অর্ধযুগ পর নিজ দেশে ফিরলেন কোকো, তবে লাশ হয়ে

প্রকাশঃ জানুয়ারি ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৩২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৩০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

koko lasঅর্ধযুগ পর মাতৃভূমিতে ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। তবে জীবিত নয় মৃত।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কোকোর মরদেহ বহনকারী মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ ১০২ ফ্লাইটটি শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তার মরদেহ গ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এবং আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস কাদের চৌধুরী।

মামলার খড়গ মাথায় নিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন কোকো। গত শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৫ বছরে মারা যান তিনি।

গত ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সেনানিবাসের বাড়ি থেকে মা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরাফাত রহমান কোকো। এর পর ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই তৎকালীন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯ জুলাই শনিবার বেলা ১টা ২৯ মিনিট প্রিয়জনদের কাঁদিয়ে তৎকালীন জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ডের পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন অসুস্থ আরাফাত রহমান কোকো। তারপর একে একে কেটে গেছে সাতটি বছর।

নানা আইনি জটিলতা আর নিরাপত্তাহীনতার কারণে সুস্থ হয়ে প্রিয় মায়ের সান্নিধ্যে ফেরা হয়নি তার। প্রিয় দেশ, প্রিয় মানুষদের ছেড়ে নির্বাসনেই থাকতে হয়েছে বিদেশের মাটিতে। অবশেষে প্রিয় সেই মাটি, পরম প্রিয় মমতাময়ী সেই মায়ের কোলে ফিরে আসার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে তার, তবে লাশ হয়ে।

২০ কোটি টাকার বেশি অর্থ সিঙ্গাপুরে পাচারে অভিযোগে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ মানিলন্ডারিং আইনে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১১ সালের ২৩ জুন আদালত এ মামলায় কোকোকে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। ওই মামলার রায়ে তাকে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা জরিমানার আদেশও দেন বিচারক। আওয়ামী লীগ সরকার সিঙ্গাপুর থেকে কোকোর পাচার করা অর্থের একটা অংশ দেশে ফিরিয়ে এনেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর ফাঁকির অভিযোগে কোকোর বিরুদ্ধে ২০১০ সালের মার্চ মাসে আরেকটি মামলা করে। এছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোকোর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দু’টি চাঁদাবাজির মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক একটি মামলা করে। আর সোনালী ব্যাংকের ঋণখেলাপের মামলায় বড়ভাই তারেক রহমানের সঙ্গে এবং গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোকোও আসামি। এসব মামলার কারণে কোকো বিদেশে অবস্থান করছিলেন।

মাঝেমধ্যে মাকে দেখতে উদগ্রীব হতেন কোকো। ফিরে আসতে চাইতেন মায়ের কাছে, ঢাকায়। দেশে ফিরলেই তাকে কারাবন্দি হতে হবে- এ জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে আসতে দেননি। কিন্তু এবার আর আটকে রাখতে পারলেন না। কোকো ফিরেই এলেন মাতৃভূমিতে, লাশ হয়ে।

প্রতিক্ষণ /এডি /প্রিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G