বিনোদন ডেস্ক
অনুকরণ যেখানে হলিউড, বলিউড ছাপিয়ে গেছে সে ধারায় বাংলাও নেই পিছিয়ে। শর্ট ফিল্ম মূলত কম বাজেটের এবং উদীয়মান নির্মাতাদের ফিল্ম মেকার হবার একটা প্রক্রিয়া। টিভি চ্যানেলগুলো সুযোগ করে দিয়েছিল নির্মাতাদের স্বাধীন গল্প বলার জন্য, যেন মেধাবি তরুণ নির্মাতারা কাজের সুযোগ পায় । কিন্তু সেই প্রচেষ্টা যে সবসময় ইতিবাচক হয় সেটাও না।
বর্তমানে বেশিরভাগ চ্যানেলগুলো এজেন্সী নির্ভর হওয়ার কারণে টিভি ফিকশন গুলোর মান ও বাজেট যেমন নিম্মমুখী ঠিক তেমনিভাবে কমছে প্রকৃত মেধার চর্চা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিদেশি শর্ট ফিল্ম থেকে গৃহীত গল্পই নাটকের মূল উপজীব্য্।
গল্পহীন নাটককে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কোন জনপ্রিয় গায়কের গান ব্যবহার নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। তবুও দেশি টিভি নাটকের দর্শক কোনভাবেই পাওয়া যাচ্ছে না। এরই ফলশ্রুতিতে ইদানিং শুরু হয়েছে বেশ কবছর আগের প্রচারিত জনপ্রিয় নাটক বা টেলিফিল্ম এর নাম হুবহু ব্যবহার করা।
এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক। ২০১১ সালে নির্মাতা আফজাল হোসেন মুন্নার নির্মিত টেলিফিল্ম “তোমায় ভেবে লেখা” (মাছরাঙ্গা’য় প্রচারিত) নামটি হুবহু নকল করে এ বছর ভালোবাসা দিবসের নাটক নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা ইমরাউল রাফাত।
মুন্না ও মাছরাঙ্গা চ্যানেল কর্তৃপক্ষের নজরে ব্যপারটা আসলে সাথে সাথে মৌখিক আপত্তি জানালেও নতুন নাটকটির নাম বদলায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নাটকের নামের তো কপিরাইট নেই, কাজেই এক নাটকের নাম অন্য নাটকে ব্যবহারে কোন নিষেধাজ্ঞাও নেই।
মুন্না বলেন, তবে কি বড় বড় কবি সাহিত্যিকেরাও তাদের যেসব গল্প উপন্যাসের নাম কপিরাইট করে যাননি বা যেতে পারেন নি সে বিখ্যাত নামগুলো ব্যবহার করে, যা খুশি তা প্রকাশ করে কি বাজারে ছাড়া যাবে? ব্যাপারটা কতটা দন্ডিত হবে নৈতিকতার বিচারে?
পরিচালক আফজাল হোসেন মুন্না তার ফেসবুক ওয়ালে ২০১১ সালে তার নির্মিত টেলিফিল্মটির পোস্টার দিয়ে এ ব্যপারে প্রতিবাদ করে লিখেন,
“তোমায় ভেবে লেখা” নামে একটি টেলিফিল্ম ২০১১ সালে বানিয়েছিলাম যা মাছরাঙ্গা টিভিতে ২০১১ এর ২৪ শে নভেম্বর অন এয়ার হয়েছিল এবং তৎকালিন মিডিয়ার খুব কম মানুষই আছে যারা টেলিফিল্মটি দেখেননি বা শোনেননি।
আজকে খবর পেলাম একই নামে আরেকটি নাটক নির্মিত হয়েছে আরটিভি’র জন্য।উল্লেখ্য যে নব্য নির্মিত নাটকটির সংশ্লিষ্ট এজেন্সী ও কর্তৃপক্ষ আমার টেলিফিল্মটি সম্পর্কে জানেন। এমতাবস্থায় প্রশ্ন জাগে তাদের নাটকের জন্য তারা কি আর কোন নাম খুজে পেলেন না? বা নামটি বদলানোর কোন ব্যবস্থা করা যায় না? নামটি পুনরায় ব্যবহারে হয়তো তারা টিআরপি কিছুটা বেশি পাবেন কিন্তু সম্মান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তথা এথিকস এর ব্যপারটা কি তারা ভাববেন না? অন্যের ছায়ায় পথ চলে কে কবে পথ খুজে পেয়েছে? দু:খজনক খুব দু:খজনক। আমি আশা করব তারা অনতিবিলম্বে নাটকের নামটি বদলে কোন মৌলিক নাম রাখার মহৎ কাজটি করবেন”।
পোস্টটি দেয়ার পর তার পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন সেলিব্রেটি ও দর্শকরা মতামত দিলেও এর কোন সুরাহা হয়েছে কিনা এ পর্যন্ত জানা যায়নি। যদিও ফেসবুকে এই নামেই নাটকটির প্রচারণা চলছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১৫ তে টেলিভিশনের বিশিষ্ট নির্মাতা নোমান রবীনের টেলিফিল্ম ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’ এর নাম চুরি করেও একটি টিভি ফিকশন নির্মাণ করেন ইমরাউল রাফাত। যা সে সময় সমালোচিত হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/আস