খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৫ সময়ঃ ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ

কৃষি প্রতিবদেক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

paddyকৃষি প্রধান বাংলাদেশে ধান চাষের প্রধান সমস্যা হলো জলবায়ু। জলবায়ুর কারনে খরা লবণাক্ততা ইত্যাদির কারনে ফসলের চাষাবাদে সমস্যা দেখা দেয়। খরা লবণাক্ততা সহনশীল বিভন্ন নতুন জাত উদ্ভাবনে মনোযোগ দেয় বিজ্ঞানীরা। তারই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর ফলে খরা সহ্য করতে পারে এমন জাতের পাশাপাশি এখন প্রোটিন ও এমাইলোজ সমৃদ্ধ ধানের বীজও পাওয়া যাবে। আগ্রহী কৃষকরা চলতি মওসুম থেকেই এই বীজ নিয়ে আবাদ শুরু করতে পারবেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এ জাতগুলো হলো ব্রিধান-৬৫, ব্রিধান-৬৬,  ব্রিধান-৬৭, ব্রিধান-৬৮, ব্রিধান-৬৯। জাতীয় বীজ বোর্ডের  এ পাঁচটিসহ ইনব্রিড ও হাইব্রিড ধান এবং গম ও আলুর মোট ২২টি জাত অবমুক্ত করা হয়। গবেষণালব্ধ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর কারিগরি কমিটির দেয়া সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন জাতগুলো অনুমোদন পেয়েছে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রিধান ৬৫ জাতটি বোনা আউশ মৌসুমের জন্য। দানার রং সোনালী ও আকৃতি চিকন লম্বা। এ জাতের জীবনকাল ৮৮ থেকে ১০৫ দিন। এ জাতটি চারা অবস্থায় খরা সহনশীল। জাতের জীবনকাল ব্রিধান ৪৩ এর চেয়ে তিন থেকে পাঁচ দিন আগাম। ফলন হেক্টরে সাড়ে তিন থেকে চার টন।

ব্রিধান ৬৬ জাতটি রোপা আমন মৌসুমের খরা সহিষ্ণু জাত। এ জাতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে চালে শতকরা ১০ দশমিক আট ভাগ প্রোটিন থাকে। এই জাতের জীবনকাল ব্রিধান ৫৬ এর চেয়ে তিন থেকে চার দিন বেশি। খরা না হলে ফলন হেক্টরে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ টন। তবে  খরা হলে ফলন চার থেকে সাড়ে চার টন।

ব্রিধান ৬৭ জাতটি বোরো মৌসুমে আবাদ করা যাবে। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। চালের আকার আকৃতি মাঝারি চিকন এবং রং সাদা।   প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, চারা অবস্থায়  ১২ থেকে ১৪ ডিএস/মি. (৩ সপ্তাহ) লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। ফলন হেক্টরে তিন দশমিক আট থেকে সাত দশমিক চার টন। জাতটি পুরো জীবনকালে আট ডিএস/মি. লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।

ব্রিধান ৬৮ জাতটিও বোরো মৌসুমের জন্য। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪৯ দিন। এ ধানের চাল মাঝারি মোটা এবং রং সাদা। চালে শতকরা সাত দশমিক সাত ভাগ প্রোটিন এবং ২৫ দশমিক সাত ভাগ এমাইলোজ রয়েছে। ব্রিধান ৬৮ এর জীবনকাল ব্রিধান ২৮ এর চেয়ে চার থেকে পাঁচ দিন নাবী। ফলন হেক্টরে সাত দশমিক তিন টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে নয় দশমিক দুই টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

ব্রিধান ৬৯ জাতটিও বোরো মৌসুমের জন্য। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪৫ থেকে ১৬০ দিন। এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য ধানের দানার রং সোনালী রঙের এবং মাঝারি মোটা। চালের আকার আকৃতি মাঝারি মোটা এবং রং সাদা। এই জাতের জীবনকাল ব্রিধান ২৮ এর চেয়ে পাঁচ থেকে ১০ দিন বেশি। ফলন হেক্টরে সাত দশমিক ৩০ টন। এ জাতটি কম উপকরণ ব্যবহারে ভাল ফলন দিতে সক্ষম। জাতটিতে অন্য জাতের চেয়ে ২০ শতাংশ ইউরিয়া কম লাগে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গম গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক উদ্ভাবিত গমের দুইটি জাত বারি গম-২৯ ও বারি গম-৩০ এবং কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি আলু-৫৬, বারি আলু-৫৭ জাত ছাড় করা  হয়।

প্রতিক্ষণ/এডি/সিরাজ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
20G