‘হাতবিহীন’ পাইলট, ‘হাতবিহীন’ প্রাঙ্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শিশুটির বয়স মাত্র ৩ বছর। দুটো হাত ছাড়া জন্মগ্রহণ করে সে। এই শিশুটির সঙ্গে দেখা করলেন তার মতোই একজন। তবে তিনি পৃথিবীর প্রথম হাতবিহীন পাইলট নামে সুপরিচিত।
আমেরিকার বাসিন্দা জেসিকা কক্স এখন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের গর্বের ধন। তার বক্তৃতায় দারুণ উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠেন অন্যান্য প্রতিবন্ধীরা। মেধাবী এই নারী প্রথমবারের বিশ্বের একমাত্র এবং সর্বপ্রথম পাইলট হয়েছেন যার দুটো হাত নেই। গত ২৪ জুলাই তারিখে কক্স দেখা করেছেন তিন বছরের ফুটফুটে প্রাঙ্কের সঙ্গে।
প্রাঙ্কের মা কার্লিন জানান, আমি যখন ২০ সপ্তাহের গর্ভবতী তখন চিকিৎসক জানালেন আগত সন্তানের দুটো হাত থাকবে না। আবার তখনই আমি জেসিকার সম্পর্কে জানতে পারি। জেসিকাই আমার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। পরে ফেসবুকে জেসিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কার্লিন।
বিভিন্ন বক্তব্য অনুষ্ঠানে প্রেরণাদায়ক কথা বলেন জেসিকা। জেসিকা জানালেন, সব অনুষ্ঠানে তাকে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি করা হয় তা হলো, তুমি কাউকে জড়িয়ে ধরো কিভাবে?’ এর উত্তরে জেসিকা বলেন, কাউকে বুকে জড়িয়ে নিতে হাতের প্রয়োজন পড়ে না। দুজনের অনুভূতি ও সৌহার্দ্য ভাগাভাগি করে নেওয়াটাই বুকে জড়িয়ে নেওয়া। আর এর জন্যে হাতের প্রয়োজন হয় না।
কক্স একই ভাবে বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন ছোট্ট প্রাঙ্ককে। এই পাইলট তার বিমানেও নিয়ে গেছেন শিশুটিকে। উইনকনসিনের আকাশে ইএএ-এর এয়ারভেনুতে জেসিকার সঙ্গে চলে যায় প্রাঙ্ক।
এ ঘটনায় আবেগে আপ্লুত প্রাঙ্কের মা। চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুজন যখন একে অপরকে বুকে জড়িয়ে নিলো, তখন আমার এত ভালো লাগলো যা আগে কখনো লাগেনি। আমি সত্যিই জেসিকার প্রতি কৃতজ্ঞ। মা আশা করছেন, তার মেয়ের দুটো হাত নেই তো কি হয়েছে? জেসিকাই তার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। মেয়েটি বড় হয়ে সত্যিকার অর্থেই সব সীমাবদ্ধতা জয় করবে।
টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কক্স বলেন, যখন আমি দুটো হাতই নেই এমন একটি শিশুকে দেখলাম তখন মনে হলো, আমার এই অভাবকে পূরণ হয়ে গেছে প্রাঙ্ককে দেখে। আমি যা করতে পেরেছি এই শিশুটি আরো অনেক বেশি কিছু করবে। এমন সব মানুষকে আমি সব ধরনের সহায়তা আজীবন দিয়ে যাবো।
এখন প্রাঙ্কের সঙ্গে দারুণ খাতির জেসিকার। শিশুটির নিয়মিত খবর রাখছেন তিনি। তাকে দিচ্ছেন নানা উপদেশ এবং পরামর্শ। আরো দিয়ে চলেছেন অঢেল ভালোবাসা।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির