চট্টগ্রামে নাহার গ্রুপের কর্মকর্তা ভুট্টোর লাশ উদ্ধার
রাকিব হাসান :
চট্টগ্রামের লোহাগোড়াতে নাহার গ্রুপের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ভুট্টোর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার থেকে ভুট্টোর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। কর্মস্থলেও যাননি তিনি।মুঠোফোনেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অফিসের কাছেই লোহাগড়ায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন ভুট্টো। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা তার ঐ ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
এরপর পুলিশ নুরুল ইসলাম ভুট্টোর পরিবারকে খবর দিলে তারা ঐ বাসায় ছুটে যান। সেসসময় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই তার অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।লাশটি লোহাগড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ভুট্টোর বড় ভাই তারেক জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে তারা ঐ ফ্ল্যাটে যান।ভুট্টোর ঘর এমনভাবে অগোছালো ছিল; দেখে মনে হয় কারো সাথে ধস্তাধস্তি হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল’।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
অফিসে বা অফিসের বাইরে কোথাও তার কোন শত্রু ছিল কিনা এ বিষয়টি নিশ্চিত নয় ভুট্টোর পরিবার।
তবে ভুট্টোর ঘনিষ্ঠ সুত্রে মতে, নাহার গ্রুপে মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে তিনি ফিল্ড থেকে টাকা কালেকশনের দায়িত্বে ছিলেন।সেকারণে কারো সাথে ঝামেলা হলেও হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তারা।
তবে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান প্রতিক্ষণকে জানান, ‘প্রাথমিভাবে এটা আত্নহত্যা বলে মনে হচ্ছে।পরিবারের অজান্তে তিনি আরেকটি বিয়ে করেছিলেন।যা তার পরিবার মেনে নেয়নি।হতাশার কারণে সে আত্নহত্যা করতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে’।
এবিষয়ে ভুট্টোর ছোটভাই ছোট্টু জানান ‘আমরা লাশ দেখেছি, আত্নহত্যার কোন লক্ষণ ছিল না। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন ছিল।বিষয়টি এখন ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে’।
উল্লেখ্য, ভুট্টোর গ্রামের বাড়ি চকরিয়া। তার বাবার নাম মরহুম ওসমান গণি। নুরুল ইসলাম ভুট্টো ১৯৯৮ সালে কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচিএসসি ও চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন।
এক বছর আগে তিনি নাহার গ্রুপে মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে চট্টগ্রামের আবুল খাযের গ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানীতে চাকুরী করেছেন তিনি। বিনয়ী ও মৃদুভাষী এই কর্মকর্তার মৃত্যুতে তার পরিবার, সহ-কর্মী ও বন্ধুদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাকিব