পৃথিবীর সবচেয়ে ভূতুড়ে বাড়ি!

প্রকাশঃ এপ্রিল ৫, ২০১৫ সময়ঃ ১০:১৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

5কখনো এমন জায়গায় গিয়েছেন যেখানে গেলে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে? অথবা ভয়ে আপনি থর থর করে কাঁপছেন! গ্রাম্য এলাকার বাঁশ বাগান, বেত বাগান, ঝোপ-ঝাড়, পুরোনো বাড়ি গুলোতে একা একা রাতের অন্ধকারে হাঁটলে এরকম অনুভুতি হতে পারে।

ভূত, আত্মা এই সকল বিষয়ে আমরা অনেকে বিশ্বাস না করলেও অনেক ঘটনা, আনেক ব্যাপার আছে যা কখনো কখনো খুব অস্বাভাবিক লাগে, কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায়না।

আমরা বিভিন্ন ভূতের গল্পে সিনেমায় ভূতের বাড়ি সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু আমাদের কি জানা আছে এই রকম ভূতুড়ে বাড়ি সত্যি আছে কিনা। আজ কিছু সত্যি ভূতুড়ে বাড়ি সম্পর্কে জানবো যেগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভূতুড়ে এবং বিপদজনক বাড়ি হিসাবে পরিচিত।

১. বোরলে রেকটরি

বোরলে রেকটরি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা হিসেবে পরিচিত। এটি যুক্তরাজ্যের বোরলে গ্রামে অবস্থিত। ১৮৬৩ সালে Reverend Henry Dawson Ellis Bull এর জন্য এটি নির্মান করা হয়। এখানে নুন বোরলে নামক এক ব্যক্তিকে হাটতে দেখা যায় যাকে প্রেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল।

পুরোনো একটি গল্প প্রচলিত আছে যে নুন বোরলে সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসীনীর প্রেমে পড়েন। দুজনে চেয়েছিলেন পালিয়ে যেতে কিন্তু ধরা পড়ে যায়। সন্ন্যাসীনীকে বধ করা হয় আর নুনকে পুড়িয়ে মারা হয় এই ভবনে।

২.স্ট্যানলি হোটেল

borle rektoryসারা পৃথিবীতে ভূতের অসংখ্য গল্প রয়েছে। স্টিফেন কিং এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত The Shining হরর মুভি দেখলে বুঝা যায় । বইটি লেখার ক্ষেত্রে তাঁকে অনুপ্রানিত করেছিল স্ট্যানলি হোটেল যেটি কলোরাডোর এস্টেস পার্কে অবস্থিত। তিনি যখন এই হোটেলের ২১৭ নাম্বার রুমে অবস্থান করেন তখন নিজেই অনেক ভৌতিক ঘটনা দেখেন। তিনি শুনতে পেতেন ভূতের ছেলেরা পাশের রুমে খেলা করছে! অনেক আত্মা ওখানে ঘুরে বেড়াতো। যখন গেস্ট আসতো তারা দেখতে পেত পিয়ানোর কীগুলো নিজে নিজে মুভ হচ্ছে, মিউজিক বাজছে। এই সকল ভৌতিক ঘটনা যারা দেখতো তাদের জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

৩. টাওয়ার অব লন্ডন

ছবিটি অনেক বিখ্যাত ভৌতিক স্থান টাওয়ার অব লন্ডন এর। ১৫৩৬ সালে হেনরি VIII এর একজন স্ত্রীকে এই টাওয়ারে শিরচ্ছেদ করা হয়। ঐ স্ত্রীলোকের আত্মাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যেত, মাঝে মাঝে তিনি তার খণ্ডিত মাথা হাতে নিয়ে টাওয়ার গ্রীন এবং টাওয়ার চাপেল রয়েলে হাটতেন।

৪.উডচেস্টার ম্যানশন

ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারে অবস্থিত উডচেস্টার ম্যানশনটির ভৌতিক বাড়ি হিসেবে খ্যাতি আছে। দালানটির নির্মান কাজ শেষ হয়নি।গত ২০০ বছর আগে এটির কাজ করা হয়েছিল শেষ বারেব মত।

গুজব আছে এখানে যারা কাজ করতে আসে তারা অনাক্ষাঙ্কিতভাবে মারা যায়। অদ্ভুত নাকের শব্দ পাওয়া যায়, নির্মান কাজের শব্দের মত শব্দ পাওয়া যায়, রোমান সৈন্য এবং যুবতী মেয়েদের দেখতে পাওয়া যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

wood chester৫.প্যারিসের কাটাকম্ব

প্যারিসের কাটাকম্ব ফ্রান্সের প্যারিসের একটি আণ্ডারগ্রাউন্ড অসারি (যেখানে মরা মানুষের মাথার খুলি, কঙ্কাল রাখা হয় )।
১৭০০ সালের মাঝা মাঝি এটি নির্মান করা হয় । যারা ৩০ কমপক্ষে ৩০ বছর আগে মারা গেছে তাদের খুলি এখানে সংরক্ষন করা হয়, এখানকার খুলি, হাড়গুলো রাতের বেলা নিজে নিজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার যাতায়ার করে বলে কথিত আছে।

 

৬. দি স্কিরিড ইন

কুখ্যাত ভৌতিক স্থান গুলোর একটি হল ইংল্যান্ডের ওয়ালেস স্টেটের Llanfihangel Crucorney তে অবস্থিত Skirrid Mountain Inn। লোক গল্প মতে- ৯০০ বছর আগে এখানে ১৮০ জনেরও বেশি লোক সিঁড়ির বীমের সাথে ফাঁসি দেওয়া হয়।

তখন ভবনের প্রথম তলা কোর্ট রুম হিসেবে ব্যবহার হত। এই ঘটনার পরে হঠাত একদিন দেখতে পায় একটা গ্লাস উড়ছে! লোকজন দেখতে পেত জানালায় তারা তাদের ঘাড়ে ফাঁস বানাচ্ছে! ঠান্ডা কক্ষগুলো হঠাত করে গরম হয়ে উঠতো!

download (1) এভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকতো। এসব এর পর ফেনি প্রাইস(দালানটির মালিক) চিন্তা করলেন এখানে অনেক সক্রিয় আত্মা রয়েছে, অন্য সকল লোকজন এটাকে বিপদজনক স্থান হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন এখানে থাকা অনেক ঝুঁকিপূর্ন।

৭ রোজ হল

জ্যামাইকার মন্টেগো বে এর রোজ হল একটি ভৌতিক স্থান । এখানে Annie Palmer নামে এক মেয়ের আত্মা বাস করে। তার শাসনামলের ১১ বছরে তাঁকে তার বেডে অত্যাচার করে খুন করা হয়। তিনি তার ৩ স্বামীকে এবং এক ভৃত্যকে বিষ প্রয়োগ করে, যাদু দিয়ে মেরে ফেলেন এবং অন্যান্য ভৃত্যদেরকে চাপ প্রয়োগ করেন লাশ সমুদ্রের পাড়ে সমাহিত করতে।

এর সূত্র ধরে পরবর্তীতে তাঁকে মেরে ফেলা হয়। লিজেন্ডের মতে- এই হলে শুধু নির্যাতিত অ্যানি নয় দাসদের শিশুদের আত্মাও ঘুরাঘুরি করে। এখানে রাত কাটানো সুখকর নয়।

 

৮ বেল ফার্ম

downloadবেল ফার্ম হন্টিং হিসেবে স্বীকৃত। ১৮১৭ থেকে ১৮২১ সালে একজন মহিলা বেল পরিবারে প্রবেশ করে যার নাম কেট এবং সে জন বেল এবং তার পরিবারকে অত্যাচার করে । এক পর্যায়ে বেল একটি স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, কেটের এন্টিক তার অবস্থা আরো খারাপ করে তুলে। এবং মারা যায়।

তার মৃত্যু শয্যার পাশে একটি কালো তরলের শিশি পাওয়া যায়। প্যারানরমাল বিশেষজ্ঞরা যখন কেটকে প্রশ্ন করেন শিশিটা কিসের, তখন তিনি বলেন এটা বেলকে দেওয়া হয়েছিল।

শিশিটির তরলগুলো যখন তার ঘরের বিড়ালকে দেওয়া হয় তৎক্ষণাৎ বিড়ালটি মারা যায়, অর্থাৎ কেট বেলকে হত্যা করেছেন, এখনো সেই ভবনের আশে পাশে বেলের আত্মা আছে বলে মনে করেন অনেকে এবং সেটাই বিভিন্ন বিপদ ঘটায়।

৯ এডিনবার্ঘ কেসল

স্কটল্যান্ডের অধিক হন্টেড জায়গা হিসেবে এডিনবার্ঘ কেসল অনেক পরিচিত। এটি একটি ঐতিহাসিক দূর্গ। এটি ৯০০ বছর পুরনো দূর্গ। এটার প্রাচীন অন্ধকূপ, যেখানে অগণিত মৃত্যুহার। অগনিত প্রেত্মাতার জন্য একটি শাশ্বত স্থান ।

এডিনবার্ঘ নিজে বলেন এটি ইউরোপের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা। বিভিন্ন উপলক্ষে দর্শনাথীরা যখন যেত তখন তারা দেখতে পেয়েছিলেন ভৌতিক বাশিওয়ালা, মুণ্ডহীন ঢোলবাদক, ফ্রান্সের এই জেল আসামীর আত্মা, কুকুরের আত্মা এবং আরো অনেক কিছু।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
20G