ইরানের মহানুভবতার দেয়াল
রাকিব হাসান:
শীত এলে কিছু সাধারণ প্রশ্ন আমাদের সবার দরজায় কড়া নেড়ে যায়। তা স্বদেশ কিংবা বিদেশ; সবক্ষেত্রেই একথাটি সমানভাবেই প্রযোজ্য। আমাদের দেশের শীত পরিস্থিতি অন্য সব সমস্যা এবং সময়ের মতো বেসামাল নীতিতেই চলে এসেছে। আপাতত এর ব্যাত্যয় ঘটার কোনো কারণও নেই।যদিও কিছু ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা বরাবরের মতো অব্যাহত রয়েছে।
তবে শীতকালের এ শীতবস্ত্র নিয়ে শুধু আমাদের দেশেই সমস্যা চলে তা নয়; বিদেশেও হরহামেশা এ সমস্যার মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদের। কিন্তু সেখানে সমস্যা যেমন থাকে তেমনি তা পরিত্রাণের উপায়ও তারা খুঁজে নেয়। এই যেমন ধরুন ইরানের কথা।
কোথা থেকে এক লোক এসে রাস্তার পাশের দেয়ালটিতে লিখেন, আপনার যে জিনিস আর কাজে লাগছে না, তা এখানে রেখে যান। আর আপনাদের দরকারের জিনিস পেলে নিয়ে যান। পাশে রেখে গেলেন কিছু হুক আর হ্যাঙ্গার।
এর পরপরই দেয়ালের হুকে, হ্যাঙ্গারে বহু মানুষ এসে কোট, জাম্পার, কম্বলসহ আরও নানান ধরণের কাপড়চোপড় ঝুলিয়ে রাখতে শুরু করেন। মূলত, স্বপ্রণোদিত এই উদ্যোগটি শুরু হয় ইরানের উত্তর-পূর্বের শহর মাশাদে। ইতোমধ্যে, ইন্টারনেটের বদৌলতে এর একটি নামও ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। তা হল, মহানুভবতার দেয়াল। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তা সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে শুরু করে।এখন ইরানের বহু শহরে একই কায়দায় শুরু হয়েছে এই মহানুভবতার দেয়াল।
অভিনব এ পদ্ধতির প্রশংসার পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে অনেকেই সরকারের নিজস্ব উদ্যেগের সমালোচনা করে বলছেন, সরকার শীতার্ত মানুষের কথা ভুলে গেছে।
একজন লিখেছেন, দেশে যখন এত সম্পদ, তখন মানুষ মানুষকে সাহায্য করছে। যারা ক্ষমতায় তারা মানুষের জন্য কোনো চিন্তা করছেন না।
পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্প্রতি পারমানবিক চুক্তি করে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়তে শুরু করেছে ইরানে। তবে এতদিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পরিসংখ্যান বলছে, ইরানে ১৫ হাজার মানুষ গৃহহীন অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। শীতের মধ্যে মহানুভবতার এসব দেয়াল তাদের অনেককে অন্তত কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাকিব