আগুনের ক্ষত যন্ত্রণায় কাতর তহমিনা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় পাষন্ড স্বামীর দেওয়া আগুনে স্ত্রী তহমিনা আক্তার (১৯) দগ্ধ শরীরের ক্ষত যন্ত্রণায় এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
রোববার সকালে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে তার সর্বশেষ অবস্থা এমন দেখা যায়।
তহমিনার বাবা তছলিম উদ্দিন জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কচুয়ার খামার গ্রামে তহমিনার শরীরে আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে তারই স্বামী আইনুল হক(২৪)।
শুক্রবার রাতে স্ত্রীর শরীরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় আইনুল। এদিকে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। তারা এই নির্মম ঘটনার খবর পুলিশকে জানালে পুলিশ সেখানে গিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
তহমিনার বাবা তছলিম উদ্দিন আরও জানান, প্রেম করে প্রায় এক বছর আগে প্রতিবেশী আইনুল হক কে বিয়ে করে তহমিনা। গত তিন দিন আগে তহমিনার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন তার বিরুদ্ধে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির অভিযোগ এনে গালিগালাজ করে। অভিমানে তহমিনা বাবার বাড়িতে চলে আসে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামী আইনুলের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে তহমিনার মোবাইল ফোনে কথাকাটি হয়। কিছুক্ষণ পর আইনুল তার ঘরে ঢুকে তহমিনার মুখ চেপে ধরে বোতল থেকে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।এতে সে গুরুতর আহত হলে পরিবারের লোকজন তহমিনাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা সাধারণ সম্পাদক রিক্তু প্রসাদ বলেন, তহমিনার শরীরে আগুন লাগানোর ঘটনা একটি জঘন্য অপরাধ। তিনি অবিলম্বে স্বামীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এছাড়া মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে তহমিনার উন্নত চিকিৎসা ও আইনি সহযোগিতার জন্য সম্ভাব্য সব কিছু করার আশ্বাস দেন তিনি।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক গোলাম রব্বানী বলেন, তহমিনার বাম স্তন, ডান স্তনের আংশিক, বুক, পেট ও যৌনাঙ্গসহ শরীরের ২৫ ভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা দরকার।
গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মেহেদী হাসান বলেন,তহমিনার বাবা তসলিম উদ্দিন বাদি হয়ে আইনুলসহ তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে আইনুলকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি