সুপার রিফাইনারির বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

প্রকাশঃ জুলাই ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৯:৪৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৫০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

superএলিট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সুপার রিফাইনারি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আহমেদ ও তার স্ত্রী-পুত্রের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে পৃথক এ তিনটি মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন। আগামী সপ্তাহে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় মামলা তিনটি দায়ের করা হবে।

অনুমোদিত তিন মামলার মধ্যে দু’টিতে সেলিম আহমেদ ও তার স্ত্রী লুৎফুন্নেছা আহমেদ এবং অপরটিতে তাদের সন্তান সাজির আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। লুৎফুন্নেছা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং সাজির প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে কনডেনসেট (গাদ জ্বালানি ) বিক্রি করে সরকারের প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি তেলের কাঁচামাল পরিশোধন করে সরকার নির্ধারিত পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখিয়ে একদিকে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও খোলাবাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হয়। গত ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছর পর্যন্ত তিন বছরে মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৫৭৪ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে সরকারের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অসাধু মনোভাব নিয়ে ওই পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের সুপার রিফাইনারি প্রাইভেট লিমিটেড এলিট গ্রুপের একটি সহযোগী কোম্পানি। এ কোম্পানির এমডি সেলিম আহমেদ এলিট গ্রুপের কর্ণধার।

জানা গেছে, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদেশ থেকে জ্বালানি তেলের কাঁচামাল আমদানি করে তা পরিশোধন করে সরকারের জ্বালানি তেল বিক্রয় কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করার কথা ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ম হচ্ছে, পরিশোধনের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে অযৌক্তিকভাবে পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখিয়ে অতিরিক্ত অপচয়ের অংশের পরিশোধিত তেল খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। এ অতিরিক্ত তেলের নির্ধারিত ভ্যাটও ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।

দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৫ লিটার কনডেনসেট (গাদ জ্বালানি) পরিশোধনের ক্ষেত্রে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২৯০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। এ পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে সুপার রিফাইনারির এমডি সেলিম আহমেদ এবং কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সেলিম আহমেদের স্ত্রী লুৎফুন্নেছা আহমেদকে আসামি করা হচ্ছে।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ লিটার কনডেনসেট পরিশোধনে ২ কোটি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৩১৮ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হবে।

একইভাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯৯ লিটার কনডেনসেট পরিশোধনের ক্ষেত্রে ১ কোটি ২৬ লাখ ৩ হাজার ৯৬৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে কোম্পানির এমডি সেলিম আহমেদ, চেয়ারম্যান লুৎফুন্নেছা আহমেদ ও কোম্পানির পরিচালক সেলিম আহমেদের ছেলে সাজির আহমেদকে অন্য আরেকটি মামলায় আসামি করা হচ্ছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/মেহেদী

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G