ঘুরে আসুন চলন বিল
জহির উদ্দিন মিশু
চলন বিল। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল। দেশের মিঠা পানির মাছের প্রধান উৎসও এটি। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের কিছু এলাকা নিয়ে এ বিলটির অবস্থান। এর মধ্য দিয়েই আত্রাই নদী প্রবাহিত হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ এই বিলটি বিভিন্ন খাল বা জলখাত দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত অনেকগুলি ছোট ছোট বিলের সমষ্টি। বর্ষাকালে এগুলি সব একসঙ্গে একাকার হয়ে প্রায় ৩৬৮.০০ বর্গ কিমি: এলাকার একটি জলরাশিতে পরিণত হয়।
নৌকা যখন চলন বিলের মাঝে পৌঁছাবে, তখন মনে হবে এ যেন এক শান্ত সাগরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিছু দুর পর পর ছোট ছোট সবুজ শ্যামল মাটির ঢিবি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, যেন দ্বীপ জেগে উঠেছে সাগরের বুকে। উপরে নীল আকাশ আর নিচের শান্ত পানিতে শত শত সবুজ দ্বীপের সারি এক কথায় অনবদ্য। এখানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা।এখানকার বেশির ভাগ বাড়িই মাটির তৈরি। এক বাড়ী থেকে অন্য বাড়ী যেতে হয় বাশের সাঁকো পেরিয়ে নতুবা নৌকা করে।
বিলের মাঝে এক একটি বাড়ি যেন এক একটি দ্বীপ। নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না কত সুন্দর এ বিলটি। সমগ্র দ্বীপ জুড়ে রাঁজহাসের জলকেলি আর রঙ্গিন শাপলার ছড়াছড়ি। সে যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। এখানে ছোট শিশু কিশোররা সাঁতার কাটে আপন মনে, খেলা করে জলের সঙ্গে।
মাঝে মধ্যে জলের বুক চিড়ে উঠে এসেছে হিজল গাছ। পুরোটা বিল হাজারো পাখির বিচরণ আর কলতানে মুখরিত থাকে সারা বছর। এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য কেবল চলন বিলেই দেখা সম্ভব।
যাতায়াত ও থাকা: ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ আসা যায় সড়ক ও রেলপথে। ঢাকার মহাখালী থেকে সৌরভ পরিবহন, এসআই এন্টারপ্রাইজ এবং গাবতলী থেকে ইউনিক সার্ভিসসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস যায় সিরাজগঞ্জ। ভাড়া ২শ’ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা। সিরাজগঞ্জ থেকে রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলায় আসা যাবে লোকাল বাসে। সিরাজগঞ্জ শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল হল, আল হামরা। ভাড়া ৩৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা। নিজস্ব বাহনে গেলে দিনে দিনেই ঢাকা থেকে গিয়ে ঘুরে আসা যায়।