এক গাছেই বাগান

প্রকাশঃ নভেম্বর ৬, ২০১৫ সময়ঃ ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

mango treeঅনেক সময় ছোট কোনো বিষয়ও বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে দেশের উত্তর জনপদে। একটি সাধারণ আমগাছ সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রাচীন গ্রাম হরিনমারী। ভারতীয় সীমান্তবর্তী শান্ত ছিমছাম এই গ্রামেই মাথা উঁচু করে নিজের অবস্থান ঘোষণা করছে এই আমগাছটি। নির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকলেও এলাকায় জনশ্রুতি আছে এই বিশাল গাছটির বয়স দুশ’বছর।

গাছটি দেখাশোনা করছেন শরিফ উদ্দিনের দুই ছেলে নুর ইসলাম এবং সাইদুর রহমান। বাড়ির বাইরে থাকায় সাইদুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। কথা বলেছিলাম নুর ইসলামের সঙ্গে। নুর ইসলামের বাবার দাদা এই গাছটি লাগিয়েছিলেন। গাছটির পাশেই তাঁর চায়ের দোকান। চা খেতে খেতে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। আলাপে জানা যায়, ৭৪ শতাংশ ভূমিজুড়ে এই গাছটির ডালপালা বিস্তৃত। গাছটির অসংখ্য ডালপালার মধ্যে ১৯টি ডাল কাণ্ড থেকে বের হয়ে কিছু দূর গিয়ে মাটিতে হেলে পড়েছে। যেগুলো দেখতে একেকটি আলাদা গাছের মতো। আর এ কারণেই দূর থেকে এই গাছটিকে একটি ছোট আমবাগানের মতোই মনে হয়। আজব আম গাছ!

গাছটি এখনও ফলবান। গাছটির অনন্য বৈশিষ্ট্য থাকায় এর আমের চাহিদাও অনেক। তাই মুকুল ধরার সময় এলেই আম ব্যবসায়ীরা আগাম টাকায় গাছটির ফলের আনুমানিক মূল্য দিয়ে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত লিজ নিয়ে নেন। এর মূল্য হবে এক লাখ টাকার কাছাকাছি। সূর্যাপুরী জাতের এই গাছটি থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মণ আম পাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় এই গাছের আম অত্যন্ত টক। পাকা অবস্থায় এর স্বাদ সুস্বাদু।

বালিয়াডাংগী উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে নিভৃত পল্লী হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এই আমগাছটি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। এটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের অন্যরকম বিনোদন।

কেউ কেউ গাড়ি রিজার্ভ করে দলবেঁধে, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য মালিক গাছটির আশপাশে বসার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং, টয়লেটের ব্যবস্থা করেছেন। অবশ্য এসব সুবিধার বিনিময় মূল্য ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গাছটির নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই গাছের ব্যাপারে তাঁদের রয়েছে বেশ উচ্ছ্বাস। নূর ইসলামের ইচ্ছা আমৃত্যু তিনি যেন এই গাছটির দেখাশোনা করতে পারেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G