আসছে নতুন প্রজন্মের আইফোন
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
নতুন প্রজন্মের আইফোন বাজারে ছাড়তে চলেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এই আইফোন বাজারে পাওয়া যাবে। বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, নতুন এই মুঠোফোনে ‘ফোর্স টাচ ডিসপ্লে’, অধিকতর উন্নত ক্যামেরা এবং দ্রুততর প্রসেসর থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া, একইদিন আইপ্যাডের একটি নতুন সংস্করণ- ১২.৯ ইঞ্চির ‘প্রো’ মডেলও বাজারে উন্মুক্ত হতে পারে। অবশ্য এসব উড়ো খবরের সত্যতা যাচাই করতে চাওয়া হলেও অ্যাপলের কোনো কর্মকর্তাই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। প্রসঙ্গত, গত বছর একই তারিখে আইফোন সিক্স এবং আইফোন সিক্স-প্লাস বাজারে ছেড়েছিল অ্যাপল। আর পরপর টানা তিন বছর নতুন পণ্য বাজারে ছাড়ার ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ই বেছে নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
নতুন চমক হিসেবে বাজারে আইফোনের নতুন সংস্করণ আইফোন সেভেন এবং আইফোন সিক্স-এস ছাড়তে যাচ্ছে অ্যাপল। আইফোনের নতুন এই সংস্করণ দু’টিতে কী কী বিস্ময়কর প্রযুক্তি যোগ করা হবে, তা নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে এবং এরই মধ্যে ফোন দু’টির বৈশিষ্ট্য, চেহারা ও কেমন বিক্রি হবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে থেকে নানা দিন ধরে নানা রকম নতুন নতুন তথ্য ফাঁস হচ্ছে। নতুন ফোন দু’টির সার্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য গুজব ছড়িয়েছে- সেগুলো নিয়ে আসা হলো পাঠকদের জন্য। তবে এসব গুজব শেষ পর্যন্ত সত্যি হবে কিনা, তা বলবে সময়ই।
ক্যামেরা:
সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপনগুলোতে আইফোনের ক্যামেরার বিষয়টির ওপর বিশেষভাবে আলো ফেলছে অ্যাপল, এবং সময়ের উপযোগিতা অনুযায়ী বরাবরের মতই নতুন পণ্যে নতুন আরেক চমক যোগ করতে পারে প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানটি। ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে ইঙ্গিত মিলছে যে এবার ছবি তোলার জন্য পেছনের রিয়ার ক্যামেরায় থাকবে ১২ মেগাপিক্সেল সেন্সর এবং তা দিয়ে চার হাজার ভিডিওদৃশ্য ধারণ করা সম্ভব হবে। আর সামনের দিকের সেলফি ক্যামেরাও হবে আরো আধুনিক। অন্ধকারেও সেলফি তোলার জন্য এতে ফ্ল্যাশও যোগ করা হতে পারে। ‘ফোর্স টাচ’ দিয়েও ক্যামেরাটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রতিবেদনে। স্ক্রিনে জোর দিয়ে চাপ দিলেই ক্যামেরার অতিরিক্ত কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, যেমন- ভিডিওদৃশ্য ধারণের সময় ইচ্ছেমতো স্থির ছবি ধারণ করতে পারা কিংবা স্থির ছবি তোলার সময় ভিডিও ধারণের মুডে চলে যাওয়া।
ব্যাটারি:
ফোনে অতিরিক্ত কিছু জায়গা থাকবে, যেখানে একাধিক অতিরিক্ত ব্যাটারি যোগ করা যাবে। আর নতুন করে ব্যাটারি যোগ করলে ফোনটি আরো দক্ষতার সাথে অনেকটা সময় ধরে একটানা ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
নকশা:
আইফোন পরিবারের ‘এস’ অংশের সদস্য বলেই সিক্স-এস’র ভেতরেই কেবল পরিবর্তন আনার লক্ষ্য অ্যাপলের। আইফোন সিক্সের চাইতে পরবর্তী আকর্ষণ সিক্স-এস’র বাইরের নকশায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কেবল ক্যামেরার জায়গায় কিছুটা পরিবর্তন আসলেও আসতে পারে।
রঙ:
বরাবরের মতই অ্যাপলের প্রধান তিন রঙ- স্পেস গ্রে (বা কালো), রূপালী (বা সাদা) এবং সোনালী রঙ নতুন আইফোনেও নিঃসন্দেহে এবারো থাকবে। তবে এবার আরো একটি রঙ নতুন করে যোগ করা হতে পারে। অনেকে বলছেন, রঙটি গোলাপী ধাঁচের কিছু কিংবা স্বর্ণালী গোলাপ রঙা ধরনের হতে পারে এবং এর সাথেই মিল রেখে ব্যয়বহুল অ্যাপল ওয়াচও বাজারে আসতে পারে।
আকৃতি:
নতুন ফোনগুলোও আগের মতোই আকৃতির হবে: ৪.৭ ইঞ্চির ডিসপ্লে এবং ৫.৫ ইঞ্চির ডিসপ্লে। তবে এর পাশাপাশি আরেকটু ছোট আকারের একটি সংস্করণও বাজারে ছাড়তে পারে অ্যাপল- যার সম্ভাব্য মডেল আইফোন সিক্স-সি- যা আইফোন ফাইভ ও ফাইভ-এস’র মতো একই আকৃতির হবে।
সফটওয়্যার:
আইওএস নাইন প্রযুক্তি সমৃদ্ধ অনেক পণ্যই গত জুনে ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্সে ও তার একমাস পর জনসাধারণের সামনে উন্মুক্ত হয়েছে। নতুন দুই আইফোনের সফটওয়্যারে বড় ধরনের কোনো আধুনিকায়ন যোগ হতে পারে বলে আপাতত তাই মনে করা হচ্ছে না। নতুন যোগ করা সফটওয়্যারের মধ্যে প্রধান অংশ ‘ফোর্স টাচ’র সমন্বয় হতে পারে। ঠিক কিভাবে এই অংশটি ফোনের সাথে যোগ করবে অ্যাপল- তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এটি যদি অ্যাপল ওয়াচের মতো কিছু হয়, তাহলে এটি হয়তো এমন কিছু হবে- যা দীর্ঘক্ষণ চেপে ধরে থাকলে স্ক্রিনে অতিরিক্ত কিছু অপশন দেখা যাবে। কেউ কেউ বলছেন যে কন্ট্রোল সেন্টারের ওপর ওয়াই-ফাই বাটনে জোরে চাপ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে কোন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে ফোন সচল করা হবে, সে বিষয়েও অতিরিক্ত কিছু অপশন আসবে।
কর্মক্ষমতা:
নতুন আইফোন নিঃসন্দেহে দ্রুতগতির হবে। টাচ আইডি সেন্সরের মতো কিছু অংশ আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি গতিতে কাজ করবে বলেও গুজব বাতাসে উড়ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ