কয়েকটি চর্মরোগ ও প্রতিকার

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৭, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৩২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৩২ অপরাহ্ণ

চর্ম

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

চর্মরোগে কম-বেশি সবাই ভোগেন৷ গরমকালেই এ জাতীয় রোগ বেশি দেখা দেয়৷ এছাড়া অপরিষ্কার ও ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস চর্মরোগের একটা অন্যতম কারণ৷ নিয়ম মেনে চললে রোগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷

ঘামাচি

গরমের সময় ঘামাচি একটি সাধারণ সমস্যা৷  ঘামাচি সাধারণত তখনই হয় যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নীচে ঘাম আটকে যায়৷ এর ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়৷ কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়৷ ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়৷ তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে৷

ব্রণ

সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এই রোগটি দেখা দেয়৷ তাই একে টিনএজারদের রোগও বলা যেতে পারে৷ ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়৷ ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত, ঝাল ও ভাজাপোড়া খাবারসহ চকলেট, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে৷ এছাড়া বেশি করে পানি ও শাক-সবজি খেতে হবে৷

দাদ

শরীরের যে-কোনো স্থান ফাংগাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে৷ এই আক্রমণ মাথার চামড়ায়, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে৷ এটা ছোয়াঁচে রোগ৷ আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়৷ মাথায় দাদ দেখতে গোলাকার হয় এবং আক্রান্ত স্থানে চুল কমে যায়৷ প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে৷ এছাড়া আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি৷ অনেক সময় ব্যবহৃত সাবান থেকেও দাদ হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে৷

পাঁচড়া

শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়৷ পরিষ্কার কাপড়-চোপড় ব্যবহার ও নিয়মিত গোসল করলে খোসপাঁচড়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়৷

একজিমা

একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়৷ একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক রকম হয়৷ তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক; শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষন।

ডিটারজেন্ট, সাবান অথবা শ্যাম্পু থেকে একজিমার সংক্রমণ হতে পারে৷ অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়াও একজিমার কারণ৷

সোরিয়াসিস

সোরিয়াসিস ত্বকের একটি জটিল রোগ৷ তবে এটি কেবল ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও৷ যেমন সন্ধি, নখ ইত্যাদি৷ সাধারণত ত্বকের কোষস্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়৷ সোরিয়াসিসে এই কোষ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে৷ ত্বকের কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার জায়গাজুড়ে এই সমস্যা দেখা দেয়৷ রোগ যত পুরোনো হয়, ততই জটিল হতে থাকে৷ তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার আওতায় আসা জরুরি৷ আক্রান্ত ব্যক্তিকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়৷ সোরিয়াসিস বংশগতভাবে হতে পারে৷

আর্সেনিকের কারণে চর্মরোগ

আর্সেনিক যুক্ত পানি খেলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ যেমন ত্বকের গায়ে ছোট ছোট কালো দাগ কিংবা পুরো ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে, হাত ও নখের চামড়া শক্ত ও খসখসে হয়ে যেতে পারে৷ এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন স্থানে সাদা-কালো দাগ দেখা দেয়াসহ হাত ও পায়ের তালুর চামড়ায় শক্ত গুটি বা গুটলি দেখা দিতে পারে৷ তবে চিন্তার বিষয় হলো, আর্সেনিক যুক্ত পানি পানের শেষ পরিণতি হতে পারে কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা লোপ পাওয়া; ত্বক, ফুসফুস ও মূত্রথলির ক্যানসার হওয়া; কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া ইত্যাদি৷

প্রতিক্ষণ/এডি/সাইমুম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G