অন্য ভাষা আন্দোলন, অন্য ফেব্রুয়ারি
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
১.
আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি আমার খুব প্রিয় একটা দিন ছিল, কারণ সেদিন ছিল আমার বাবার জন্মদিন! আমার মা, বাবার জন্মদিন উপলক্ষে ভালো-মন্দ রান্না করতেন— কাজেই দিনটিকে ভালো না বেসে কি উপায় আছে? বড় হওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারির আসল গুরুত্বটি আমি জানতে পেরেছি এবং আমার ধারণা, এই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অগ্নিঝরা একটি একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল একাত্তরের ২১ ফেব্রুয়ারি। আমরা তখন খালি পায়ে প্রভাতফেরিতে যেতাম এবং গরম চোখে আশে-পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানি মিলিটারি ই.পি.আর পুলিশের দিকে তাকাতাম। একাত্তরের ২১ ফেব্রুয়ারিতেও আমরা জানতাম না আর মাসখানেকের ভেতরেই আমাদের দেশে কী ভয়ঙ্কর একটি হত্যাকাণ্ড শুরু হবে! পাকিস্তান মিলিটারিদের আতঙ্ক ছিল শহীদ মিনার, তাই প্রথম সুযোগেই তারা আমাদের শহীদ মিনারটি গুঁড়ো করে দিয়েছিল! এতদিন পর সেই দিনগুলোকে এখন কেমন যেন শুধু সুররিয়াল দিন বলে মনে হয়।
বাঙালি হিসেবে আমাদের ভেতরে আর যা কিছুরই অভাব থাকুক না কেন, আবেগের কোনও অভাব নেই! তাই আমাদের প্রিয় দিনগুলোতে আমরা আবেগ দিয়ে কথা বলতে ভালোবাসি। একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমরা একই সঙ্গে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং অহঙ্কার নিয়ে বলি, ‘পৃথিবীতে শুধু বাঙালিরাই মাতৃভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছে!’
কথাটিতে সত্যতা আছে কিন্তু আমার ধারণা আমাদের দেশের অনেকেই জানে না ভাষার জন্যে যে বাঙালিরা প্রাণ দিয়েছে তাদের ভেতর কিন্তু আমাদের দেশের পাশাপাশি আসামের বাঙালিরাও আছে!
২০১১ সালে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা বেশ কয়েকজন শিক্ষক আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়টি আসামের শিলচর শহরে। শুনে অনেকে অবাক হতে পারে যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটি দূরত্বের হিসেবে ঢাকা বা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাছে! শুধু তাই নয়, করিমগঞ্জের ভেতর দিয়ে শিলচরে যাওয়ার সময় কখনও মনে হয়নি একটি ভিন্ন দেশে এসেছি—শুধু ইমিগ্রেশনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় কঠিনভাবে মনে পড়েছে আমরা ভিন্ন দেশে এসেছি!
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক বাইরে একটি শহীদ মিনার রয়েছে, আসামের বাঙালি ভাষা শহীদদের স্মরণে এই শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে আসামের ১১ জন ভাষা শহীদদের স্মরণ করে ১১ টি স্তম্ভ তৈরি করা আছে—আমরা যেভাবে আমাদের শহীদ মিনারে ফুল দেই, ঠিক সে রকম সেই শহীদ মিনারেও আমরা ফুল দিয়ে এসেছিলাম। তখন আমাদের সঙ্গে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এবং ভাইস চ্যান্সেলরও ছিলেন। আমি বেশ অবাক হয়ে লক্ষ করেছিলাম আমাদের ভাষা শহীদদের আমরা যে রকম অকপটে ভালোবাসা জানাতে পারি—তাদের বেলায় সেটা পুরোপুরি সত্যি নয়। সেখানে কোথায় জানি একটু বাধা আছে, সেটি নিয়ে তাদের ভেতরে একধরনের ক্ষোভ এবং দুঃখবোধও রয়েছে। আমি যতটুকু জানি, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এই শহীদ মিনারটি তারা তৈরি করতে পারেননি এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে তৈরি করতে হয়েছে।
অথচ আসামের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস কিন্তু আমাদের ভাষা আন্দোলনের মতোই গৌরবোজ্জ্বল। ১৯৬০ সালে আসামের অহমিয়া ভাষাকে অফিসিয়াল ভাষা করার জন্যে একটি বিল পাস করার সময় সেখানকার বাঙালিরা একটি বিশাল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সেই আন্দোলন ছিল বহুমাত্রিক, সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার জন্যে সেই এলাকায় প্রায় দুই সপ্তাহ পদযাত্রা করা হয়েছিল। আন্দোলনের চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছানোর জন্যে ১৯৬১ সালের ১৯ মে হরতাল ডাকা হয়েছিল। আন্দোলনকারী বাঙালিরা নানা জায়গায় পিকেটিং করেছিলেন। সেই হিসেবে রেল স্টেশনেও পিকেটিং হচ্ছে এবং সেদিন সকালের ট্রেনের জন্যে একটি টিকেটও বিক্রি হয়নি। দুপুরবেলা সশস্ত্র আসাম রাইফেল চলে এলো, বেলা আড়াইটার দিকে সাধারণ মানুষের মিছিলে প্রথমে লাঠিচার্জ, তারপর কোনও রকম সুযোগ না দিয়ে হঠাৎ করে গুলি করতে শুরু করে। একেবারে ঘটনাস্থলেই ৯ জন মারা গিয়েছিল পরে আরও ২ জন, সবমিলিয়ে ১১ জন সেদিন বাংলা ভাষার জন্যে শহীদ হয়েছিলেন।
এই ভাষা শহীদদের মাঝে রয়েছে ১৬ বছরের একজন কিশোরী, তার নাম কমলা ভট্টাচার্য। মাত্র আগেরদিন সে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে। অনেক কষ্টে মাকে রাজি করিয়ে কমলা বড় বোনের একটা শাড়ি পরে রেল স্টেশনের কাছে পিকেটিং করতে গিয়েছে। তার সাথে ছোটবোন, বড়বোন, পাড়াপড়শী অনেকেই আছে। যখন লাঠিচার্জ করা হচ্ছে তখন ছোটবোন নিচে পড়ে গিয়ে চিত্কার করছে, কমলা তাকে তোলার জন্যে যখন ছুটে যাচ্ছে, ঠিক তখন একটা বুলেট তাঁর মাথার ভেতর দিয়ে চলে যায়, বাংলা ভাষার জন্যে প্রাণ দেয় প্রথম একটি মহিলা—শুদ্ধ করে বলা উচিত, প্রথম একটি বালিকা।
এই আন্দোলনের পর আসাম সরকার তাদের বিলটি স্থগিত করে বাংলা ভাষাকে যথোপযুক্ত মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়েছিল। তারপরও সেই এলাকার বাঙালিরা কিন্তু এখনও বাংলা ভাষার সঠিক অবস্থান নিয়ে এক ধরনের ক্ষোভ অনুভব করেন। আমাদের ভাষা আন্দোলনের কথাটি এখন সারাপৃথিবী জানে, আসামের ভাষা আন্দোলন কিংবা ভাষা শহীদদের কথাটি কিন্তু সেভাবে পৃথিবীর মানুষের কানে পৌঁছায়নি। আমি জানি আমাদের দেশের অনেক মানুষও কিন্তু একসঙ্গে ১১ জন মানুষের এভাবে বাংলা ভাষার জন্যে প্রাণ দেওয়ার কথাটি জানেন না।
বাংলা ভাষার আন্দোলন দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন করা হয়েছিল, আমাদের দেশের নামটির সঙ্গে আমাদের ভাষার নামটি জড়িয়ে আছে। বাংলা ভাষার ভবিষ্যিত নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্বটি আমাদের। বাংলা ভাষার যেসব বিষয় নিয়ে গৌরব করা সম্ভব আমরা সেগুলো নিয়ে সারাপৃথিবীর সামনে গৌরব করি। আমার মনে হয় ১৯৬১ সালের ১৯ মে বাংলা ভাষার জন্যে প্রাণ দেওয়া এই ১১ জনের বীরত্বগাঁথা প্রচার করার দায়িত্বটুকুও আমাদের। আমরা যে রকম গভীর ভালোবাসা নিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমাদের ভাষা শহীদদের স্মরণ করি, ঠিক সে রকম ১৯ মে আসামে ১৬ বছরের কিশোরী কমলার সঙ্গে প্রাণ দেওয়া ১১ জন ভাষা শহীদদেরও যেন আমরা সমান ভালোবাসায় স্মরণ করি। আমরা আরও উচ্চকণ্ঠে পৃথিবীর সবাইকে বলব, শুধু বাঙালিরাই ভাষার জন্যে প্রাণ দিতে পারে এবং সেই বাঙালিরা শুধু আমাদের দেশের সীমানার মাঝে আটকে নেই, আমাদের পাশের দেশেও আছে। ভাষার জন্যে প্রাণ দেওয়া সব বাঙালির জন্যেই আমাদের বুকে থাকবে গভীর ভালোবাসা।
২.
ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ ছিল ভালোবাসা দিবস, এটা পশ্চিমা দিবস থেকে ভাড়া করে আনা বিদেশি কালচার এবং করপোরেট ব্যবসা এরকম কথা বলে অনেকেই এটার সমালোচনা করেন, আমি করি না। তার প্রধান কারণ আসলে এটি হচ্ছে ফাল্গুনের প্রথম দিন, যে দিনে বসন্তকাল শুরু হয়। পৃথিবীর সব দেশেই ধরে নেওয়া হয় হাড় কাঁপানো শীতের শেষে যখন প্রথম বসন্তের ছোঁয়া লাগে সেটি ভালোবাসার প্রতীক। পাখিরা তখন ঘর বাঁধে, বনের পশুরা তাদের সঙ্গী খুঁজে নেয়—তাহলে মানুষ বাকি থাকবে কেন? আমরা আমাদের বাংলা ক্যালেন্ডারে যে দিনটিকে বসন্তের প্রথম দিন হিসেবে ঘোষণা করে রেখেছি সারাপৃথিবী যদি সেই দিনটিকে ভালোবাসা দিবস বলে পালন করতে পারে, তাহলে আমরা কেন একটু অহঙ্কার করব না, আমরা কেন সেই দিবসটি পালন করব না? আমরা কেন তাদের স্মরণ করিয়ে দেব না এটি আসলে আমাদের বসন্তকালের শুরু? (আজকাল অবশ্যি আমাদের দেশ থেকে শীত-বসন্ত-গ্রীষ্ম এই কালগুলো উঠে গিয়ে ঢালাও গরমের একটা লম্বা ঋতু শুরু হচ্ছে, যেটি কখন শুরু হয় আর কখন শেষ হয় কেউ জানে না!)
তারপরও কারও কারও মনে হয়তো একটু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল বিদেশি একটা দিবসকে আমাদের দেশে আমদানি করে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ভারাক্রান্ত করে ফেলছি কি না। এই বছর যখন পাকিস্তান ঘোষণা করেছে তাদের দেশে এই দিবসটি বেআইনি তখন নিশ্চয়ই আমাদের সবার সন্দেহ ঘুচে গেছে! এতদিনে আমরা জেনে গেছি পাকিস্তান যে কাজটি করে তার উল্টো কাজটি হচ্ছে সঠিক! পৃথিবীর কোনও দেশই আর বিচ্ছিন্ন নয় পৃথিবীর যে কোনও দেশের খবরই অন্য দেশে পাওয়া যায়। তাই আমরা সবাই জানি পৃথিবীতে ‘দিবস’ এর কোনও অভাব নেই। নারী দিবস আছে, মা দিবস আছে, বাবা দিবস আছে, শিক্ষক দিবস আছে—সত্যি কথা বলতে কি, এই দিবসের তালিকা বলে আমরা শেষ করতে পারব না। দিবসগুলোর কোনও কোনওটা মজার, কোনও কোনওটা সিরিয়াস এবং সত্যি সত্যি কোনও কোনওটা ব্যবসাপাতি বাড়ানোর জন্যে তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, খুবই সঠিকভাবে আমাদের ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং সেটা নিয়ে আমাদের আনন্দের সীমা নেই। আমরা যারা গণিত নিয়ে আন্দোলন করি তারা মার্চের চৌদ্দ তারিখ পাই দিবস পালন করি এবং এর ভেতর নিছক আনন্দ ছাড়া আর কিছু। তাই যখন দেখেছি ভালোবাসার মতো একটা শাশ্বত বিষয়কে নিয়ে দিবসটি পাকিস্তান বেআইনি করে দিয়েছে তখন আমি কৌতুক অনুভব করেছি, সম্ভবত তাদের দিবসগুলো হবে অন্যরকম, ‘নারী শিক্ষা বন্ধ দিবস’, ‘গণহত্যা শুরু দিবস’, ‘যুদ্ধে পরাজিত দিবস’ কিংবা ‘মিথ্যাচার দিবস’ পাকিস্তানে এর সবকিছু ঘটেছে!
দুসপ্তাহ আগে আমি ফেব্রুয়ারি মাসটি কেন আমার প্রিয় মাস সেটি নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম, তখন একজন আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন আমি কেন স্বৈরাচারবিরোধী দিবস এবং এরশাদের আমলে হত্যা করা জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, তাদের সম্পর্কে কিছু লিখলাম না। আমি তার প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি এবং আমি এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করেছি আমাদের দেশের পত্র-পত্রিকাতেও এত বড় একটি ঘটনা নিয়ে বিশেষ কোনও উচ্চবাচ্য নেই!
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যখন এই ঘটনা ঘটেছিল তখন আমি দেশের বাইরে। আজকাল যেরকম দেশের খবর মুহূর্তের মাঝে সারাপৃথিবীর সবার কাছে পৌঁছে যায় তখন সেরকম ছিল না, তাই ঘটনাটি আমি সেভাবে পাইনি এবং আমার স্মৃতির মাঝে সেটি সেরকম জোরালোভাবে নেই। দেশেও যে এই ঘটনাটির কথা খুব উচ্চকণ্ঠে বলা হয় কিংবা খবরের কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় বড় করে লেখা হয় তাও নয়। তাই ভালোবাসার দিবসে স্বৈরাচারী এরশাদের এই হত্যাকাণ্ডের কথাটা মনে হয় আমার মতো আরও অনেকের স্মৃতিতেই আবছা হয়ে আছে। অথচ ঘটনাটি মোটেও আবছা হয়ে যাবার মতো ঘটনা নয়। মিলিটারি সরকারদের কাছে যে বিষয়টির গুরুত্ব সবচেয়ে কম সেটি হচ্ছে লেখাপড়া। এরশাদ সরকারের আমলে শিক্ষা নিয়ে তাদের অনেক সিদ্ধান্ত আমাদের লেখাপড়ার পুরো বিষয়টিকেই ওলট-পালট করে দিয়েছিল। সেই এরশাদ আমলের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন আব্দুল মজিদ খান এবং তার হাতে তৈরি করা শিক্ষানীতিটি ‘মজিদ খানের শিক্ষানীতি’ হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছিল। (কুখ্যাতি পাওয়ার যথেষ্ট কারণও ছিল, কারণ সেখানে বলা হয়েছিল যারা লেখাপড়ার খরচের অধিক বহন করতে পারবে শুধু তারাই লেখাপড়ার সুযোগ পাবে) এই দেশের মানুষেরা শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করেছিল, কাজেই তারা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার একটা মিছিল কলাভবনের সামনে থেকে শিক্ষা ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। মাঝপথে পুলিশের গুলিতে জয়নাল এবং জাফর নামে দুজন ছাত্র সেখানেই মারা যায়। আরও কতজন কিভাবে মারা গিয়েছে আমি সেগুলো খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছিলাম, সেভাবে খুঁজে পাইনি। জাফর এবং জয়নাল ছাড়াও কাঞ্চন, দিপালী সাহা, মোজাম্মেল এবং আইয়ুব, এই নামগুলো খুঁজে পেয়েছি। তাদের ছবি কিংবা তাদের সম্পর্কে আর কোনও তথ্য খুঁজে পাইনি।
আমি মনে করি, স্বৈরাচারীবিরোধী আন্দোলনের বিশেষ করে একটি অমানবিক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে যারা মারা গেছেন, আমাদের তাদের স্মৃতিটুকু আরও একটু ভালো করে ধরে রাখা উচিত। একটি সময় ছিল যখন ইতিহাস ধরে রাখা খুব কঠিন ছিল, এখন কাজটি খুব সহজ! আমরা একটু চেষ্টা করলেই পৃথিবীর তথ্য ভাণ্ডারে এই দেশের জন্যে প্রাণ দেওয়া মানুষগুলোর স্মৃতি ধরে রাখতে পারি।
কেন ধরে রাখি না?
লেখক : মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি