আহ! শৈশব
প্রতিক্ষণ ডটকম:
‘ দিন গুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না, রইলো না
সেই যে আমার নানা রং এর দিন গুলি
কান্না-হাসির বাঁধন, না না সইলো না, সইলো না
সেই যে আমার নানা রং এর দিন গুলি ‘
রবী ঠাকুরের বিখ্যাত এই কথা গুলো স্মরণ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটি মানুষকেই তার শৈশব জীবনের স্মৃতি কঠিন ভাবে নাড়া দেয়। শৈশবের বন্ধু-বান্ধব, খেলার সামগ্রী, কলম, পেনসিল, খাতা, ড্রেস, জুতা, স্কুল-ব্যাগ সবকিছুই কেমন যেন চোখ বন্ধ করলে ভেসে ওঠে মনের আয়নায়। এইতো সেদিন……
এতোদিন পরে এসেও স্কুল জীবনটাকে খুব বেশি মনে পড়ে। বলাই বাহুল্য, সেই সময়টায় মনে হতো কবে বড় হবো, আর সবার মতো যা খুশি তা করতে পারবো, কিন্তু এখন, এই এতগুলো দিন পেরিয়ে এসে মনে হয়, বড় ভালো ছিলাম তখন…
কেন জানি ভীষণ ধরণের মনে পড়ে স্কুলটাকে, শত নিয়মের বেড়াজালে পড়েও কখনও কখনও শিক্ষকদের স্নেহ মাখানো সেই শাসনগুলো খুব বেশি মনে পড়ে। অসাধারণ কিছু মানুষ, যারা আমাদের শিখিয়েছিলেন মানুষ হতে, কখনো বলতেন না বড় হয়ে কী হবি, বলতেন যাই হস বড় হয়ে, ভালো মানুষ থাকিস…
আর যেদিন বৃষ্টি, সেদিন কোন কথাই নেই। ভিজবোই ভিজবো! রাস্তা ভর্তি মানুষ ছাতা মাথায় হেঁটে যেতে যেতে অবাক হয়ে দেখতো, কিছু ছন্নছাড়া স্কুলফেরত বালক রাস্তার উপর দিয়ে বৃষ্টিতে চুপচুপে হয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে!
দুইপাশে পানি জমে গেছে, আমরা তার মাঝ দিয়ে ভেজা জুতো পায়ে হেঁটে যাচ্ছি! জুতোর মধ্য পানি ঢুকে চপাশ চপাশ শব্দ! কেমন জানি পাগল করা এক একটা অনুভূতি। স্কুলের মাঠে বৃষ্টিতে পানি উঠে ছোট ছোট দ্বীপের মতো হয়ে যেতো, বন্ধুরা বারান্দা থেকে দ্বীপ কেনাবেচা করতাম, ঐটা আমার দ্বীপ, ঠিক আছে ঐটা তুই নে, কিন্তু এই পাশেরটা আমার!
বৃষ্টির মধ্যে একটা পানির বোতল নিয়ে মাঠে নেমে যেতাম, ফুট-বোতল খেলার জন্য!
কেউ কখনো বলে দেয়নি, তবে বুঝতে পারি কিছু একটা রেখে এসেছি সেই স্কুলের ক্লাসরুমে, ডেস্কের সেই ছোট ছোট খোপ গুলোয় অসংখ্য স্মৃতি……
কেউ বলে দেয়নি, তবু বুঝি, ফেলে রেখে এসেছি অসাধারণ কিছু মুহুর্ত……
কেউ একজন বলেছিল, এখন টের পাই সেই প্রতিটা শব্দ……