আরএফএল কোম্পানির পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নেয় জঙ্গিরা
মাহমুদ এইচ খান, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বাড়িওয়ালাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মৌলভীবাজারে আস্তানা গেড়েছিল জঙ্গিরা। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে ঘুনাক্ষরেও টের পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে জানা যায়, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘিরে রাখা দু’টি জঙ্গি আস্তানার একটি টিনশেড বাড়ি ও একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়ি দুটির মালিক লন্ডন প্রবাসী সাইফুর রহমান হলেও তত্ত্বাবধান করতেন জুয়েল মিয়া নামের এক ব্যক্তি।
তিন মাস হল বাড়ি দু’টিকে আরএফএল কোম্পানিতে কাজ করেন এমন পরিচিয়ে ভাড়া নেন তিন জন পুরুষ। এলাকাবাসী জানায়, ‘বাড়ি দুটিতে মানুষ আছে বলে বোঝা যেত না, বাড়িতে লোকজনের আসা যাওয়াও খুব একটা দেখা যেত না। কীভাবে হঠাৎ জঙ্গির আর্বিভাব হল এটাই তাদের কাছে রহস্য বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঐ বাড়ি দুটির তত্বাবধায়ক জুয়েল মিয়া বলেছে, ‘আর এফ এল কোম্পানিতে কাজ করেন এমন পরিচয় দিয়ে নারী-পুরুষ ৬জন তার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেন। কিছু দিন পর তারা একই মালিকের গ্রামের খালি বাড়িটিও ভাড়া নেন তার কাছ থেকে। একটা কোম্পানির কর্মকর্তা পরিচয় দেয়ায় তাদের বিষয়ে আর কিছু জানার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ফতেহপুরের ঐ বাড়িতে থাকতো তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ। মাঝে-মধ্যে দেখা যেতো একটি শিশুকে। তবে দিনের বেলায় ওই বাড়ির কাউকে দেখা যেতো না।
একই অবস্থা মৌলভীবাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বড়হাট এলাকার বাড়িটিতে ঘিরেও। এখানেও দিনের বেলায় কাউকে দেখা যায়নি ।
তবে মাঝে মধ্যে একজন যুবক ও একটি শিশুকে এই বাসা থেকে নামাজে আসতে দেখা যেত বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। এছাড়া আরো একজন যুবককে রাতে যাওয়া আসা করতে দেখা যেত বলে জানান তারা।
আস্তানার সন্ধান পাওয়ার পর থেকে বাড়ি দুটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে; থেমে থেমে অপারেশনও চলছে। জঙ্গিরাও গুলি ছুঁড়ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশনউজ্জামান জানান, সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিনগত রাত থেকে মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট ও সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে ফতেহপুর গ্রামের ওই দু’টি জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। এরপর থেকে ঘটছে একের পর এক নাটকীয়তা।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাকা