অন্ধকার রাতের নির্জনতায় ঘেরা ভয়ঙ্কর নিরবতা কারো কাছে এক দু:সহ যন্ত্রণার মুহূর্ত। তাই অস্থির মনের ব্যাকুলতা দুচোখের বিনিদ্রায় কাটিয়ে দেয় রাতের পর রাত। আলোর দেখা পেলে তবেই সে চোখ বুজে পরম নির্ভাবনায় অতি ক্লান্তির পরশে। জীবনের এ অচল অনিয়ম সময়-সমাজ-ব্যক্তি বিরোধী। তবুও শেষ বেলায় দাবার সব চালই কেমন যেন উল্টো বনে যায় জীবন হিসাবের খাতায়। মস্তিস্ক, সেও খেলা করে আপন খেয়ালে। এমন এক অসম-অসহ্য-অবাঞ্চিত-অস্পৃশ্য সত্য অতি কাছে এসে গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। অসহায় নিস্পলক নয়নে চেয়ে দেখে চারপাশ নিদারুণ বিশ্বাসে; যদি কোনো সহৃদয়বানের দেখা পাওয়া পায়।
সময় সময়ের কাছে দায়বদ্ধ, জীবন জীবনের কাছে। মানবতার মানসিকতা মানুষ আর অমানুষে ভাগ হয়ে যায়। বার্ধক্য তবুও নির্মল নিরাপদ আশ্রয় হাতরে বেড়ায়; কখনও তারাময় দীপের আঁড়ালে অথবা জ্বলন্ত সূর্যের নির্ভাবনাময় আলোর সম্মুখে। কেউ দেখে সে আলোতে হাত বাড়িয়ে দেয়; আবার কেউ দূর ছাই বলে তাড়িয়ে দেয়। জীবন সায়াহ্নের প্রান্ত অবলীলায় আলো-আঁধারী বেলায় এক ক্লান্তবিন্দুতে এসে মিলে মিলিয়ে যায়। সত্য এই, ধ্রুব এটাই।
জীবনের দাবা খেলায় শুধু এদিক থেকে ওদিকপানে ছুটে বেড়ায়। ক্লান্ত শরীর ক্লান্ত মন বিষন্ন। সব আছে যার, তবে কেন এত আঁধার? একদিন রাতজাগা রাতে ভীরু মনে এই গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে মিলিয়ে যায়।
চাঁদ ঘুমিয়ে পড়ে, সূর্য জেগে উঠে। শান্ত জগৎ এখন চলমান অস্থিতায় ব্যাতিব্যস্ত। ঘড়ির কাঁটা থেকে গত গত হয়। আবার ঘুরে কাঁটা পুরোনোকে পুড়িয়ে। আবার সূর্য উঠে আবছা কালোকে মাড়িয়ে। আবার নাচে ময়ূর পেখম খুলে বৃষ্টিভেজা দুপুরে।