দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে

প্রকাশঃ অক্টোবর ২২, ২০১৫ সময়ঃ ৯:০০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:১৮ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

mosquito_sickস্বাস্থ্য অধিদপ্তর তথ্যানুযায়ী গত ১০ বছরের তুলনায় এবছরই দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

এবছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৬৭৭জন, মারা গেছেন ৪ জন।

এছাড়া ডেঙ্গুর এক নতুন ধরণের ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে যার ফলে রোগীদের রক্তক্ষরণ ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্ষা মৌসুম এ বছরে দীর্ঘায়িত হওয়াকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতেলে গত তিনদিন আগে ভর্তি হন তাসলিমা। শরীরে প্রচন্ড জ্বর আর ব্যাথা নিয়ে তিনি আসেন চিকিৎসা নিতে। ঢাকার হাজারিবাগ এলাকা থেকে আসা তাসলিমার সাথে হাসপাতালে স্বার্বক্ষণিক রয়েছেন তার স্বামী আলমগীর।

তিনি বলছিলেন “গায়ে খুব জ্বর, ব্যাথা। খিঁচুনি উঠে গিয়েছিল, এ রকম আগে কখনো হয়নি। আমি পরের দিন সকালেই হাসপাতালে নিয়ে আসি।”

মোট সাতদিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত। প্রাথমিক পরীক্ষায় চিকিসৎকেরা ডেঙ্গু জ্বর হিসেবে সনাক্ত করে চিকিৎসা চালাচ্ছেন তাসলিমার।

তাসলিমার মত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শুধু একটি ওয়ার্ডেই ভর্তি রয়েছেন আরো নয়জন রোগী, যারা প্রত্যেকেই ডেঙ্গুর ভাইরাসে আক্রান্ত।

হাসপাতালটির এই ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ইসরাত জেরিন বলছিলেন গত বছরের তুলনায় এবছরে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী তারা বেশি পাচ্ছেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হিসেব বলছে গত ১০ বছরে এবারেই প্রথম ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা বেশি।

Dengu

অক্টোবরের ২২ তারিখ পর্যন্ত ২৬৭৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪ জন। এর আগের বছর ছিল সাড়ে তিনশর বেশি রোগী।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মুন্সি বলছিলেন এবারে ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রকোপের মাত্রা বেশি হওয়ার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে বর্ষা মৌসুমটা দীর্ঘায়িত হওয়াটাকে অন্যতম বলে তারা মনে করছেন।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাধারণত ডেঙ্গু প্রকোপের সময় হিসেবে নির্ধারণ করা হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা যায় ডেঙ্গুর চার ধরনের ভাইরাস রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ডেঙ্গু ২, ও ৩-এ আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এতদিন বেশি ছিল। কিন্তু এবারেই ডেঙ্গু ১-এ আক্রান্তের পরিমাণ বেশি।

ফলে রোগিদের রক্তক্ষরণ ঝুঁকিপূর্ণভাবে বেড়ে যাবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলছিলেন মি. মুন্সি।

বাংলাদেশে ২০০০-২০০১ সালের দিকে প্রথম ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর মশাবাহিত এই রোগটি নির্মূলে মশা নিধনসহ বেশ কিছু সচেতনামূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় তার প্রকোপ কিছুটা কমে এসছিল।

তবে দশ বছরের মধ্যে এবারে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মশাবাহিত এই রোগটির বাহক মশা নিধনে কতটা কাজ হচ্ছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/বিএ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G