অনলাইন সাংবাদিকতার আদ্যোপান্ত

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭ সময়ঃ ৩:১৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:১৫ অপরাহ্ণ

1
বিবিসির প্রথম দিকের অনলাইন সংস্করণ

বর্তমানে ছোটবড় সব গণমাধ্যমেরই অনলাইন সংস্করণ রয়েছে। হোক তা সংবাদপত্র, কিংবা  টেলিভিশন। মূলধারার শক্তিশালী এই সংবাদ মাধ্যমগুলো রাতারাতি অনলাইন সংস্করণের দিকে ঝুঁকে নি। এর পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। আসুন জেনে নেই অনলাইন সাংবাদিকতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনা-

 ১।১৯৯১- টিম বার্নার্নস লি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ব্রাউজার ও সার্ভার বাজারে আনেন।

২। ১৯৯৪- টেলিগ্রাফ পত্রিকা ইলেকট্রনিক সংস্করণ বের করে।

৩। ১৯৯৭- বিবিসি অনলাইন চালু হয়।

৪। ১৯৯৮- মনিকা-বিল ক্লিনটন সম্পর্ক নিয়ে প্রথম অনলাইন স্কুপ প্রতিবেদন প্রকাশ।

৫। ১৯৯৯- পাইরা ল্যাবস ‘ব্লগার’ প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেন। ব্যক্তিগত ব্লগ প্রকাশের সুযোগ উন্মুক্ত হয়।

৬। ১৯৯৯- গার্ডিয়ান পত্রিকা প্রতি মিনিটে খেলাধুলার সংবাদ হালনাগাদ করা শুরু করে।

৭। ২০০১- টুইন টাওয়ার হামলাঃ সারা বিশ্ব হুমড়ি খেয়ে পড়ায় সংবাদমাধ্যম গুলোর ওয়েবসাইট অচল হয়ে পড়ে। তখন বিকল্প মাধ্যম হিসেবে ব্লগে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়।

৮। ২০০২- ব্লগারদের সচেতনতায় যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর ট্রেন্ট লটের পতন।

৯। ২০০৩- ইরাক যুদ্ধঃ সালাম প্যাক্স ‘বাগদাদ ব্লগার’ নাম নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাগদাদ নগরী থেকে প্রতিমুহূর্তের তথ্য জনসম্মুখে আনতে থাকেন। ‘এম্বেডেড সাংবাদিক’দের সাথে তাঁর তথ্যের বিস্তর ফারাক আমাদেরকে যুদ্ধের প্রকৃত ভয়াবহতা অনুমান করতে সাহায্য করে।

১০। ২০০৩- ক্রিস্টোফার অ্যালব্রিটন তাঁর ব্লগ ‘ব্যাক টু ইরাক’ এর সাহায্যে ১৫০০০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেন। মূলধারার বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র সাংবাদিকতারও যে একটা অর্থনীতি থাকতে পারে তা প্রথম বারের মত প্রমাণিত হয়।

১১। ২০০৩- যুক্তরাজ্যে ‘মাইসোসাইটি’ নামক প্ল্যাটফর্ম চালুর মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে জনগনের যোগাযোগ স্থাপন, অভিযোগ প্রদান ও তাদের কাজের খতিয়ান প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত হয়।

১২। ২০০৪- সিবিএস টিভির উপস্থাপক ড্যান রেদারের প্রতিবেদনের যথার্থতা নিয়ে ব্লগাররা লেখালেখি শুরু করলে একপর্যায়ে ইস্তফা দিতে তিনি বাধ্য হন।

১৩। ২০০৪-এশিয়াতে সুনামি আঘাত হানে। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে  সাধারণ জনগনের পাঠানো মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ওয়েবে সাড়া ফেলে।

১৪। ২০০৫- মিডিয়া মুঘল রুপার্ড মারডক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘মাই স্পেস’ কিনে নেয়।

১৫। ২০০৫- লন্ডনের পাতাল রেলে বোমা হামলার ছবি একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ধারন করে ব্লগে দেন। সেখান থেকে সারা বিশ্বের মিডিয়াতে তা ছড়িয়ে পড়ে।

১৬। ২০০৭- মায়নমারে আন্দোলনের সংবাদ শুধুমাত্র ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই উঠে আসে, কারন সেখানকার সামরিক জান্তা গণমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছিল।

১৭। ২০০৮- টুইটারে চীনে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের খবর সয়লাব।

১৮। ২০০৮-ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর সাংবাদিকরা টুইটারকে তথ্য সংগ্রহের উপাদান হিসেবে ব্যাবহার করে।

১৯। ২০১০- হাইতিতে মারাত্মক ভুমিকম্প হলে আই-রিপোর্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দুর্গতদের খবরাখবর নিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানো।

২০। ২০১০- উইকিলিকস কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কাজ শুরু করে। তথ্য সাংবাদিকতার দিগন্ত উন্মোচন।

২১। ২০১১- বাজারে আসে আমাজনের কিন্ডেল। প্রচলিত ফিচারের চেয়েও লম্বা প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু।

২২। ২০১৩- এডওয়ার্ড স্নোডেন- গার্ডিয়ান পত্রিকায় বেশ কিছু গোপন তথ্য ফাঁস করে। সারা বিশ্বে হইচই পড়ে যায়।

২৩। গুগল গ্লাস বাজারে আসে। প্রযুক্তি পণ্য পরিধানের প্রচলন হয়।

২৪। চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সনির ওয়েবসাইট হ্যাক। হ্যাক করা তথ্য সাংবাদিকতায় ব্যবহার করার নৈতিকতা নিয়ে তুমুল আলোচনা।

২৫।ফেসবুক ও টুইটারে লাইভ ভিডিও ফিচার চালু।

২৬। ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার কাগজের সংস্করণ বন্ধ করে শুধুমাত্র অনলাইন সংস্করণ চালু।

২৭। তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় গণমাধ্যম সামরিক বাহিনী কর্তৃক অধিকৃত হলেও ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা সারা বিশ্বের গোচরে আনা সম্ভব হয়।

২৮। ফেসবুকে ভুয়া সংবাদ চিহ্নিত করার ব্যাপারে জুকারবার্গের উদ্যোগ।

শত চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো জায়গা করে নিয়েছে সারা বিশ্বের পাঠকের হৃদয়ে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G