ঈদের দিনে ঘুরে বেড়ানো
মাসফেক ইব্রাহিম
ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি থাকা এক ঘেঁয়ে জীবনে ঈদের দিন অন্যরকম আনন্দের। সেই আনন্দকে আরো ভালোভাবে উপভোগ করতে ঈদের দিনে নগরীর ভেতরেই ভ্রমণে বের হবার পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ চাইছেন শহর থেকে একটু দূরে ঘুরে আসতে। পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে এ ভ্রমণ হতে পারে বিনোদনের খোরাক,যদি থাকে সুষ্ঠু পরিকল্পনা।
যমুনা ফিউচার পার্ক ও মার্কেট
এই ঈদে যমুনা ফিউচার পার্ক খোলা থাকছে। ফুড কোর্টের দোকান গুলোও সবই থাকছে খোলা। আর সেই সঙ্গে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টারে চলবে বেশ কিছু সিনেমা। তাই ঈদে বেড়াতে যাওয়ার জন্য যমুনা ফিউচার পার্ক হতে পারে একটি স্থান।
বসুন্ধরা সিটি
বসুন্ধরা সিটিতেও টপ ফ্লোরের সব গুলো খাবারের দোকান থাকছে ঈদের দিনও খোলা। সেই সঙ্গে স্টার সিনেপ্লেক্স এ ঈদ উপলক্ষে চলবে বেশ কিছু নতুন ছবি। পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বসুন্ধরা সিটিতে।
পুরান ঢাকার জ্যামের কারণে যারা অন্য সময়ে সুযোগ করতে পারেন না তারা ঈদের সময়ে ফাঁকা ঢাকায় ঘুরে আসতে পারেন আহসান মঞ্জিল কিংবা লালবাগের কেল্লা থেকে। দর্শনার্থীদের ভিড়ে বেশ জমজমাট থাকে এই ঐতিহাসিক স্থান গুলো।
চিড়িয়াখানা
মিরপুরে অবস্থিত চিড়িয়াখানাও ঈদের সময় থাকবে জমজমাট। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে বেড়াতে আসে ঈদের ছুটির দিনগুলোতে।
বোটানিক্যাল গার্ডেন
চিড়িয়াখানার পাশেই বোটানিক্যাল গার্ডেন অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে অনেকেই বোটানিক্যাল গার্ডেনের সবুজ প্রকৃতির মধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে আসবেন ঈদের সময়। আপনি ঘুরে আসতে পারেন পরিবার পরিজনের সাথে।
শিশুপার্ক
শাহাবাগে অবস্থিত শিশুপার্কও ঈদে ঘোরাঘুরির জন্য হতে পারে একটি ভালো জায়গায়। আপনার সন্তানকে নিয়ে শিশুপার্ক থেকে ঘুরে আসতে পারেন ঈদের দিন। সেই সঙ্গে আপনি ঘুরে আসুন ছোটবেলার স্মৃতিগুলো।
জাতীয় জাদুঘর
জাতীয় জাদুঘরও খোলা থাকছে ঈদের দিন। যারা এখনও জাদুঘরের দূর্লভ সব সংগ্রহ দেখার সুযোগ করতে পারেন নাই তারা এই ঈদের ছুড়িতে বেড়িয়ে আসুন শাহাবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর থেকে। আজ ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত টিকেট ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে।
নন্দন ও ফ্যান্টাসি কিংডম
ঢাকার অদূরে অবস্থিত নন্দন পার্ক ও ফ্যান্টাসি কিংডম খোলা থাকছে ঈদ উপলক্ষ্যে। ঈদের দিনগুলোতে আনন্দময় সময় কাটাতে চাইলে নন্দন অথবা ফ্যান্টাসি কিংডম থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকেও বেড়িয়ে আসতে পারেন ঈদের ছুটিতে। ঈদের ছুটির তিনদিনই দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ভেতরেই রয়েছে ঘোরাঘুরির অনেক জায়গা।
নগরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনোদন পার্ক খুলশী থানাধীন ফয়’স লেক কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানীর ফয়’স লেক। পার্কে প্রবেশ সি ওয়ার্ল্ড, ওয়াটার পার্ক ও ফয়’জ লেক রিসোর্টে থাকার মূল্য পরিশোধ করতে হবে আলাদা।
হ্রদ ঘেরা ফয়’জ লেকের ভেতর ঢুকলেই লেকের দু’পাশ জুড়ে সবুজ পাহাড় দেখে মন জুড়াবে সবার। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, কফিকাপ, রেড ড্রাই স্লাইড, বাগ বাউন্স, ট্রেন ও দোলনা আছে আনন্দ উপভোগের জন্য। পাশাপাশি নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যাবে এখানকার হ্রদে। সি ওয়ার্ল্ডে দিনভর জলকেলি, কৃত্রিম সাগর ওয়েভ পুলে টিউব নিয়ে ভেসে থাকার সুযোগও মিলবে এখানে।
বাটারফ্লাই পার্ক ঘুরে দেখা গেছে অর্ধশতাধিক প্রজাপতির নয়ন মনোহর রূপ। পার্কের প্রবেশ পথেই প্রধান ফটকে স্বাগত জানাবে ইট-সিমেন্টের তৈরী বিশালাকৃতির একটি প্রজাপতি। ভেতরে রয়েছে বেশ ক’টি প্রজাপতি বেঞ্চ, যেখানে ভ্রমণ বিলাসীরা এসে ক্ষণিকের জন্য বিশ্রাম নেয়। নিজেকে প্রজাপতি সাজাতে চাইলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে পার্কে, রয়েছে বড় একটি প্রজাপতির ডামি।
এছাড়া বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এই তিন জেলায় ঘুরে আসার পরিকল্পনাও নিতে পারেন এসময়। মিলনছড়ির রেস্তোরাঁয় বসে বর্ষার শঙ্খ নদ দেখা, রুমা ও নীলগিরি ভ্রমণ উপভোগ করার মতোই। বান্দরবান থেকে চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাই হয়ে যাওয়া যায় রাঙামাটি।
ঈদের ছুটিতে এক সঙ্গে দুটো কাজ হয়ে যাচ্ছে_ প্রথমত, নতুনভাবে আবার নিজেকে উদ্যমী করে তোলা। দ্বিতীয়ত, প্রিয় মানুষকে সময় দেয়া এবং তাদের সঙ্গে আরো কিছু নতুন স্মৃতি যুক্ত করা। আনন্দময় মুহূর্তগুলোকে শত বছর পরেও মনের ফ্রেমে বন্দি করে রাখা। মোটকথা ঈদ ছুটিকে সামনে রেখে এখন থেকে নিজের অভিসন্ধিটা ঠিক করে ফেলা উচিত। গন্তব্য অনুযায়ী বেরিয়ে পড়ে, নিজের আনন্দটুকু সবার মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেয়া। পরিবার পরিজন নিয়ে এ উৎসবমুখর দিন, সবার মনে ও জীবনে প্রশান্তি বয়ে আনুক।
প্রতিক্ষণ/এডি/সজল