মাছের জগতের বিস্ময়

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৩:২৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

পৃথিবীতে মাছের প্রজাতি প্রায় তিন হাজার৷ তাদের মধ্যে কিছু কিছু মাছ সত্যিই চমকে দেবার মতো, যেমন ইলেকট্রিক ইল বা বৈদ্যুতিক পাঁকাল মাছ৷ এমনই কিছু মাছের গল্প থাকছে আজ পাঠকদের জন্য।

ইলেকট্রিক ইল

mach 1

ইলেকট্রিক ইল কিন্তু পাঁকাল মাছ নয়, বাংলায় সে পড়বে ছুরি মাছদের পর্যায়ে৷ ৬০০ ভোল্ট অবধি ইলেকট্রিক শক মারতে পারে! সেভাবেই শিকার ধরে – বা মারে – এই বৈদ্যুতিক পাঁকাল৷ গবেষণা করে দেখা গেছে যে, বাদুড়রা যেমন শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে পোকামাকড়ের অবস্থান জানতে পারে, তেমন ইলেকট্রিক ইল’ও কারেন্ট মারার সময় সেই পন্থায় শিকারের অবস্থিতিও জানতে পারে৷

ডোরাকাটা তীরন্দাজ মাছ

mach 2

এই মাছগুলো জলের নীচে থেকেই পুকুরের ধারের ঘাস-গুল্ম থেকে পোকামাকড় শিকার করতে পারে৷ কিভাবে? মুখ থেকে জলের পিচকিরি ছুঁড়ে পোকাগুলোকে পানিতে ফেলে দেয় এই তীরন্দাজ মাছ৷ বড় মাছগুলো তিন মিটার দূরত্বে বসা শিকারকে ঘায়েল করতে পারে!

স্টারগেজার

mach 3

এই মাছটি বালির মধ্যে শরীর ডুবিয়ে বসে থাকে শিকার ধরার আশায়৷ শিকার এলে লাফ দিয়ে উঠে শিকার ধরে৷ স্টারগেজার মাছের চোখ মাথার উপর বসানো, থ্যাবড়া মুখটাও ওপরদিকে বাঁকানো৷ মনে রাখতে হবে, মাছটি কিন্তু বিষাক্ত৷

স্টোনফিশ বা পাথর মাছ

mach 4

এ’মাছটিও বিষাক্ত এবং ক্যামোফ্লেজ, মানে ছদ্মবেশ ধারণে ওস্তাদ৷ দেখলে মনে হবে যেন শ্যাওলায় ঢাকা এক টুকরো পাথর৷ কিন্তু পায়ের নীচে পড়লেই বিষাক্ত কাঁটাগুলো ফুটে যাবে! বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাছগুলোর মধ্যে পড়ে এই পাথর মাছ৷ সে বিষে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷

পটকা মাছ

mach 5

পটকা মাছেদের পেটটা রাবারের মতো বাড়ে বা কমে৷ পটকা মাছেরা পেটে পানি ঢুকিয়ে বলের মতো গোলাকৃতি হয়ে যেতে পারে৷ এদের শরীরেও টেট্রোডোটক্সিন নামের একটি মারাত্মক বিষ আছে৷ জাপানে এই মাছ সুখাদ্য বলে পরিগণিত৷ তবে অতি সাবধানে কাটতে হয়, বিষের অংশটা বাদ দিয়ে৷ কেননা সে’ বিষে মানুষ মরতে পারে৷

অ্যাঙ্গলার ফিশ বা মাছ ধরা মাছ

mach 6

এই মাছের মাথায় ইলিসিয়াম নামধারী একটি আঙুলের মতো দেখতে আঁচিল আছে৷ সেই আঁচিলের ওপর দিকটা বাতির মতো জ্বল জ্বল করে, যা’তে হবু শিকাররা আকৃষ্ট হয়৷ তারপরেই সেই শিকার অ্যাঙ্গলার মাছের সুবিশাল মুখগহ্বরে ঢুকে যায়৷ এই মাছের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, বিশ্বের সর্বত্র এদের পাওয়া যায়, এমনকি গভীর সমুদ্রেও৷

ভাইপার ফিশ বা সর্প মাছ

mach 7

আজগুবি মাছ দেখতে হলে যেতে হয় সাগরের অতলে৷ সেখানে জলের চাপ বেশি, আলো প্রায় নেই বললে চলে, খাবারও কম৷ এই পরিবেশে শিকার ফসকালে চলবে না৷ তাই ভাইপার ফিশদের দাঁত, মুখ, সবই ভয়ংকর, ভয়াবহ…

প্লেইস বা রূপচাঁদা মাছ

mach 8

চাঁদা মাছরা চ্যাপটা৷ তাদের ক্যামোফ্লেজ বা নিজেকে লুকনোর ক্ষমতা অসাধারণ, বিশেষ করে কাদার মধ্যে৷ মজার কথা: বড় হওয়ার সময় তাদের একটা চোখ মাথার এপাশ থেকে ওপাশে চলে গিয়ে অন্য চোখটির সঙ্গে যুক্ত হয়!

সিহর্স ঘোড়া নয়

mach 9

যদিও এই ছোট্ট মাছগুলোকে ঘোড়ার মতো দেখতে এবং এদের প্রকৃতিও অত্যন্ত নিরীহ৷ দ্বিতীয়ত, ‘সাগরের ঘোড়া’ নামধারী এই মাছগুলি চিৎ হয়ে নয়, খাড়া হয়ে সাঁতার কাটে – ফলে এরা খুব ভালো সাঁতারু হয় না৷ তৃতীয়ত, পুরুষ সিহর্সরা নিষিক্ত ডিমগুলোকে পেটের ভাঁজে বয়ে নিয়ে বেড়ায় এবং পরে বাচ্চাদের জন্মও দেয়৷

মাডস্কিপার বা লাফানো কাদা মাছ

mach 10

মাডস্কিপাররা মাছ হলেও, তাদের জল বেশি পছন্দ, না ডাঙা বেশি পছন্দ, তা তারা কখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি৷ নিঃসন্দেহে মাছ হলেও, তারা পাখনা ব্যবহার করে কাদার ওপর দিয়ে হাঁটতে পারে৷ এছাড়া তারা অন্যান্য উভয়চরের মতো ত্বক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারে৷

হাতুড়ি-মাথা হাঙর

mach 11
বিজ্ঞানীদের মতে হ্যামারহেড শার্কের মাথাটা হাতুড়ির মতো দেখতে হওয়ার কারণ হল, এর ফলে তার চোখ দু’টো আরো দূরে দূরে হয়৷ ফলে হাতুড়ি-মাথা হাঙর আরো বেশি দেখতে পায়… যেমন শিকার…

সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে

প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G