়ার ফোর্স এর অফিসারকে ড্রাগ ডিলাররা অপহরণ করে নিয়ে যায়; অত্যন্ত নির্মমভাবেই তাকে মারে, হত্যা করে। কিছুদিন আগের ঘটনা।’
বাংলাদেশের কয়েকজনের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার দেওয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ব্যাপারে এদের কোনো উদ্বেগ নাই। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ নাই। যারা ওই আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় আমেরিকা তাদেরও কোনো উদ্বেগ নাই। কারো কোনো উদ্যোগ নাই। কেমন একটা অদ্ভুত বিশ্ব পরিস্থিতি সেটাই আমার কাছে অবাক লাগে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। শেখ হাসিনার বক্তব্যের সময় স্বাচিপের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিলে তাদের থামিয়ে দেন। বলেন, ‘স্লোগানটা একটু পরে। অনেক কথা বলার, একটু বলে রাখি। শুনি, আমরা নাকি কিছুই করিনি। তাই যখন যে সেক্টরে যাচ্ছি, সেই সেক্টরে কী কাজ করেছি, একটু মানুষকে জানানো দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশের মানুষ তো, ছয় ঋতুর দেশ। দুই মাস পর ঋতু বদলায়, পাখির ডাক বদলায়, পশু-পাখির কলকাকলি বদলায়, বাতাসের গতি বদলায়, মানুষের মনও বদলায়, আর যা কিছু করি ভুলে যায়। ভুলে যেন না যায়, মাঝে মাঝে একটু স্মরণ করাতে হয়।’