ভালবাসার প্রতীক হয়ে জ্বল জ্বল করছে তাজমহল

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫ সময়ঃ ২:৫০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:০০ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

live129105_1পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্যের সুন্দরতম স্থাপত্য আগ্রার তাজমহল। পৃথিবীর আর কোন নির্মান শৈলী এই সাদা মার্বলের নির্মান শৈলীকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না।

মুঘল সম্রাট শাহজাহান নির্মিত সম্পূর্ণ সাদা মার্বলের এই অনন্য স্মৃতিসৌধ সম্রাটের প্রিয়তমা স্ত্রী সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের প্রতি ভালবাসার প্রতীক হয়ে জ্বল জ্বল করছে।

যারা আগ্রাকে দিল্লীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ করেছে। একটি নির্মাণ করেছেন সম্রাট জাহাঙ্গীর তাঁর পিতা আকবরের সম্মানে

এবং অন্যটি সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রীর স্মরণে তৈরিকরেছেন “তাজমহল”, যা অসাধারণ সৌন্দর্য্যের অধিকারী, স্বামীতাঁর স্ত্রীর শোকে এতই শোকার্ত যে স্ত্রী জীবনে যেমন তার সাথেই ছিলেন, মরণেও তিনি তার কবরের কাছেই থাকবেন।

১৬৩১ খ্রিস্টাব্দে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজমহল তাদের চতুর্দশ সন্তান গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেন। এ মৃত্যুতে প্রচন্ড শোকাহত হয়ে পড়েন শাহজাহান। তিনি প্রিয়তমা স্ত্রীর স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য তাজমহল গড়ার উদ্যোগ নেন।

স্বেত মর্মরে নির্মিত তাজমহল অন্যান্য মুঘলসমাধি সৌধের মতই,মূলতঃপারস্যদেশীয় বৈশিষ্টময়, যেমন আইওয়ানসহ প্রতি সম ইমারত, এ ধনুক আকৃতির দরজার ওপরে বড় দুর্গ। বর্গাকার বেদির উপর স্থাপিত সমাধির ভিত্তি কাঠামোটি বিশাল এবং কয়েক কক্ষবিশিষ্ট। প্রধান কক্ষটিতে মমতাজমহল ও শাহজাহানের স্মৃতিফলক বসানো, তাদের কবর রয়েছে এক স্তরনিচে।

এই মনোহর স্থাপত্য সৌন্দর্য্য হলো এক জৌলুসপূর্ণ সমাধিগৃহ যা সম্রাজ্ঞী মমতাজমহলের সমাধি ধারণ করে আছে। অনেকেই তাজমহলকে ‘মার্বলের শোকগাথা’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন আবার কেউ বলেন ‘‘স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ’’। সম্রাট শাহজাহানের সমাধি পরবর্তীতে এখানে যোগ হয়।

এই তাজমহলের নির্মান কাজ শেষ হতে প্রায় বাইশ বছর সময় লেগেছিল এবং ২০ হাজার কর্মী এই নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিল। এই মহান স্থাপত্য নির্মাণে খরচ হয়ে ছিল প্রায় ৩২ মিলিয়ন রুপী এবং ১৬৪৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। দিল্লী, কান্দাহার, লাহোর এবং মুলতানের সুদক্ষ রাজ মিস্ত্রীগণকে তাজের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত করা হয়। অধিকন্তু বাগদাদ, শিরাজএবং বোখারার অনেক দক্ষ মুসলিম নির্মাতা তাজের বিশেষকাজ গুলি করেন।

নির্মাণ কাজের দলিলে উল্লেখ আছে যে, তাজের প্রধান স্থপতি ছিলেন সেই সময়ের প্রখ্যাত মুসলিম স্থপতি ওস্তাদ ঈসা। একটি বর্গাকার (১৮৬-১৮৬) ক্ষেত্রের প্লাটফর্মের মোড়ানো চৌকোনার উপর অসমান অষ্টভুজাকৃতির আকার ধারণ করেছে তাজমহল। ভবনের নকশা কারুকাজ খচিত পরস্পর সংবদ্ধ শাখা-প্রশাখার ধারণায় তৈরী যাতে একটি প্রশাখা নিজ শাখার উপর দাঁড়িয়ে আছে এবং প্রধান কাঠামোর সাথে সুচারু ভাবে সংহত হয়েছে।

এই চমৎকার সমাধিসৌধ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে- প্রধান প্রবেশ পথ, একটিপ্রশস্তবাগান, একটি মসজিদ (বামে), একটি অতিথি নিবাস (ডানে) এবংকয়েকটি রাজকীয় ভবন।

প্রধান কাঠামোর উপর ৪ টিপুল আবার ৪টি ভাগে বিভক্ত হয়ে তাজের চমৎকারন কশাকে আরও শৈলিতা দানকরেছে এবংসাইটের শেষ প্রান্তে অবস্থিত তাজকে অপরূপ সৌন্দর্য্য দান করেছে। দর্শনার্থীদের চোখে ভারতের শ্রেষ্ঠ যে সব আকর্ষণ রয়েছে তার মধ্যে তাজমহল প্রধানতম দৃষ্টি আকর্ষণীয় বর্তমান এবং চিরকালের জন্য।

আর এই মনমুগ্ধকর নির্মান শৈলীর কারনেই সাবেক একজন মার্কিন রাষ্ট্রপতি তাজমহল দেখে মন্তব্য করেছেন, ‘পৃথিবীতে দুই ধরণের মানুষ আছে- যারা তাজ দেখেছে আর যারা দেখেনি’।

প্রতিক্ষণ/ এডি/অাকিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G