বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ কুমিল্লাবাসী
জেলা প্রতিবেদক
চার বছর অতিক্রম করেও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা দিতে পারছে না কুমিল্লাবাসীকে। রাস্তা-ঘাট এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। নগরীর অধিকাংশ এলাকা মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই নিমজ্জিত হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে এসে নগরীর কিছু ড্রেনের মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে, এতে নগরবাসীর জন্য নতুন যন্ত্রণা যোগ হয়েছে জলাবদ্ধতা। তাই চলতি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার জন্য প্রতিদিনই নগরবাসীকে নাকাল অবস্থার সন্মুখীন হতে হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১১ সালের ১০ জুলাই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রথম সিটি মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা মো. মনিরুল হক সাক্কু। বর্তমানে নগরীর প্রায় সব কয়টি রাস্তাঘাট খানা-খন্দে ভরে গেছে। এ বর্ষায় বাড়তি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা এবং সময় মতো ড্রেন পরিষ্কার না করা ও নগরীর পানি প্রবাহের প্রধান খালগুলো সময়মতো খনন না করায় মাত্র ১ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
বিশেষ করে নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকা ও এর পাশের পুলিশ সুপারের বাসভবন, স্টেডিয়াম, ঈদগাহ সড়ক, টাউন হল মাঠ, কান্দিরপাড় ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়ক, সরকারি মহিলা কলেজ রোড, দক্ষিণ চর্থা-ইপিজেড সড়ক, রেইসকোর্স, চিড়িয়াখানা রোড, ঠাকুরপাড়া, বাগানবাড়ি, বিসিক শিল্প এলাকা, দৌলতপুর, ধর্মপুর, অশোকতলা, রানীর বাজার, ঝাউতলা, ডাক্তারপাড়া, বাগিচাগাঁও, চৌধুরীপাড়া, আদালতপাড়া, কালিয়াজুরি, মুরাদপুর, কাশারিপট্টি, মগবাড়ি, বিষ্ণপুর, ছোটরা, সুজানগর, মুরাদপুরসহ অধিকাংশ এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু থেকে কোমর পানি পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনাযুক্ত দুর্গন্ধময় পানি ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ে।
জানা যায়, নগরীতে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং নিয়মিত ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ না করায় দ্রুত পানি নিষ্কাশিত হতে পারে না। এছাড়াও পানি প্রবাহের প্রধান খালগুলো বর্ষার আগেই খনন না করার কারণে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার এ নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার আবু কাউছার, জালাল উদ্দিন, মুন্সেফবাড়ির নাছির উদ্দিন, ঠাকুরপাড়ার ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জাগো নিউজকে জানান, বর্ষার আগেই নগরীতে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মেরামত ও প্রধান প্রধান খালগুলো খনন করা হলে বর্ষায় নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার এ দুঃসহ যন্ত্রণার কবলে পড়তে হতো না।
তবে সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি নিজে মাঠে নেমে কাজ করছি। বর্তমানে নগরীর কয়েকটি স্থানে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলার কারণে সাময়িক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও পরে পানি সরে যায়।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির