দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে: ২০ দল

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৭, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫১ অপরাহ্ণ

bnp 20 dolনিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

দাবি আদায়ের মাধ্যমে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধসহ ঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

শনিবার দুপুরে বিএনপির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোট এ প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্রমাগতভাবে মানুষের অধিকারগুলো সংকুচিত করেছে।

বিশেষভাবে গণতন্ত্রে যে বিরোধী দলের বিশেষ একটি জায়গা আছে সেটিকে তারা কখনই বিশ্বাস করেনি। গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের সব কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে তারা দমননীতি অবলম্বন করেছে। তাদের দমননীতি অমানবিক, মধ্যযুগীয় এবং নাজি ফ্যাসিস্টদের সমতুল্য। শুধু কথা বলা, সভা, সমাবেশের অধিকারগুলোই তারা হরণ করেনি বরং নাজিদের কায়দায় বিরোধী দলের নেতাদের অবরুদ্ধ, কারারুদ্ধ, মিথ্যা মামলাতেই জড়ানো হয়নি, অনেককে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে।”

দলীয় চেতনায় উজ্জীবিত বেশকিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের দিয়ে বিএনপি এবং জোটের শীর্ষ নেতা ও কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

এতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা, তার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার মানুষের অধিকারগুলো সংকুচিত করেছে। গণতন্ত্রে যে বিরোধী দলের বিশেষ একটি জায়গা আছে সেটিকে তারা কখনই বিশ্বাস করেনি। গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের সকল কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে তারা দমননীতি অবলম্বন করেছে।

তাদের দমননীতি অমানবিক, মধ্যযুগীয় এবং নাজি ফ্যাসিষ্টদের সমতুল্য। শুধুমাত্র কথা বলা, সভা, সমাবেশের অধিকারগুলোই তারা হরণ করেনি বরং নাজিদের কায়দায় বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দকে অবরুদ্ধ, কারারুদ্ধ, মিথ্যা মামলাতেই জড়ানো হয়নি, অনেককে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।

২০ দলীয় জোটের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়- সমাজের নানাস্তরের মানুষসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের নির্মম শিকার হতে হয়েছে। ফলে এই পৈশাচিক দু:শাসনকে মোকাবেলা করার জন্য ২০ দলীয় জোট গঠন হবার পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের হারানো অধিকার পুন:রুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

জোটের অসংখ্য নেতাকর্মীদের হত্যা করে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর আওয়ামী মহাজোট সরকার অবৈধ একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করে আরও বেশী নির্দয় ও নিপীড়কের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

২০ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১৪ দিন ধরে নিজ কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ রেখে কার্যালয়ের চারিদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ইট, বালু, কাঠের ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ জোটের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে আটক রাখা, হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের, প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, এজেন্টদের দিয়ে যানবাহনে আগুন লাগিয়ে পরিকল্পিত নাশকতা করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো, প্রকাশ্যে বুকে গুলি করার নির্দেশ ইত্যাদি ভয়ংকর পরিস্থিতি এখন এদেশে বিরাজমান বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা।

বিবৃতি আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যৌথবাহিনীর পাশাপাশি এখন নাকি সেনাবাহিনীও নামবে।

বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী এবং সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের কাছে একটি প্রশ্ন রেখে বলা হয়, তারা কী ৫ শতাংশ ভোটের অবৈধ সরকারের নির্দেশ শুনবে নাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের পক্ষে থাকবে ? এদেশে অত্যাচারীরা কোনদিনই টিকতে পারেনি।

বিবৃতিতে সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে আরো বলা হয়, “তারা যেন ক্ষমতাসীন উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের প্রতিশোধবাসনার যন্ত্রে পরিণত না হন, কারণ এদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠী তাদের বেতন নিশ্চিত করে। ”

বিজিবি মহাপরিচালক ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে বলা হয়, “এই ধররেনর বক্তব্য জাতিকে স্তম্ভিত ও হতবাক করেছে। ঔদ্ধতপূর্ণ এবং এখতিয়ার বহির্ভূত এই বক্তব্য জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিজিবির হাতে মারণাস্ত্র জনগণের টাকায় কেনা। এটি কোনো দল বা ব্যক্তির প্রাইভেট বাহিনী নয়। ”

পুলিশের আইজি বিএনপি চেয়ারপারসন সম্পর্কে যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন তাতে মনে হয় একজন ছাত্রলীগের নেতা পুলিশের পোশাক পরে বক্তব্য রাখছেন। পুলিশের আইজির বক্তব্য নজীরবিহীন ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ। তাদের মনে রাখা উচিত কোনো অপকর্মই কখনো চিরদিনের জন্য মাটিচাপা থাকে না। জনগণ সব ঔদ্ধত্য, অহংকার এবং নিষ্ঠুর অনাচারের বিচার করবেই।”

বিবৃতিতে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ ২০ দলের সব পর্যায়ের আটককৃত নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে এই মুহূর্তে ‘অবৈধ’ সরকারকে পদত্যাগ করে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে অবরোধে এ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করা হয়।

প্রতিক্ষণ/এডি/বেলা

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G