“এখনই হেপাটাইটিস প্রতিরোধ করো”

প্রকাশঃ জুলাই ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ৩:০৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:০৮ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

liverহেপাটাইটিস আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত রোগ চিহ্নিত করা, সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা তথা এই রোগ সার্বিক প্রতিরোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহবান এসেছে। ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসকে সামনে রেখে শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার সদস্য দেশগুলোর প্রতি এ আহবান জানায়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “এখনই হেপাটাইটিস প্রতিরোধ করো।”

দুটি নীরব ঘাতকের নাম হেপাটাইটিস বি ও সি। এই দুটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর মৃত্যু হচ্ছে প্রায় ১৪ লাখ মানুষের। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ দুই ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত মোট মানুষের সংখ্যা ৪০ কোটি, যার মধ্যে আবার দেড় কোটি মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের প্রতিরোধে টিকা থাকলেও সি ভাইরাসের কোন টিকা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। বিশ্বে  পাকস্থলির ক্যান্সারে প্রতি বছর যত রোগী মারা যায় তার শতকরা ৮০ ভাগই হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত থাকে।

রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমিত হয়। অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ ও একই সিরিঞ্জে ইনজেকশন  নেয়ার কারণে হেপাটাইটিস বি ও সি তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ অনিরাপদ ইনজেকশন ব্যবহারের কারণে হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

মাদকাসক্তরা হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবল ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মাদকাসক্ত হেপাটাইটিস বি ও সিতে আক্রান্ত। এছাড়া যে সকল গর্ভবতী মা হেপাটাইটিস বি ও সিতে আক্রান্ত তাদের গর্ভজাত সন্তানরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। ভাইরাসে আক্রান্ত কারো সঙ্গে অনিরাপদ যৌনমিলন করলেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রক্তবাহিত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাসে ইনজেকশন দেয়ার আগে তা জীবানুমুক্ত করে নেয়া, রক্তদানের আগে এইচআইভি ও সিফিলিস পরীক্ষা করা এবং নিরাপদ যৌনমিলনে কনডম ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহবান জানায়।

প্রতি বছর বিশ্বে ১৬ কোটি ইনজেকশন ব্যবহৃত হয়। তারমধ্যে শতকরা ৫ ভাগ টিকা, শতকরা ৫ ভাগ রক্ত পরিসঞ্চালণ ও জম্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির জন্য ব্যবহৃত হয়। অবশিষ্ট শতকরা ৯০ ভাগ বিভিন্ন রোগের ওষুধের ইনজেকশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইনজেকশনের পরিবর্তে মুখে খাওয়ার নিরাপদ ওষুধ ব্যবহার হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে প্রতি বছর শিশুদের হেপাটাইটিস বি’র সংক্রমন থেকে বাঁচাতে টিকা দেয়া হয়। এ সময়ই ৭৮ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়। নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন বিশেষ করে জম্মের পর পর হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের প্রথম টিকা ও পরবর্তীতে অন্যান্য টিকা দিলে ঝুঁকি আরো হ্রাস পাবে বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যারা কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগী, মাদকাসক্ত ও যৌনকর্মী তাদের হেপাটাইটিস বি টিকা দেয়ার ওপর গুরত্বারোপ করে।

১৯৮২ সাল থেকে এ যাবৎ হেপাটাইটিস বি টিকা দেয়ার ফলে এক কোটি লোকের লিভার ক্যান্সার ও লিভার সিরোসিসজনিত মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের যে সব দেশে প্রতি ১০ জনে এক জন হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হতো সেখানে টিকা দেয়ার ফলে প্রতি ১০০ জনে এক জনের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত হেপাটাইটিস সি এর কোন টিকা আবিষ্কৃত না হওয়ায় হেপাটাইটিস সি আক্রান্তদের জন্য কোন সুখবর শোনানো সম্ভব হয় নি।

হেপাটাইসিস বি ও সি ভাইরাস ছাড়াও দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে মানুষ হেপাটাইটিস এ ও ই তে আক্রান্ত হতে পারে। তবে তা হেপাটাইটিসে মোট মৃত্যুর শতকরা এক ভাগেরও কম।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G