অভিযোগপত্র দাখিল : সাখাওয়াত সহ ১২ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ অভিযোগে যশোরের মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন প্রসিকিউশন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজ্জাক খান বলেন, ২০১২ সালের ১ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু গত ১৩ জুন এই মামলার তদন্ত শেষ হয়। তদন্ত কাজে বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩২ জন সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ জুন তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরের দিন ১৫ জুন অভিযোগ প্রসিকিউশনে জমা দেন।
সাখাওয়াত হোসেন (৬১) ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মো. বিল্লাল হোসেন (৭৫), মো. আকরাম হোসেন (৫৯), অজিহার মোড়ল ওরফে ওজিয়ার মোড়ল (৬৪), মো. ইব্রাহিম হোসেন (৬০), শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান (৬১), মো. আ. আজিজ সরদার (৬৫), আ. আজিজ সরদার (৬৬), কাজী ওহিদুল ইসলাম (৬১), মো. লুৎফর মোড়ল (৬৯), আব্দুল খালেক মোড়ল (৬৮), ও মশিয়ার রহমান (৬০)।
এর মধ্যে প্রথম চারজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকীরা পলাতক বলে পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে মোট পাচঁটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৭ আশ্বিন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে চিংড়া বাজার রাজাকার ক্যাম্পের (তহসিল অফিস) কমান্ডার সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে ১০ থেকে ১২ জন রাজাকার কেশবপুর থানার বগা গ্রামে একজন নারী এসএসসি পরীক্ষার্থীকে জোর করে তার বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং ধর্ষণ করে।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮শে আশ্বিন আনুমানিক ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে কেশবপুর থানার ২ নং সাগরদাড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদ চাদতুল্য গাজীকে সাখাওয়াতসহ ২৫ থেকে ৩০ জন রাজাকার ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে চারদিন আটক রেখে নির্যাতন করে পয়লা কার্তিক তাকে গুলি করে হত্যা করে।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, ওই একই তারিখে চিংড়া গ্রামের নুর উদ্দিন মোড়লকে ধরে নিয়ে সাখাওয়াতের নির্দেশে নির্যাতন করা হয়।
চতুর্থ অভিযোগ বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের আশ্বিন মাসের শেষ দিকে এক রাত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের সোর্স কেশবপুর থানা হিজলডাঙ্গা গ্রামের আ. মালেক সরকারকে তার বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে ২৮ আশ্বিন সকাল আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে চিংড়া বাজারে গুলি করে হত্যা করে।
শেষ ও পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে বেলা ১০ টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা মিরোন শেখকে তার বাড়ী থেকে ১০ থেকে ১২ জন রাজাকার ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তিনি পালাতে চাইলে রাজাকারা তাকে গুলি করে। এতে তার বাম হাতে গুলি লাগে। এরপর তাকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
প্রতিক্ষণ/ডেস্ক/সজল