দুর্লভ ফুল পার্পল হার্ট

প্রকাশঃ মার্চ ১৫, ২০১৫ সময়ঃ ৫:২৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষন ডটকম:

1398347_854784424562309_2485678238408838685_oকত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও মালা গাঁথো অকারনে, আমি চেয়েছিনু একটি কুসুম সেই কথা পড়ে মনে। ফুল নিয়ে এরকম নানা কথা লিখেছেন কবি সাহিত্যিকরা। আনন্দের, ভালোবাসার প্রতীকও ফুল।

জীবনের পরতে-পরতে এই ফুলই রঙ্গিন করে তোলে আমাদের। যার দিকে তাকালেই স্বর্গীয় আবেশে ভালো হয়ে যায় মন প্রাণ।

প্রকৃতিতেও এই ফুল আনে প্রাণের ছোঁয়া। বাগান, আঙিনা আর ছাদ হয়ে উঠে রঙে আর রূপে বর্ণিল। ফুলের নানা রঙ্গিন রং মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ভালো লাগার ছোয়া দেয় মনে প্রাণে।

ফুল ভালোবাসেন না এবং ফুল আদান-প্রদান করে্ন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এমন বাড়ি নেই যে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি ফুলের গাছ নেই। বিভিন্ন নগরীর অলিতে-গলিতে ফুলের দোকান। বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর থেকে শুরু করে কনভিনিয়ান্ট ষ্টোরগুলোতেও ফুল বিক্রি হয়।

তেমনি একটা ফুল দেখতে পাওয়া যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে। যা হৃদয়ের বহিপ্রকাশ। বলা হয় মানুষের হৃদয় বলে একটা কথা আছে। সাহিত্য- গান- শিল্প- বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন সবখানেই হৃদয়। জগতের যাবতীয় ক্রিয়াশীলতার মূলে হৃদয়। ভালো লাগা ছুঁয়ে যায় হৃদয়; বিলিয়েও যায় হৃদয়। আহা হৃদয় না বলে হৃৎ ও বলা যায়। কথা হলো, আমাদের এই যাবতীয় কল্পনা অনুভূতি বা অনুভূতির প্রকাশে হৃদয় আবার একটা রঙ আর আকার ধারণ করে আছে। আমাদের হৃদয় লাল; এটি পান পাতার মতো, এটি কোমল, এটি প্রতিক্রিয়াশীল।

এমন যখন অবস্থা, তখন হৃদয় নামের একটা ফুলের কাহন বর্ণনা অবতারণা করাই শ্রেয়। পার্পল হার্ট নাম যার; তাকে বাংলায় কি নামে ডাকা যায় এই ভাবনায় ডুবে থেকে থেকে মনের মধ্যে ভুস করে ভেসে এলো “অরুণ হৃৎ” এই নামখানা। যথাযথ, জুতসই হলো কি হলো না সে প্রসঙ্গে যাচ্ছিনা। প্রকৃতিবিদ কিংবা বৃক্ষবিশারদরা অন্য কোন নামে ডাকতে পারেন বটে; তবে, হৃৎ না হৃদয় সে তর্কে না গিয়ে বরং অরুণ রঙের হৃদয় কোঠরে একটুখানি উঁকি দিয়ে আসা গেলে মন্দ হয়না।

অরুণ হৃৎ বা পার্পল হার্ট এর উৎপত্তি মেক্সিকো বা উত্তর আমেরিকায়। এটি Commelinaceae গোত্রের অন্তর্গত এবং এর প্রজাতি Tradescantia pallida। একে আবার ইংলিশ ভাষাভাষীরা পার্পল কুইন বা অরুণ রাণী বলেও ডেকে থাকে। ঠাণ্ডা আবহাওয়ার ফুল বলে এর বেশ পরিচিতি আছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ফুল বাগান বিলাস ফুল হিসেবে ফোটানো হয়ে থাকে। তুলনামূলক কম ঠাণ্ডা অর্থাৎ তুষারপাত নয় এমন ঠাণ্ডা আবহাওয়া কিংবা ২০-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এরা ভালো জন্মে। বছর জুড়েও এদের বাঁচিয়ে রাখা যায় পরিমিত পানি ও পরিচর্যার মাধ্যমে। আমাদের দেশের আবহাওয়া এ ফুলের জন্য দারুণ উপযোগী বিশেষ করে শরৎ থেকে বসন্ত এদের বেগুনি বা অরুণ বরণ সহজেই বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। আজকাল বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি স্থাপনায় কিংবা বাগান চর্চায় এদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।আবার গ্রামের পথের ধারে কিংবা বনের ধারেও মেলে এদের হৃদ খোলা হাসি।

এফুলে গন্ধ আছে। তিন পাপড়ির ফুল ফোটে; যেন হৃদয় খুলে দেখিয়ে দিচ্ছে ভালবাসা। পাতার রঙ বেগুনী তবে উজ্জল নয় যেমনটা ফুল হয়ে থাকে। পাপড়ির মাঝে আছে পুংদণ্ড আর হলুদ রঙা পুংকেশর। আকার বড়জোর ২-৩ সেন্টিমিটার। হাউসপ্ল্যান্ট বা বাসাবাড়ির ফুল হিসেবে সুনাম আছে অরুণ হৃৎ এর। আর ঘর জুড়ে বেগুনী আভা যদি দিয়েই ফেলে আপনাকে তো কি নামে ডাকবেন একে?

প্রতিক্ষণ/ এডি/আকিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G