কুরবানীর ইতিহাস
‘কুরবান’ শব্দটি আরবী। যার অর্থ উৎসর্গ, উপঢৌকন, সান্নিধ্য লাভের উপায়। মানুষ যা কিছু আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে থাকে, তাকে কুরবান বলে। শব্দটি এতদঞ্চলে আরবী বর্ণমালার ‘ইয়া’ বর্ণযোগে কুরবানী নামে পরিচিত। যার অর্থ আমার উৎসর্গ, আমার উপঢৌকন, আমার সান্নিধ্য লাভের উপায় ইত্যাদি। যে সকল বস্তু আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাকেও কুরবানী বলা হয়। তবে সাধারণ পরিভাষায় এই শব্দটি জন্তুর কুরবানীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
কুরআনুল কারীমে শব্দটি তিন জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা বলে, আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন কোন রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করি, যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাদের নিকট এমন কুরবানী উপস্থিত না করবে, যা আগুন গ্রাস করে নিবে।’ {সূরা ৩ আলে ইমরান, আয়াত-১৮৩} ইহুদীরা রাসূলুল্লাহ (সা.) কে না মানার জন্য এই ছল উদ্ভাবন করে যে, পূর্ববর্তী নবীদের কুরবানী বা সাদকার বস্তু সামগ্রী কোন মাঠে কিংবা পাহাড়ে রেখে দেয়ার নিয়ম ছিল, তখন আকাশ থেকে একটা আগুন এসে তা জ্বালিয়ে দিত। এটা ছিল কুরবানী বা সাদকা কবুল হওয়ার লক্ষণ। অথচ আপনার শরীয়তে এমনটি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মূলত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তার উম্মতকে আল্লাহ তাআলা এ বৈশিষ্ট্য দান করেছেন যে, কুরবানী বা সাদকার দ্রব্য সামগ্রীকে আগুনের গ্রাসে পরিণত করার পরিবর্তে তা নিজেরা ভক্ষণ করতে পারবে বা গরীব দুঃখীদের দিতে পারবে।
অন্যত্র মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- ‘আদমের দুই পুত্রের (কাবীল ও হাবীল) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, তখন একজনের কুরবানী কবুল হল এবং অন্যজনের কবুল হল না। সে বলল, আমি তোমাকে হত্যা করবই। অপরজন বলল, অবশ্যই আল্লাহ মোত্তাকীদের কুরবানী কবুল করেন।’ {সূরা ৫ মায়িদা, আয়াত-২৭}
যখন আদম ও হাওয়া আ. পৃথিবীতে আগমন করেন এবং সন্তান প্রজনন ও বংশ বিস্তার আরম্ভ হয়, তখন প্রতি গর্ভ থেকে একটি পুত্র ও একটি কন্যা- এরূপ যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করত। তখন ভাই-বোন ছাড়া আদম আ.-এর আর কোন সন্তান ছিল না। অথচ ভাই-বোন পরস্পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। তাই আল্লাহ তাআলা উপস্থিত প্রয়োজনের খাতিরে আদম আ.-এর শরীয়তে বিশেষভাবে এ নির্দেশ জারি করেন যে, একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র ও কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করবে, তারা পরস্পর সহোদর ভাই-বোন হিসেবে গণ্য হবে। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হবে। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারিনী সহোদরা বোন গণ্য হবে না। তাদের পরস্পর বিবাহ বৈধ হবে। কিন্তু ঘটনাচক্রে কাবীলের সহজাত সহোদরা বোনটি ছিল পরমাসুন্দরী এবং হাবীলের সহজাত বোনটি ছিল কুশ্রী। বিবাহের সময় হলে নিয়মানুযায়ী হাবীলের সহজাত কুশ্রী বোনটি কাবীলের ভাগে পড়ল। এতে কাবীল অসন্তুষ্ট হয়ে হাবীলের শত্রু হয়ে গেল। সে জেদ ধরল যে, আমার সহজাত বোনকেই আমার সাথে বিয়ে দিতে হবে। হযরত আদম আ. তার শরীয়তের আইন অনুযায়ী কাবীলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন।
অতপর তিনি কাবীল ও হাবীলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা উভয়েই আল্লাহর জন্য নিজ নিজ কুরবানী পেশ কর। তখনকার সময়ে কুরবানী গৃহিত হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল এই যে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে কুরবানীর বস্তুটিকে ভস্মিভূত করে আবার হারিয়ে যেত। অগ্নিশিখা যাকে ভস্মিভূত করতো না, তাকে প্রত্যাখ্যাত মনে করা হত।
হাবীল ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু পালন করতো। সে একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা কুরবানীর উদ্দেশ্যে পেশ করল। আর কাবীল করত কৃষি কাজ। সে কিছু শস্য, গম ইত্যাদি কুরবানীর উদ্দেশ্যে পেশ করল। অতঃপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবীলের কুরবানীটি ভস্মিভুত করে দিল, আর কাবীলের কুরবানী যেমন ছিল তেমনি পড়ে রইল।
অন্যত্র মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে সান্নিধ্যে লাভের জন্যে (কুরবানী-সান্নিধ্য লাভের উপায়) উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, তারা তাদেরকে সাহায্য করল না কেন? বরং তারা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেল। এটা ছিল তাদের মিথ্যা ও মনগড়া বিষয়।’ {সূরা ৪৬ আহকাফ, আয়াত-২৮}
মক্কাবাসীরা সিরিয়া সফরে যেসব জনপদ অতিক্রম করত, সেসব জনপদে এক সময় কওমে সামুদ ও কওমে লুতের আবাস ছিল। মহান আল্লাহ তাদের কুফর ও শিরকের কারণে গযব দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তিনি তাদেরকে ধ্বংস করার পূর্বে বার বার নিদর্শনসমূহ দেখিয়েছিলেন, যাতে তারা কুফর ও শিরক থেকে বিরত হয়। কিন্তু তারা বিরত হল না এবং ধ্বংস হয়ে গেল।
অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে নৈকট্য লাভের জন্যে (কুরবান) উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, ধ্বংস ও আযাবের সময় তারা তাদেরকে সাহায্য করেনি বরং তারা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেল। অর্থাৎ ঐ মুর্তিগুলোকে তাদের উপাস্য ও সুপারিশকারী মনে করা ছিল তাদের নিতান্ত ভুল ও মনগড়া।
আল্লাহ তাআলা হযরত ইব্রাহীম আ.-এর যে কয়টি কঠিন পরীক্ষা গ্রহণ করেন, তন্মধ্যে পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানীর নির্দেশ সম্বলিত পরীক্ষা অন্যতম।
নবী-রাসূলগণ নিজ নিজ মর্যাদা ও স্থান অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখিন হয়ে থাকেন। তিনি স্বপ্নযোগে নিজ পুত্রকে কুরবানী করার নির্দেশপ্রাপ্ত হন।
নবী-রাসূলগণের স্বপ্ন জাগ্রত অবস্থায় প্রাপ্ত ওহীর সমতুল্য হয়। তিনি পর পর তিন রাতে স্বপ্ন দেখেন যে, আল্লাহ তাআলা তার পুত্রকে কুরবানী করার নির্দেশ দিচ্ছেন। কতক মুফাসসিরের মতে ইব্রাহীম আ. সর্বপ্রথম জিলহজ্জ মাসের সাত তারিখ দিবাগত রাত আট তারিখের রাতে এই স্বপ্ন দেখেন। সারাটি দিন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে অতিবাহিত হয় যে, স্বপ্নটি কি আল্লাহর পক্ষ থেকে না শয়তানের চক্রান্ত?
তাই এই দিনটি ইয়াওমুত তারবিয়াহ (উৎকণ্ঠার দিন) নামে অভিহিত হয়। আট তারিখ দিবাগত রাত তথা নয় তারিখ রাতেও একই স্বপ্ন তিনি দেখেন। ইসলামে ঐ দিনটির নামকরণ করা হয়েছে ‘ইয়াওমুল আরাফাহ’ নামে। পরের রাতেওইব্রাহীম আ. একই স্বপ্ন দেখেন এবং তিনি অনুধাবন করেন যে, এটি আল্লাহর একটি নির্দেশ। তাই এই দিনটির নামকরণ করা হয় ইয়াওমুন নহর বা কুরবানীর দিন। স্বপ্নের ভিন্নতর ব্যাখ্যা করার অবকাশ থাকা সত্ত্বেও হযরত ইব্রাহীম আ. আল্লাহর নির্দেশের সামনে মাথা নত করে দেন।
কুরআনুল কারীমে মাত্র এক জায়গায় এই কুরবানীর ইতিহাস সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সে বলল, (ইব্রাহীম আ.) আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম। তিনি আমাকে অবশ্যই সৎ পথে পরিচালিত করবেন। হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এক সৎকর্ম পরায়ন সন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাকে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের (ইসমাঈল) সুসংবাদ দিলাম। অতঃপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম বলল, বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি। এখন তোমার অভিমত কি বল? সে বলল, হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবংইব্রাহীম আ. তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করলো, তখন আমি তাকে আহবান করে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্ম পরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটি ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে (ইসমাঈল) মুক্ত করে তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার এক মহান জন্তু। আমি এটি পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ইব্রাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। সে ছিল আমার মুমিন বান্দাদের অন্যতম। {সূরা ৩৭ সাফফাত, আয়াত-৯৯-১১১}
ইতিহাস ও তাফসীর ভিত্তিক বিবরণ থেকে জানা যায় যে, হযরত ইসমাঈল যখন তের বা তার কাছাকাছি বয়সে উপনীত হন, তখন ইব্রাহীম আ. সুযোগ্য পুত্রের সামনে পরামর্শ লাভের ভঙ্গিতে বললেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি। যেমন পিতা তেমন সন্তান এবং ভাবী নবী। পিতার কথা শোনামাত্র তিনি জবাব দিলেন, আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। কোন কোন বর্ণনা থেকে অনুমিত হয় যে, হযরত ইব্রাহীম আ. কুরবানী করার নির্দেশ প্রাপ্তির পর পুত্রকে বললেন, বৎস! দড়ি ও ছুড়ি লও, আমরা পরিবারের জ্বালানী কাষ্ঠ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ঐ উপত্যকায় যাবো। তিনি উপত্যকার নির্জন স্থানে পৌঁছে পুত্রকে কুরবানীর বিষয়টি অবহিত করলেন।
শয়তান হযরত ইব্রাহীম আ. ইসমাঈল আ. ও হাজেরা আ.কে প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে বার বার অপপ্রয়াস চালায়। ইব্রাহীম আ. যখন স্বীয় পুত্রকে কুরবানী করার নির্দেশপ্রাপ্ত হন, তখন শয়তান ‘মাশআরুল হারাম’ নামক স্থানে ইব্রাহীম আ.-এর মুখোমুখি হয় এবং তিনি তাকে পরাস্ত করেন। অতঃপর জামারাতুল আকাবায় পৌঁছে শয়তান ইব্রাহীম আ.কে প্রতারিত করতে চাইলে তিনি তার প্রতি পরপর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করে তাকে বিতাড়িত করেন। একইভাবে জামারাতুল উসতায় এবং অবশেষে জামারাতুল কুবরায় পৌঁছে শয়তান ইব্রাহীম আ.-এর প্রতিবন্ধক হলে তিনি উভয় স্থানে পরপর সাতটি করে কংকর নিক্ষেপ করে শয়তানকে বিতাড়িত করে দেন এবং আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর করতে উদ্যোগী হন। আজও প্রতি বছর হাজী সাহেবদের এই স্মৃতি রক্ষার্থে হজ্জের মৌসুমে কংকর নিক্ষেপ করতে হয়।
শয়তানের ধোঁকা প্রদানের ঘটনাটি অন্যত্র এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, শয়তান মানুষের বেশে হযরত হাজেরা আ.-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, তুমি কি জানো ইব্রাহীম তোমার পুত্রকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে? তিনি বললেন, কাঠ সংগ্রহের জন্য ঐ উপত্যকায় গিয়েছে। শয়তান শপথ করে বলল, সে তাকে যবেহ করতে নিয়ে গিয়েছে। উত্তরে হাজেরা আ. বললেন, কখনো না। তিনি আমার চাইতে তার প্রতি অধিক স্নেহশীল ও মমতাময়। এক পর্যায়ে হাজের আ. বললেন, আল্লাহ যদি তাকে এই হুকুম দিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই আললাহর আনুগত্য করতে এবং তাঁর নির্দেশের সামনে আত্মসমর্পন করতে উত্তম কাজই করেছেন। অনুরূপভাবে শয়তান ইসমাঈল আ.কেও ধোঁকা দিতে উদ্যোগী হলে হযরত ইসমাঈল আ. তাকে জব্দ করে ছেড়ে দিলেন। সবশেষে ইব্রাহীম আ.কে ধোঁকা দিতে উদ্যোগী হলে তিনি জোড়ালোভাবে বললেন, আমি অবশ্যই আমার প্রভুর নির্দেশ পালন করব।
হযরত ইব্রাহীম আ. স্বীয় চোখ বেঁধে পুত্রের পরামর্শ অনুযায়ী হাত পা শক্ত করে বেঁধে কাত করে শুইয়ে দিয়ে নিজ হাতে দ্রুত ছুরি চালাতে লাগলেন। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও একটি পশমও কাটতে সক্ষম হলেন না। পিতাপুত্রের এই কঠিন পরীক্ষা চলা অবস্থায় আল্লাহ তাআলা ডাক দিলেন, হে ইবরাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্য প্রমাণিত করে দেখালে। আল্লাহ তাআলা পিতার ছুরি ও পুত্রের কণ্ঠনালীর মাঝখানে একটি তাম্রপাত রেখেদিয়েছিলেন। ফলে ছুরি কণ্ঠনালী স্পর্শ করতে পারে নাই। ইব্রাহীম আ. দৃষ্টি খুলে দেখতে পেলেন, জিবরাঈল আ. কর্তৃক আনিত একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা যবেহ হয়ে গেছে। বর্ণিত আছে, এটি ছিল চল্লিশ বছর যাবত জান্নাতে বিচরণ করা একটি জান্নাতী দুম্বা। অপর বর্ণনায় আছে, এটি ছিল আদম আ.-এর পুত্র হাবীল কর্তৃক কুরবানীর দুম্বা।
একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে যে, হযরত ইব্রাহীম আ. তো পুত্রকে কুরবানী করার স্বপ্ন দেখেছিলেন,অথচ তিনি তাকে কুরবানী করেননি। তাহলে নবীর স্বপ্ন সত্য হলো কিভাবে। বস্তুত ইব্রাহীম আ. স্বপ্নে পুত্রকে যবেহ করতে দেখেছিলেন। যবেহ করে তাকে শেষ করে ফেলেছেন, এমন দেখেননি। অতএব তিনি তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন অর্থাৎ স্বপ্নে যবেহ করতে দেখেছিলেন এবং বাস্তবেও তিনি ছুরি হাতে নিয়ে পুত্রের গলায় সজোরে চালিয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি যবেহকর্ম সমাপ্ত করেছেন এই স্বপ্ন দেখেননি, তাই বাস্তবেও যবেহ সমাপ্ত করতে পারেননি। আল্লাহ তাআলা ইব্রাহীম আ.কে যতটুকু স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তিনি ততটুকুই বাস্তবায়িত করেছেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে