নিষিদ্ধ নিমেসুলাইড এখনো বাজারে

প্রকাশঃ মে ৭, ২০১৫ সময়ঃ ৩:২৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

হাসান মিসবাহ, প্রতিক্ষণ ডটকম:

Medecine1নিষিদ্ধ ভারতীয় ট্যাবলেট নিমেসুলাইডে সয়লাব উত্তরাঞ্চলের ফার্মেসিগুলো। ২০০৮ সালে দেশের বাজারে নিষিদ্ধ হলেও নজরদারি না থাকায় এখনো অবাধে বিক্রি হচ্ছে ওষুধটি।

জ্বর ও হালকা ব্যথায় ভালো দ্রুত কাজ করে নিমো। ফলে ওষুধটি এক সময় বেশ জনপ্রিয় ছিল।

তবে এর ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ  বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই নিষিদ্ধ করা হয় ওষুধটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এটি নিষিদ্ধ করেছে ।

বগুড়ার কৈ পাড়ার একটি ফার্মেসিতে দিনমজুর রুস্তম আলী সর্দি-জ্বরের জন্য ওষুধ নিতে আসলে তাকে অন্য ওষুধের সাথে নিমেসুলাইডও দেয়া হয়।

বিষয়টির সত্যতা যাচায়ে সরেজমিনে ঐ দোকানে গিয়ে একই ওষুধ চাইলে নাই বলে বিষয়টি অস্বীকার করেন দোকানি। পরে রুস্তম আলীসহ দোকানে গেলে তিনি নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রির কথা স্বীকার করেন।

তিনি জানান, বেশি মুনাফার লোভে ওষুধটি নিষিদ্ধ ও ক্ষতিকর জেনেও এটি বিক্রি করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দোকানদার বিষ্ণু সরকার নিজের নামের আগে পরে ডাক্তার ও ফার্মাসিস্ট ডিগ্রি লাগিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন। ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি দিয়ে থাকেন ব্যবস্থাপত্র।

তিনি দাবি করেন, ডাক্তারি প্রশিক্ষণ আছে তার। পরে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে এই ওষুধ বিক্রি না করার অঙ্গীকার করেন।

বগুড়ার শাহজাহান পুরের আরেকটি ওষুধের দোকান। সেখানেও মিলে বিপুল পরিমাণ নিমেসুলাইড ট্যাবলেট। প্রতিবেদক পাইকারি কিনতে চাইলে হাজার খানেক ট্যাবলেট এনে দেয় দোকানি। এভাবে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের অনেক ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে ওষুধটি।
ওষুধগুলোর পাইকারী বাজার বগুড়ার খান মার্কেট। প্রায় প্রতিটি দোকানেই পাওয়া যায় ওষুধটি। তবে ক্রেতা পছন্দ না হলে ওষুধ বিক্রি করে না দোকানিরা। আর সেখানে এসব আসে হিলি সীমান্ত দিয়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ওষুধটি জ্বর ও মাথা ব্যাথায় দ্রুত কাজ করে করলেও সর্বনাশ ঘটায় কিডনি ও লিভারের। দেখা দেয় চর্ম রোগসহ নানা উপসর্গ। এখনো বাজারে ওষুধটি সহজলভ্য হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি সরকারি নজারদারির অভাবকেই দায়ী করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার বলেন, গর্ভাবস্থায় এ ওষুধ খেলে জন্ম নিতে পারে বিকলাঙ্গ সন্তান। মা ও শিশুর আরো মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আর শিশুরা এ ওষুধ খেলে তাদের কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যায়।

এদিকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে , বাজার যাচাই করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নিবেন তারা।

প্রতিক্ষণ/এডি/মিসবাহ/আরেফিন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G