যে কোনো দিন ঐশীর আপীল রায়
ঢাকায় পুলিশ দম্পতি মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ঐশী রহমানের মৃত্যদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিলের রায় যে কোনো দিন।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ রোববার মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির এবং সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ঐশীর দণ্ড বহাল রাখার আর্জি জানান। অন্যদিকে বয়স বিবেচনায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এই ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, ডেথ রেফারেন্স ও ঐশীর আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ঐশীকে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। সেদিন খাস কামরায় দুই পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে তার সঙ্গে কথা বলেন বিচারকরা।
গত ১২ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।
রাজধানীর চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট এসবি কর্মকর্তা মাহফুজ ও তার স্ত্রী স্বপ্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান পরদিন পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন।
পরদিনই নিহত দম্পতির মেয়ে ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে তার বাবা-মাকে নিজেই খুন করার কথা স্বীকার করেন।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন।
ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি হত্যায় সহায়তার দায়ে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে খালাস পান ঐশীর আরেক বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডটি ছিল পরিকল্পিত ও নৃশংস। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা গেছে, ঘটনার সময় আসামি ঐশী প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। নৃশংস হত্যাকাণ্ড বিবেচনায় ঐশীকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ওই বছর ডিসেম্বরে খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন ঐশী। সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের রায় ও অন্যান্য নথি হাই কোর্টে আসে মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য।
এরপর চলতিবছর ১২ মার্চ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। একটি মানবাধিকার সংস্থা ঐশীর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রিট আবেদন করার পর হাই কোর্টের দুই বিচারক গত ১০ এপ্রিল ওই তরুণীর বক্তব্য শোনেন।
এ মামলায় ঐশীদের অপ্রাপ্তবয়স্ক গৃহকর্মীকেও আসামি করা হয়। তার বিচার কিশোর আদালতে চলছে।
প্রতিক্ষণ/এড/সাই