আর কত ঘুমাবে হে বাঙালি?

প্রকাশঃ জুলাই ৭, ২০২১ সময়ঃ ১২:৩৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৩৯ অপরাহ্ণ

দিন-মাস-বছর;  দেখতে দেখতে অনেক সময় বয়ে গেল। তবুও করোনা নামক অমাবস্যার অন্ধকার থেকে আমাদের মুক্তি মেলেনি। বরং সময়ের ব্যবধানে বেড়েছে এর বিস্তার। অথচ আমরা দিন গুণে যাচ্ছি, আর মনে মনে ভাবছি; এই বুঝি শেষ হল ভাইরাস থাবা। কিন্তু না, একজন একজন করে এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে হাজারে হাজারে, লাখে লাখে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিষ ফোঁড়ার মতো গজিয়ে উঠেছে এই ভয়ানক বিষবৃক্ষ। দমে যাবার পাত্র যেন সে নয়। শিকড় থেকে শিখরে পৌঁছে গেছে করোনার বিষাক্ততা।

তবুও যেন এক নিলিপ্ত চাহনি আমাদের মধ্যে। আবার অনেকের ভাবখানা এমন যে, কিছু হয়েছে কি? আর যদি হযেই থাকে তবে বলে রাখলাম ‘আমি থোরাই কেয়ার করি’ ! সত্যিই বাঙালির সাহস আছে বটে! জেগে জেগে ঘুমাবার মতো অপরাধ করা একমাত্র এই জাতির পক্ষেই সম্ভব।

আজ আমরা গভীর সাগরে নিমজ্জ্বিত। সাঁতরাবার কোনো সুযোগ নেই। বেঁচে আছি, তবে বেঁচে থাকবো কিনা জানি না। পত্রিকার পাতা খুললেই শুধু মহামারি আতঙ্ক। বহুদিন ধরে টিভির শীর্ষ সংবাদ শিরোনাম একটাই; করোনা। আমরা  চরম রকমের ত্যক্ত-বিরক্ত। তাই সচেতন-সচেতনতা নামক এই শব্দযুগলকে কেউ উচ্চারণ করলেই মুহূর্তেই চপেতাঘাত। হায় বাঙালি ! একেই কি বলে সাহসিকতা? যে কখনও নামেনি পানিতে; আজ তার চারপাশ ঘিরে আছে পানি। পালাবার কোনো রাস্তা নেই। 

এতকিছুর পরও আমরা চির নিদ্রায় শায়িত হওয়ার আগে আচ্ছন্ন হয়ে আছি ঘুমের ঘোরে। আমাদের এই বিরামহীন ঘুম কে ভাঙাবে? মস্তিস্কে জেঁকে বসেছে গাধার ধ্যান-ধারণা। চামড়ার পরতে পরতে গন্ডারের অনূভুতি! দৃষ্টিতে বিভ্রম। ‘মাস্ক- হ্যান্ড সেনিটাইজার – ‍সেফটি ডিসটেন্স’ এ তিন ভিনদেশী শব্দে নাকাল বাঙালি জাতি। অকালে সব হারাবে-হারবে তবে হার নাহি মানবে! সাবাস !

স্ব-সু ; যে শিক্ষা ইচ্ছা হয় গ্রহণ করে হলেও নেতিয়ে পড়া ভূমিকে প্রাণ ফিরাবার ফুৎরত দিন। সজাগ হোন। সচেতন হোন। ইগো-বড়াই এর লড়াই থেকে ইস্তফা দিন। জেগে উঠুন। আপনার পাশের জনকেও জাগিয়ে দিন। 

‘রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি’? (কবি ফররুখ আহমেদ এর কবিতা পাঞ্জেরি)

 

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G