অপপ্রচারই পোশাক খাতের অন্তরায় !
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিশেষ করে বিনিয়োগ ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ পোশাকখাত সম্পর্কে অপপ্রচারই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, বিজিএমইএ ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের টার্গেট দিয়েছে গত বছর। ওই বছর পোশাকখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশ। যদিও ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের জন্য প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন ১৩ শতাংশ। এতে গত দুই অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টার্গেট অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বিজিএমইএ। এভাবে প্রতিবছর টার্গেট থেকে পিছিয়ে গেলে ২০২১ সালে পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় অনেকটাই অনিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন তারা।
বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, এজন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামের চার লেনের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সুবিধা বাড়াতে হবে। আর এসব হলেই কেবল ২০২১ সালে পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় সম্ভব হবে।
এছাড়া মুন্সীগঞ্জে যে গার্মেন্টস পল্লী হচ্ছে তা ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে স্থানান্তরিত করতে হলে গার্মেন্টস মালিকদের খরচ বেড়ে যাবে। যার প্রভাব এই টার্গেট অর্জনে পড়বে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আমাদের এগুতে হবে বলে জানান শহীদুল্লাহ আজিম। এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমান বিশ্ববাজারে অন্যান্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঘাটতি পূরণ করে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছা চ্যালেঞ্জ হবে।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরো বলেন, পোশাকখাতের জন্য আরো বাজারের তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে অষ্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, জাপান, রাশিয়া এবং আফ্রিকাতে বাজার সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া পোশাক তৈরির জন্য কাঁচামালে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনি জটিলতা দূর করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এদিকে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছানোর আগে অপপ্রচার চালাচ্ছে আমেরিকান এবং ইউরোপীয় ক্রেতাদের দুটি জোট অ্যাকর্ড অ্যান্ড অ্যালায়েন্স, এমন অভিযোগ করে আসছে বিজিএমইএ এবং সরকার। এ দুটি সংগঠন এদেশে কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি না দেখে কাজ করছে ট্রেডইউনিয়ন নিয়ে। ফলে উঠে আসছে না এ খাতে উন্নয়নের প্রকৃত চিত্র।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, পোশাক রপ্তানিতে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা হলেও অসম্ভব না। তবে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স যে অপপ্রচার চালাচ্ছে এটা সত্যি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কারখানাগুলো আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। এগুলো বেশি বেশি বিদেশে প্রচার করতে হবে। বিগত বছরগুলোতে পোশাকখাতে যে অগ্রগতি হয়েছে তা প্রচার করতে সরকারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনকে (আইএলও) নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের আলাদা কিছু করে দেখাতে হবে; যাতে তারা অপপ্রচার চালাতে না পারে।