শনিবার ব্যবসায়ীদের অনশন

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫ সময়ঃ ৬:৩৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম

bgmeaচলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন ও ধারাবাহিক নাশকতা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী অনশন করবেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার বিজিএমইএ ভবনের সামনে সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এ প্রতীকী অনশন পালন করবে

সমিতির কার্যালয়ে বুধবার বিকেলে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র মধ্যে আলোচনা শেষে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আগামী শনিবার দেশের সকল পোশাক প্রস্তুতকারক ও এই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীরা কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ’র কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অনশন করবে। এ ধ্বংসাত্বক কার্যকালাপের বিষয়ে শ্রমিকদের মঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে পরবর্তিতে তাদের নিয়েও অনশন করার হুমকি দেন তিনি।

তিনি বলেন, পোশাক ও বস্ত্রখাত আজ ধ্বংসের দার প্রান্তে। একে রক্ষা করার জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ নেতাদের নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি আগামী কালকের মধ্যেই গঠন করা হবে। এ কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায়োজনে আগামীতে তারা দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার দাবিতে ধারাবহিক কর্মসূচি পালন করবে।

ব্যবসায়ীদের এ নেতা বলেন, হরতাল-অবরোধ চলাকালে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহীতাদের ঋণ পুনর্গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে। এ সুযোগ নিতে পারবে মাত্র দেশের ৩১ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এক দেশে দুই আইন থাকতে পারেনা এসব সুবিধা সব ব্যবসায়ীকে দিতে হবে। এ দাবিতে অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হবে।

অনুষ্ঠানে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকার ও বিরোধীদলকে আলোচনার জন্য চাপ দিতে হবে। আলোচনায় দুই দলের পাঁচ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এতে যদি দুই দল রাজী না হয় তাহলে তাদের আলোচনায় বসতে বাধ্য করতে হবে।

সালাম মুর্শেদী বলেন, বর্তমানে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে দুই দলকে রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে।

ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে উল্লেখ করে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, এ থেকে উত্তরণে তাদেরকেই মাঠে নামতে হবে। এ জন্য শ্রমিকদেরও বুঝিয়ে রাজপথে নামানোর পক্ষে মত দেন তিনি। একই সঙ্গে এর সাথে আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানান, বর্তমান চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে আসবেন না বলে বিজিএমইকে চিঠি দিয়েছেন। তারা অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছেন। এতে তৈরি পোশাক প্রবৃদ্ধি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এই খাতে প্রবৃদ্ধি ছিলো ১৬ দশমিক ৭৭, যা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এসে দাড়িয়েছে ২ দশমিক ৩৮।

রাজনৈতিক অস্থিরতায় জানুয়ারি মাসে পোশাক শিল্পে সরাসরি ক্ষতি হয়েছে ৬ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। অন্যদিকে শিপমেন্ট বিলম্ব করায় ডিসকাউন্ট দিতে হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা। একই সময় অর্ডার বাতিল হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা বলেও জানানো হয়।

এর আগে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র ঘোষণা অনুযায়ী গত ৮ ফেব্রুয়ারি রোববার বিজিএমইএ ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিজিএমইএ নেতারা। এছাড়া গত ২৯ জানুয়ারি বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবণের সামনে মানববন্ধন করেন বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাকশিল্পের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ নেতারা। মানববন্ধনে রাজনৈতিক সংঘাতে অর্থনীতির সঙ্কটের কথা তুলে ধরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি জোটের টানা অবরোধ এবং তাদের এই দাবি মানতে সরকারের অবস্থানের কারণে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

প্রতিক্ষণ /এডি/চামেলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G