রহস্যে ঘেরা “বুমেরাং”

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

Boomerangs_-_আদি থেকেই রহস্যে ঘেরা এই পৃথিবী। তা সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিই হোক আর মনুষ্য তৈরিই হোক। এর প্রতিটি রহস্যের পেছনে বিজ্ঞানীরা আজও ছুটে চলেছে। অনেক কিছু অজানা থাকলেও কিছু কিছু রহস্য এরই মধ্যে তারা উদঘাটন করে ফেলেছে।বিজ্ঞানীরা অনেক রেহস্যের জট খুলতে পারলেও আমাদের কাছে তা আজও রহস্যময়।বুমেরাং এমনই এক ভয়ানক আর রহস্যময় অস্ত্র। যা কি না নিক্ষেপকারীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তার কাছেই আবার ফিরে আস
তো।কিন্তু সেই লক্ষ্যকারীর কোন ক্ষতি হতো না। খুব অবাক লাঘেছে তো?তাহলে আজ এই রহস্যে ঘেরা অস্ত্র সম্পর্কে জেনে নিন।boomerang_02

বর্তমানে বিভিন্ন দেশই তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র।আর বিধ্বংসীও বটে। তবে শুধু এখনকার মানুষরাই অস্ত্র তৈরি করে তা কিন্তু নয় পূর্বের দিনের মানুষরাও বানাতো অস্ত্র ।এখনকার অস্ত্রের মতো এত বেশি ভয়াবহ হয়তো ছিলো না । তবে সেই সময়ের অস্ত্রগুলো তৈরি করা হতো প্রখর বুদ্ধিমত্তার দ্বারা। তেমনই একটি অস্ত্র এই বুsumanমেরাং। এটি দিয়ে মানুষ বা শক্তিশালী জন্তু-জানোয়ারকে সহজেই আক্রমণ করা যেত। সুদূর অতীতে দ্বৈরথ যুদ্ধে পদাতিক ও অশ্বারোহী(ঘোরা চরা) বাহিনীর প্রধান হাতিয়ার ছিল এই বুমেরাং।

একে একটি বক্রাকৃতি মারণাস্ত্র বলা যায়। এই ভয়ানক অস্ত্র প্রথমে তৈরি করেছিল আদিম অস্ট্রেলীয়রা। এরপর তাদের অনুকরণ করে ভারতেও এর ব্যবহার শুরু হয়। এশীয় ও মিসরীয় যোদ্ধারা সবসময় বুমেরাং ব্যবহার করত। প্রাচীন ভারতীয়রা যে বুমেরাং তৈরিতে পারদর্শী ছিল। এখনও ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান জাদুঘরে সুসজ্জিত দেয়ালচিত্রে তা দেখা যায় ।এর ছিল তিনটি বৈশিষ্ট্যঃboomer

-এতে বিমানের প্রপেলারের মতো প্যাঁচ ছিল।
-এটি চলার সময় নানারকম পাক খেয়ে এঁকেবেঁকে চলতে পারত।
-কোনো কারণে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বুমেরাং ফের নিক্ষেপকারীর কাছেই ফিরে আসতে পারত।

এ অভিনব অস্ত্রটির নিখুঁত যান্ত্রিক কৌশল বহুকাল ধরে বিজ্ঞানীদের অবাক করে আসছে। অষ্টাদশ শতকের শুরুতে মানুষ যখন বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বুমেরাংয়ের প্রতি মানুষের কৌতূহল বহুগুণে বেড়ে যায়। এক শৌখিন বিজ্ঞানী ছুটে যান অস্ট্রেলিয়ায়। তিনি দীর্ঘদিন ঘুরে বেড়ান আদিম এলাকাগুলোতে। আদিবাসীদের সঙ্গে কাটান বেশ কিছুদিন। তাতেই
বেরিয়ে আসে বুমেরাংয়ের তথ্য ও এর অদ্ভুত যন্ত্রকৌশলের রহস্যটি।

পদার্থবিজ্ঞানের একটি মৌলিক সূত্রের মাধ্যমে সে চলাফেরা করে। বুমেরাং কাঠ বা পাতলা লোহা দিয়ে তৈরি। এর চলার গতি আঁকাবাঁকা, ঘূর্ণিবায়ুর মতো পাক খাওয়া ছুটন্ত সাপের মতো ঢেউ তোলা। বুমেরাংয়ের চলার ধরন সহজেই শিকারকে আক্রমন করে। বুমেরাংয়ের সেই বিচিত্র গতি তিনটি কারণের মিলিত ফল। কারণগুলো হলোঃ

_Boomerang

-প্রথমেই নিক্ষিপ্ত বল
-বুমেরাংয়ের নিজস্ব ঘূর্ণি
-বায়ুর বাধা

এ তিনের সমন্বয়ে বুমেরাং এঁকেবেঁকে পাক খেয়ে চলে। আর বুমেরাংয়ের অবাক করা আসল রহস্যটা হলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ফিরে আসে নিক্ষেপকারীর কাছে। তবে এটি কিভাবে যে নিক্ষেপকারীর হাতে ফিরে আসে সে ব্যাপারে অনেক তথ্য প্রকাশিত হলেও সেটি এখনও বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষদের কাছে এক রহস্যের বিষয়।

প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G