“প্রাকৃতিক কবর”
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কোনো মানুষের জীবনাবসান ঘটে। ধর্মের রীতি অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিকে বিভিন্নভাবে সমাহিত করা হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃত ব্যক্তিকে মাটিতে কবর দেওয়া হয়।
সময়ের স্রোতে মৃতদেহ মাটিতে মিশে যায়। তবে কোনো ব্যক্তির মৃতদেহ থেকে গাছ বেড়ে ওঠানোর একটি প্রক্রিয়া আছে, যার মাধ্যমে মানবদেহ থেকে জীবনের উপাদান পায় গাছ। এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে ‘প্রাকৃতিক কবর’। অদ্ভুত ও অবিশ্বাস্য সব বিষয় তুলে ধরে ‘রিপ্লিস’। মৃতদেহ থেকে গাছের খবরটি তারাই প্রকাশ করেছে।
রিপ্লিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘প্রাকৃতিক কবর’-এর প্রক্রিয়াটি বিশেষ জৈব কফিনভিত্তিক। এমন কফিন তৈরি করে ‘ক্যাপসুলা মুনদি’ নামে ইতালির একটি প্রতিষ্ঠান। ডিমের মতো দেখতে এই জৈব কফিন উদ্ভাবন করেছেন ইতালির অ্যানা সিতেল্লি ও রাউল ব্রেটজেল।
জৈব কফিনের বাইরের আবরণ পচনশীল প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। এর মধ্যে হাঁটু ভাঁজ করা অবস্থায় একজনকে রাখা যায়। মৃতদেহ রেখে কফিনটিকে একটি বীজের মতো মাটির মধ্যে স্থাপন করা হয়। আর কফিনের ঠিক ওপরে লাগানো হয় একটি গাছের চারা। ওই গাছের মূলগুলো জড়িয়ে থাকে বীজরূপী কফিনকে। মৃতদেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে গাছটি ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। শাখা-পল্লব ছড়িয়ে বিকশিত হয়।
কফিনের উদ্ভাবক অ্যানা ও রাউল বলেন, বেঁচে থাকা অবস্থায়ই একজন নিজের জন্য গাছ বেছে নিতে পারেন। অথবা প্রিয়জনরাও এমন গাছ বেছে নিতে পারেন। আর গাছটি হতে পারে মৃত ব্যক্তির একটি স্মারক।
প্রকৃতিবিদদের মতে, বর্তমানে প্রচলিত পশ্চিমা বিশ্বের মৃত ব্যক্তি সমাহিতের প্রক্রিয়ায় অনেক অপচয় হয় এবং এটি প্রকৃতির জন্য বিষক্রিয়ার কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দীর্ঘ সময় মরদেহ স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা যা দেহের মধ্যেই থেকে যায়। পরে তা মরদেহ মাটিতে মিশে যাওয়ায় বাধা সৃষ্টি করে।
ধর্মীয় দিক থেকে নানা বিধিনিষেধ থাকায় গত দশকের উদ্ভাবন হলে ‘প্রাকৃতিক কবর’ বিষয়টি অতটা জনপ্রিয় হয়নি। এমনকি ইতালির উদ্ভাবন কবরস্থানে এভাবে কবরস্থ করার সুযোগ আছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ