বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিতে ভিজলো দেশ
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
এ যেন কৃষ্ণের জন্য রাধিকার অপেক্ষা, এ যেন লাইলীর জন্য মজনুর অপেক্ষা। ঠিক এমনই প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এক পশলা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে ছিল তীব্র গরমে অতিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষ।
অবশেষে তাদের প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। বৈশাখের ১৮তম দিনে বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ। সাথে ছিল কাল বোশেখির ঝড়ও।
এ বছরের এপ্রিল মাসটি ছিল গত ৩০ বছরের মধ্যে দেশের সর্বাপেক্ষা গরম মাস। এ সময় অন্যান্য বছরের চেয়ে গড় তাপমাত্রা প্রায় ৬ ডিগ্রি বেশি ছিল। অসহনীয় গরমে দেশবাসীর জীবন হয়ে পড়ে ওষ্ঠাগত। এমন গরম অনেক দিন যাবৎ কেউ দেখেনি, কল্পনাও করেনি। এমন অবস্থায় সবাই প্রতীক্ষা করতে থাকে বৃষ্টির। কিন্তু বৃষ্টি আর আসে না। মানব সৃষ্ট গ্রীন হাউজ ইফেক্টের ফলাফল হাড়ে হাড়ে মানুষকে টের পাইয়ে দিয়ে বৈশাখের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও দেখা দেয়নি বৃষ্টি।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির অভিমান ভাঙে। মে মাসের প্রথম দিনটিকে সে বেছে নেয় অভিমান ভাঙার লগ্ন হিসেবে। রাজধানী ঢাকায় সন্ধ্যার পর পর আকাশে মেঘ জমে, ধূলিঝড় শুরু হয়। আশ্রয়ের জন্য ছুটোছুটি করতে থাকে ঘরের বাইরে থাকা মানুষেরা। তার পরপরই নামে অনেক প্রতীক্ষার স্বস্তির বৃষ্টি। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক বজ্রপাতও হয়েছে। সঙ্গে ৭৫ কিলোমিটার গতিতে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই গতকাল বৃষ্টির সংবাদ পাওয়া গেছে। তবে রাজশাহী মহানগরীতে ঝড়ের কারণে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়, যদিও হয়নি কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। রাজশাহীতে রবিবার প্রচণ্ড রোদের পর দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে ৪টা ৫ মিনিট পযর্ন্ত চলে ঝড়ের তাণ্ডব। এসময় বাতাসের গতি বেগ ছিলো ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার।
ঝড়ে মহানগরীর বেশ কয়েক জায়গায় সড়কে গাছ উপড়ে পড়লে যান চলাচল ব্যাহত হয়। রেল লাইনের ওপরে গাছ উপড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী রুটে ট্রেন চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে। এছাড়া নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় নবনির্মিত একটি ৫ তলা ভবনও হেলে পড়েছে।
তবে এ সকল ক্ষয়ক্ষতি তেমন আমলে না নিয়ে আগ্রহের সঙ্গেই বৃষ্টি বরণ করে নিয়েছে দেশবাসী। দীর্ঘ দিনের ভয়াবহ দাবদাহের পর বৃষ্টির পরশ মানুষকে দিয়েছে স্বর্গীয় স্বস্তির অনুভূতি।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া