অভিবাসী উচ্ছেদে যুক্তরাজ্যের ‘নয়া কৌশল’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সরকারের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো ধরনের আইনি নোটিশ ছাড়াই মালিকপক্ষ অবৈধ অভিবাসীদের বাসা থেকে উচ্ছেদ করতে পারবেন। মূলত রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে যাঁরা ব্যর্থ হবেন, তাঁদের দ্রুত বিতাড়নের উদ্দেশ্যেই এমন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকার অবৈধ অভিবাসী চিহ্নিত ও বিতাড়নের দায়িত্ব বাড়ির মালিকদের ওপর চাপাচ্ছে বলে সমালোচনা উঠেছে। আবার ঝামেলা এড়াতে মালিকপক্ষ বাসা ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী বাসিন্দা বা শ্বেতাঙ্গদের প্রাধান্য দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীরা চরম বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে অবৈধ অভিবাসীদের বাসা ভাড়া নেওয়া ঠেকাতে ভাড়াটিয়ার যুক্তরাজ্যে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র যাচাইয়ের বিধান চালু করে সরকার।
২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া ওই নিয়মটি এ বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে প্রয়োগ করার কথা রয়েছে। ওই নিয়মে অবৈধ অভিবাসীর কাছে বাসা ভাড়া দিলে তিন হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে যেকোনো ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদের বিষয়টি এত দিন আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করত। আজ সোমবার সরকারের নতুন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে যাঁদের আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) প্রার্থনার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবে, তাদের সম্পর্কে নোটিশ জারি করবে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই নোটিশের আলোকে মালিকপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে পারবে। আবার বাসা ভাড়া দেওয়ার পূর্বে ভাড়াটিয়ার যুক্তরাজ্যে অবস্থানের বৈধতা যাচাইয়ের বিধানটিও বলবৎ থাকবে। বাড়ি ভাড়ার এসব নিয়ম দুই দফা ভঙ্গ করলে মালিকপক্ষকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য জেলে যেতে হবে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ামাত্রই আশ্রয়প্রার্থীদের সরকারি ভাতা প্রাপ্তি বন্ধ হয়ে যাবে।
বর্তমানে আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এমন প্রায় ১০ হাজার অভিবাসী সপ্তাহে ৩৬ পাউন্ড করে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন। গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স সীমান্ত ক্যালেইসে শত শত অভিবাসী জোরপূর্বক যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারের ভাষ্য, যুক্তরাজ্য যে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ নয়, সেই বার্তাই দেবে নতুন পরিকল্পনা।
দেশটির কমিউনিটিজ সেক্রেটারি গ্রেগ ক্লেয়ার্ক বলেন, ভিসা প্রত্যাখ্যাত হওয়ামাত্র অবৈধদের বিতাড়নে সরকারের ভিসা অফিস, বাড়ির মালিক, পুলিশ বিভাগ এবং স্থানীয় কাউন্সিল একযোগে কাজ করবে। সরকারি হিসাব মতে, গত বছর মোট ৩৬ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাজ্য থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির