দায় চাপানোর অপচেষ্টা করছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
বিগত ২০০৪ সালে শেরাটনে গাড়ী পোড়ানো নিয়ে মিথ্যাচার করলে বিএনপির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই মীমাংসিত বিষোয়টির দায় এখন আওয়ামী লীগের উপর চাপানোর অপচেষ্টা করছে বিএনপি এবং সেটিকে পূজি করে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এই ঘটনাকে উদাহরণ বা এই ঘটনায় তাদের জড়ালে মানহানির মামলা করা হবে বলেও জানান তারা।
সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। ‘২০০৪ সালে ৪ জুন আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের পূর্বরাতে শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতল বিআরটিসিরি বাস পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকদের সম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য নানক বলেন, প্রায় ১১ বছর পূর্বের একটি ঘটনা সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য আপনাদের মাধ্যমে পুনরায় দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য আজ আপনাদের এখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।
বিগত ২০০৪ সালেও আপনাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার ও সেই সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব লুৎফুজ্জামান বাবরের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রচিত নাটকের যবনিকাপাত ঘটেছিল।
তিনি বলেন, বিগত ২০০৪ সালের ৪ জুন রাত ৮টার দিকে শেরাটন হোটেলের নিকট বিআরটিসির একটি দ্বিতলা বাসে অগ্নিসংযোগে ১১ জন নিরীহ বাসযাত্রী নির্মমভাবে নিহত হন।
এই বর্বরোচিত ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন আওয়ামী যুবলীগকে জড়ানোর লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একটি নাটক সাজানোর অপচেষ্টা সম্পর্কে আমরা ১৪ জুলাই ২০০৪ ইং তারিখে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম।
আমরা সেদিন বলেছিলাম, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে স্পর্শকাতর এলাকায় গান পাউডার অথবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকের সাহায্যে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিরোধী দলীয় কোনো নেতা বা কর্মীর পক্ষে সম্ভব নয়।
এর কারণ ব্যাখ্যায় নানক বলেন, ঐদিন শেরাটন হোটেলে অবস্থানকারী মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য প্রায় এক বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সরকারের উদ্যোগে নেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মানুষ মারার দায় চাপিয়ে জনগণের প্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ আহুত ৫ জুন ২০০৪ তারিখের হরতালের পূর্ব রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দ্বারা পুলিশের সহায়তায় এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয়নি। বরং প্রকৃত সত্য উদঘাটনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের মিথ্যাচার ও অনুর্বর মস্তিষ্কের সাজানো নাটকটি জাতির কাছে হাস্যস্পদ হয়ে উঠে।
কিন্তু আমরা আজ আবার লক্ষ্য করছি ভুল রাজনীতির চোরাবালিতে নিমজ্জমান বেগম খালেদা জিয়া লজ্জার মাথা খেয়ে বিভিন্ন জনসভায় তার বক্তব্যে এ ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করতে চান। জাতির কি দুর্ভাগ্য যে ষড়যন্ত্রের জন্য জাতির সামনে দুঃখ প্রকাশ করার কথা, তা তো নয়ই বরং জাতিকে ধোঁকা দেয়ার জন্য এই ঘটনার দায় পুনরায় আমাদের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা। কী নির্লজ্জ মিথ্যাচার।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আজম বলেন, ২০০৪ সালে ৪ জুন আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের পূর্বরাতে শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতল বিআরটিসিরি বাস পোড়ানোর ঘটনায় যুবলীগ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম জড়িত ছিল না। এরপরও এই ঘটনা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও টক শোতে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা তৎকালীন যুবলীগ নেতাদের উপর দায় চাপালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
আদালতের মীমাংসিত বিষয়ে খালেদা জিয়া আপনাদের জড়িত উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছেন, আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেব না। এখন আমরা যদি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে যাই আমরা জাতির কাছে ধিকৃত হবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ডাবলু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক শামীম, এস এম কামাল, সুজিত রায় নন্দি প্রমুখ।
প্রতিক্ষণ /এডি / জেমি