রেইনট্রির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির দায়ে ব্যবস্থা
দ্য রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মাদক, শুল্ক ফাঁকি, ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মইনুল খান।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রেইট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আদনান হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, রেইনট্রি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিষয়ে অনিয়ম পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক, ভ্যাট এবং শুল্ক আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারা হোটেলটি ৯ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার পর থেকে ১৪ মে পর্যন্ত অতিথিদের কাছ থেকে ভ্যাটের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করলেও সরকারি তহবিলে জমা দিয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। অথচ এটাকে তারা নিজেদের লাভ বা প্রফিট হিসেবে দেখিয়েছে। শুল্ক অধিদফতরের হিসেবে এই সময়ে তারা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৮ লাখ ২৭ হাজার টাকার। তাই এটা আত্মসাতের পর্যায়ে পড়ে।
মইনুল খান বলেন, হোটেল থেকে উদ্ধার করা ১০ বোতল মদ ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
তবে রেইনট্রি হোটেলে কীভাবে মাদক প্রবেশ করেছে তা জানেন না বলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন হোটেলটির এমডি আদনান হারুন। এছাড়া শুল্ক গোয়েন্দারা ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট দাবি করেন তিনি।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়ে হাজির হন রেইনট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুন। এ সময় তাঁর সঙ্গে চাচা মজিবুল হক কামাল, ফুপা আকবর হোসেন মঞ্জু, চাচাতো ভাই হাসিব রুমি এবং আইনজীবী জাহাঙ্গীর কবির ছিলেন।
আইনজীবী জাহাঙ্গীর কবির জানান, শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তারা। তারা যেসব কাগজপত্র চেয়েছিল তার সবগুলোই তারা জমা দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর সন্তুষ্ট।
দুপুর ১২টা থেকে অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শফিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল আদনান হারুনসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এর আগে গতকাল দ্য রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের দেওয়া নোটিশের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঐ আদেশ ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আদালত।
গত ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দ্য রেইনট্রি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মো. আদনান হারুনকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজির হয়ে তার হোটেলে পাওয়া মদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়।
যেখানে তাকে ১৭ মে হাজির হতে বলা হয়। এরপর আদনান হারুনের পক্ষে এক মাসের সময় আবেদন করেন তার আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। আবেদন বিবেচনা করে ২৩ মে তাকে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সদর দপ্তরে হাজির হতে বলা হয়।
মার্চ মাসের একটি ধর্ষণের তদন্তের ধারাবাহিকতায় ১৪ মে রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। অভিযানে ১০ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়। তবে মদ সংরক্ষণ বা বিক্রয়ের অনুমতিপত্র নেয়নি রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। ঐ ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা। এরপর আলোচনায় আসে দ্য রেইনট্রি হোটেল।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই