আসিয়ান সম্মেলন : বাইডেনের সূচিতে মিয়ানমার সংকট; উত্তর কোরিয়ার হুমকি
আন্তর্জাতিকে ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সপ্তাহের শেষে, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত আসিয়ান-এর নেতাদের সাথে বৈঠকের জন্য এখন কম্বোডিয়ার রাজধানী নম পেনে রয়েছেন। এশিয়ার এই অঞ্চলটি এখন মিয়ানমারের সহিংস সংকট, উত্তর কোরিয়ার চলমান হুমকি এবং বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ব্যাপক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
শনিবার, যুক্তরাষ্ট্র -আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে, বাইডেন আসিয়ান কেন্দ্রিক নীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। দশ জাতির এই জোটের আসিয়ান কেন্দ্রিক নীতি হচ্ছে ক্ষমতাধর দেশগুলোর বিরোধে না জড়িয়ে আঞ্চলিক সমন্বয়ে ও প্রক্রিয়াগুলোতে মনোনিবেশ করা।
বাইডেন বলেন, আসিয়ানের এই সম্মেলনে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট আলোচনায় থাকবে। তাছাড়া, দক্ষিন চীন সাগরের অধিকার নিয়ে বেশ কিছু আসিয়ান দেশ নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে এবং বেইজিং-এর সঙ্গেও দর কষাকষি করছে। এ বিষয়গুলোও আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনায় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, “আমি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাশবিক যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের প্রচেষ্টা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করব।”
বাইডেন ভুলবশত আসিয়ানে নেতৃত্বের জন্য ‘কলম্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী’ বলে কম্বোডিয়ার কর্তৃত্ববাদী নেতা হুন সেন কে ধন্যবাদ জানান। সম্মেলনের শুরুতে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ,১৯৮৫ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এই অঞ্চলের দীর্ঘতম ক্ষমতাসীন নেতার সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
সক্রিয়বাদীরা দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের কারণে হুন সেনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানান।
তবে, নম পেন বেইজিংয়ের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকায়, বাইডেনের পক্ষে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব নাও হতে পারে।
কম্বোডিয়ার চিন্তক গোষ্ঠী থিঙ্কার কম্বোডিয়ার প্রেসিডেন্ট বুন্না ভান্নম বলেন, “যখনই পশ্চিমা দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাপ আসবে, তখন পেছনে থেকে চীন বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে কম্বোডিয়ার সরকারকে সমর্থন যোগাবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার যদি কম্বোডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে চীন দেশটির সরকারকে অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে”।
কম্বোডিয়া গোপনে থাইল্যান্ড গোপনে উপসাগরের রীম নৌঘাঁটিতে চীনা যুদ্ধজাহাজকে নোঙর করার অনুমতি দিচ্ছে বলে, বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।
এই বছরের শুরুর দিকে, বেইজিং এই ঘাঁটিটি পুনর্নির্মাণের জন্য তহবিল সরবরাহ করে। যা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে কিছু আসিয়ান সদস্যের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে এবং ভয় বাড়িয়ে তোলে।
জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারের এক কোটি তিরিশ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষুধার্ত এবং ১৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী বোমা হামলা, বাড়িঘর পোড়ানো এবং বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাসহ অসঙ্গতিপূর্ণ শক্তি নিয়ে তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সূত্র : ভয়েজ অব আমেরিকা