‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করছে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অহেতুক বাড়াবাড়ি করছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দমনপীড়নের ঘটনা নিয়ে।
সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনই মতামত দিয়েছেন শান্তিতে নোবেল পাওয়া মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী এবং বর্তমানে সারা বিশ্বের কাছে বিতর্কিত অং সান সুচি।
তিনি বলেন, বিশ্ববাসীর এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক অভিযান শুরু করা হয়েছে মূলত নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করার পর। এজন্য মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করছে সরকার।
আন্তর্জাতিক মহলের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে সু চি বলেন, ‘আমি খুশি হব যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বড় ধরনের অসন্তোষ ছড়ানোর কারণ তৈরি না করে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ার জন্য এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমাদের সহযোগিতা করে’।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার বিষয়টি এড়িয়ে প্রত্যেকে যদি শুধু পরিস্থিতির নেতিবাচক দিকের প্রতি মনোযোগ দেয় তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না।
৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৯ সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়। এরপর সহিংসতায় ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করে মিয়ানমার। তবে নিহতদের মধ্যে ৬৯ জনকে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে দাবি করছেন সরকার দলীয় গোষ্ঠী।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সেখানে সেনা অভিযানে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া এবং বেসামরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। তবে মিয়ানমার সরকার বরাবরের মতো তা অস্বীকার করছে।
এছাড়া ঐ এলাকায় বিদেশি সাংবাদিক ও ত্রাণকর্মীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তাই তাদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভবও হচ্ছে না।
এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নিরব থাকায় মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সুচির সমালোচনা হচ্ছে নানা মহল থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কয়েক প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করে এলেও দেশটির ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গার অধিকাংশকেই নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। এমনকি তারা চলাফেরার স্বাধীনতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ