প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা ‘লাখো কণ্ঠে’ আবৃত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী পহেলা মে সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে (শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র) এ কবিতা আবৃত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘লাখো কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতা’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নজরুল চর্চা কেন্দ্র- ‘বাঁশরী’ ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাঁশরী।
সংবাদ সম্মেলনে বাঁশরীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, ‘নজরুল ছিলেন জনমানুষের কবি, গণমানুষের কবি, চেতনার কবি। বাংলাদেশের সব মানুষ যাতে নজরুল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো মানে অন্যকে অবজ্ঞা করে নয়। আমরা উন্নত ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ চাই।’
তিনি বলেন,‘নজরুল শুধু জন্মদিন কিংবা মৃত্যু দিবসের নয়, নজরুল বছরের সব দিনের কবি। তাই আমরা প্রতিদিন সকাল ১১টায় কবির মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই।’
তিনি বলেন,‘আগামী পহেলা মে সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাবির শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র মাঠে লাখো কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তির উদ্যোগ নিয়েছি। এতে এক লাখের বেশি মানুষ একসঙ্গে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করবেন।’
তিনি বলেন, ‘যদিও একসঙ্গে এতো মানুষ যোগাড় করা সম্ভব নয়। আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি লাইভ করার চেষ্টা করব। এছাড়া দেশের ৬৪টি জেলাসহ সারাবিশ্বের মানুষ সেদিন একসঙ্গে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করতে পারবেন। আমরা বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় কবির বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করব।’
অর্থনীতিবিদ সুজিত চৌধুরী বলেন,‘আজ নজরুলের দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও সাম্প্রদায়িকতা ফিরে এসেছে। এখানে একজন ব্যক্তিকে গরুর মাংস খাওয়ার জন্য মরতে হবে কেন? আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। নজরুল অনুসারীরা আত্মসমর্পণ করে না।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা বলেন,‘নজরুলের চেতনাকে ছড়িয়ে দিয়েই আমরা যাতে দেশকে এগিয়ে যেতে পারি সে লক্ষ্যে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে যেভাবে নজরুলকে বিভাজিত করার চেষ্টা করছে, আমরা সেটাকে ভেঙে দিতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে কবির নাতনী অনিন্দিতা কাজী বলেন,‘নজরুল ছিলেন অন্যায় ও কলুষিতের বিরুদ্ধে। তার কণ্ঠে সাধারণ মানুষের কথা ফুটে উঠেছে। এরপরও নজরুলের দুর্গতির কমতি ছিল না। আজ অনেকে বলেন নজরুলের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি কেন? তখনই মনে হয় আসলে নজরুল এমন একটা মানুষ- তিনি তো মানুষের কবি হতে চেয়েছিলেন। তিনি অন্যায় ও কলুষিতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। আজ তথাকথিত ব্যক্তিরা প্রশ্ন করেন কাজী নজরুল কি হিন্দুর কবি না মুসলমানের কবি? তারা আসলেই জানেন না নজরুল কী ছিলেন?’
প্রতিক্ষণ/এডি/রন