প্রেমের বলি : মন্ত্রীর ভাগ্নে ওবায়দুল

প্রকাশঃ জুলাই ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৪১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

Obaydul-mdপ্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র ভাগ্নে ওবায়দুল হককে, তার স্ত্রী সোনিয়া এবং প্রেমিক রুবেলের পরিকল্পনায় হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে সোনিয়াকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পুলিশ সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সোনিয়া ও তার প্রেমিক রুবেল ওবায়দুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী রুবেল নিজে ও তার দুই ভাগ্নে মিঠু ও তানভীর হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। ইতোমধ্যে রুবেলের দুই ভাগ্নে মাহমুদুর হাসান মিঠু ও তানভীর আহমেদ গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সোনিয়া ও রুবেলের মদদেই তারা এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন বলেও জানান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, ওবায়দুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী তাসমিন খাদিজা সোনিয়াকে (২৬) বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সোনিয়াকে গ্রেফতার করা হলেও প্রেমিক রুবেল এখনো পলাতক। একই ঘটনায় পাপ্পু নামে রুবেলের আরেক ভাগ্নেও খুঁজছে পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাশরেকুর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় আশপাশ এলাকার ফুটেজ দেখে রুবেল, মিঠু ও তানভীরকে হত্যাকারী হিসেবে সনাক্ত করা হয়। গত ২৬ জুন সারা দিন মিঠু বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকেই ওবায়দুলকে ফলো করতে থাকেন। টেলিফোনে ওবায়দুলের গতিবিধির তথ্যও আদান প্রদান হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় মোটর বাইকের সামনে ছিলেন মিঠু, মাঝে রুবেল ও পেছনে তানভীর। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সার্কুলার রোডের বাসায় ফেরার পথে তানভীরই মাথা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে রাতে আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

কলাবাগান থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওবায়দুল চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান যিনি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র মালিকানাধীন সানোয়ারা গ্রুপের ড্রিংকস অ্যান্ড বেভারেজ (কোয়ালিটি আইসক্রিম) ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপক ছিলেন। পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে ছিল তার অফিস। ওবায়দুলকে হত্যার রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার ভাই।

রুবেলে সঙ্গে সোনিয়ার পরিচয় সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাশরেকুর রহমান জানান, মাস পাঁচেক আগে পারিবারিকভাবে ওবায়দুল হক ও সোনিয়ার বিয়ে হয়। রাজধানীর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে সম্মান শ্রেণিতে অধ্যয়নকালেই চাঁদপুরের ছেলে রুবেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সোনিয়া। বিয়ের পরেও সোনিয়া ও রুবেলের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

প্রেমের সম্পর্কের জেরেই সোনিয়া রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী ওবায়দুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এজন্য সোনিয়া তার মামাকে অস্ত্র কেনার টাকা সরবরাহ করেছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত তানভীর।

৬০ হাজার টাকায় অস্ত্র ক্রয় করে রুবেল তার দুই ভাগ্নেকে সরবরাহ করেছিলেন বলে দাবি ডিবি ডিসি মাশরেকুরের। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা শুনে পুলিশ খুনিদের সনাক্ত করে।

প্রতিক্ষণ/ডেস্ক/সজল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G