কী এসে যায় কন্যাশিশু দিবসে?

প্রকাশঃ অক্টোবর ১২, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৪৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:১২ অপরাহ্ণ

sharminযেখানে কন্যা শিশু হয়ে জন্মানোর খেসারত প্রতি মুহূর্তে মেয়েদের দিতে হচ্ছে; সেখানে ‘কন্যাশিশু দিবস’ কি হাসির উদ্রেক করে না? এ দিবস কি আমাদের কোনো উপকার করতে পারছে? ‘মেয়ে মানেই বোঝা’ – এ বদ্ধ ধারণা এখনও অনেক বাবা-মায়ের মধ্যে বিরাজ করছে।

সবচেয়ে দু:খজনক ব্যাপার হলো এ কথাটা যে ভুল তা প্রমাণ করার সুযোগ প্রকৃত অর্থে পাচ্ছে কয়টা মেয়ে? বড় বড় কথা বলা মানুষের অভাব নেই এদেশে। মেয়েদের জন্য এই করব, মেয়েদের জন্য সেই করব। এক কথাই মেয়েদের জন্য সব তারা মুখে করে ফেলে। দয়া করে বেশিকিছু কষ্ট করে করতে হবে না। শুধু আপনার ঘরের ছেলে সদস্যদের কুনজর থেকে এই মেয়েগুলোর সুরক্ষার ব্যবস্থাটা করে দিন।

দিবস দিয়ে কি আমরা কন্যা শিশুকে নির্ভয়ে চলাফেরা করার নিশ্চয়তা দিতে পারবো? আর এ দিবস পালনে যারা আছে এবং যে মহামান্য অতিথিরা উপস্থিত থাকেন কিংবা যারা এখানে দর্শক হিসেবে আছেন তারা কেউ কি এ ব্যাপারে আন্তরিক হতে শিখে এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে? যতদিন এদেশে লোক দেখানো আয়োজনগুলো বন্ধ হবে না; সত্যি বলতে কি ততদিন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তনই হবে না। আর যে পরিবর্তন দেখছেন, তা দেখে ধেই ধেই করে নাচার মতো সময় এখনও আসেনি। মোড়ক পরিবর্তন হলেই কোনোকিছু পরিবর্তন হয়ে যায় না। এখানে আমরা শুধু খোলসটাই দেখি, আসলটা পর্দার আড়ালেই থেকে যায়।

এতক্ষণ বলেছি মুদ্রার এপিট নিয়ে কথা; এবার চলুন উল্টো পিঠটাও দেখি। যে কন্যা শিশুরা আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখে বড় হয়েছেন কিংবা হচ্ছেন এবং হবেন, তাদের হিসাবটা একেবারেই আলাদা করেই কষতে হবে। তাদের জন্ম এই অরাজকতার রাজ্যে হলেও এর ছিটেফোঁটা আঁচড়ও গায়ে লাগতে দেয়না তাদের পরিবারগুলো। বরং সে আঁচড় তারা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে আর প্রতিরক্ষার ঢাল হয়ে তাদের জীবনের সামনে বরাবরের মতোই হাজির হন তাদের পরিবার।

এই সত্য-মিথ্যার হিসাব কষে, সত্যকে সামনে এনে তার সমাধান করার মতো ক্ষমতাধর মানুষতো তেমন দেখা যায় না। ক্ষমতার চাবি যার হাতে তার অবস্থাতো সেই প্রবাদের মতো, ‘শেয়ালের হাতে মুরগি বাগা দেওয়া।’

তাই সমাধান একটাই, ‘ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ-ই সবচেয়ে ভালো।’ প্রথমে মনে রাখুন এই কথাটা। এরপর সব কন্যাদের বলব, আপনি দূর্বল নন কোনো দিক থেকেই। ‘মনের জোর’ – এর চেয়ে বড় ক্ষমতাধর কিছু আছে বলে আমি অন্তত মনে করি না। তাই মনে শক্তি রাখুন। কথা, কাজে এবং চরাফেরায় কখনও দূর্বলভাবে আচরণ করবেন না। সমস্যা থাকবেই কিন্তু ভেঙে পড়বেন না। অন্যায়কে নিজের জীবনে সমাধান মনে করে প্রশ্রয় দেবেন না। দেখুননা, এরপর কী হয়। আমরা খোলসকে নয় আসলটাকেই পরিবর্তন করতে চাই।

 

শারমিন আকতার
নির্বাহী সম্পাদক, প্রতিক্ষণ ডট কম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G