অলৌকিক সৈকতের বেলাভূমিতে!

প্রকাশঃ জুন ৩০, ২০১৫ সময়ঃ ১:২২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

জহির উদ্দিন মিশু

kattoli_sea_beach4পড়ন্ত বিকেলে রক্তিম সূর্যের আলোয় লালচে আকাশ। রাখালিয়ারা গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছে। জেলেরা তীরে নৌকা ভিড়াচ্ছে। একদল জেলে নৌকার বৈঠা কাঁধে একপ্রান্তে জাল অন্যপ্রান্তে মাছের ঝুড়ি বেঁধে গাঁয়ের বাজারের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। পাখির দল এপ্রান্ত হতে ওপ্রান্তে ছুটে চলছে। আর কিছুক্ষণ পরই ডুবে যাবে লাল সূর্য। ঘনিয়ে আসবে সন্ধ্যা। এমনই অপরূপ দৃশ্য আর কোথাও নয় ধরা দেয় চরগঙ্গামাতি সমুদ্র সৈকতে। চরগঙ্গামাতি। কুয়াকাটা সংলগ্ন একটি সৈকত। বনভূমির নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ঘেরা লীলাভূমি। সৈকত ঘেষা বালুকা বেলার একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখা যায়। এ দৃশ্য দেখার জন্য প্রতিদিনই দেশী বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। চরগঙ্গামাতি পর্যটকদের কাছে এখন অন্যতম ভ্রমণের স্পট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পটুয়াখালী জেলার সমুদ্র তীরবর্তী কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চরগঙ্গামতি এলাকায় এর অবস্থান।কুয়াকাটা থেকে মাত্র ৫ মিলোমিটার পূর্ব দিকে সমূদ্রের কোল ঘেষেই চরগঙ্গামতি। এছাড়া কলাপাড়া উপজেলা শহর থেকে বালিয়াতলী হয়ে কুয়াকাটা-কলাপাড়া বিকল্প সড়কের একটি মাত্র ফেরী পাড় হয়ে চরগঙ্গামতী যাওয়া যায়।beach1

চরগঙ্গামতি সংলগ্ন মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে শত বছরের পুরানো এশিয়ার সু-উচ্চ বৌদ্ধ বিহার।এর কাছাকাছি রয়েছে রাখাইনদের বৌলতলীপাড়া। এই পড়ায় রয়েছে অলৌকিক একটি ঘটনা। যা আজও এখানকার স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। মুন্সিগঞ্জ এলাকার এক সাপুড়ে সরদার আবদুল আলী গারুলীকে রাতে স্বপ্নে দেখেন যে, বৌলতলী রাখাইন পাড়ার উত্তর পশ্চিম পাশে ৩শ’৬০ টি বাঁশের একটি ঝাঁড়ের নিচে একটি সাপ রয়েছে। স্বপ্নে বলে দেয় ওই সাপ ধরার আগে দু’টি পাঠা পুঁজো করে নিতে হবে। আবদুল আলী গারুলী ওই স্বপনের কথা আর মানলেন না। সে সাপ ধরতে যায়। সাপটিকে স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে রেগে গারুলীকে মুখে নিয়ে ৩শ’ ৬০ টি বাঁশের সঙ্গে পেচিয়ে রাখে। সাপটি যে গর্তে ছিল তা আজও কালের স্বাক্ষী হিসাবে রয়েছে।kattoli_sea_beach3

কলাপাড়া পৌর শহর থেকে চরগঙ্গামতির দুরত্ব প্রায় ২১ কিলোমিটার। একটি মাত্র ফেরি পাড় হয়ে যেতে হয়। অপরদিকে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার দুরত্ব ও ২১ কিলোমিটার। কলাপাড়া পৌর শহর থেকে এই ২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে তিনটি ফেরি পাড় হতে হয়।

যেভাবে যেতে হবে: ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি বাস এখন সরাসরি কুয়াকাটা যায়। ঢাকা থেকে সাকুরা পরিবহন ছাড়াও বিআরটিসি পরিবহনের বাস সরাসরি কুয়াকায় যায়। আপনি এসব বাসে গেলে আপনাকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে ২০০ মিটার দূরে নামিয়ে দিবে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা বাসে যেতে মোট সময় লাগে প্রায় ১২/১৩ ঘন্টা।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G